• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২১, ১২:০৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মার্চ ২৫, ২০২১, ১১:০৪ এএম

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ

আজ ২৫ মার্চ। পাকিস্তানি বাহিনীর নিরীহ বাঙালির ওপর বর্বর গণহত্যার ভয়াবহ স্মৃতিজড়িত ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। আজ কালরাত।

১৯৭১ সালের এই দিন মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্বপরিকল্পিত অপারেশন সার্চলাইটের নীলনকশা অনুযায়ী বাঙালিদের কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরোচিত ও নিকৃষ্টতম গণহত্যা চালায়।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের গণহত্যা শুধু একটি রাতের হত্যাকাণ্ডই ছিল না, এটা ছিল বিশ্ব সভ্যতার জন্য এক কলঙ্কময় গণহত্যার সূচনা।

মুক্তিযুদ্ধ একদিকে যেমন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। তেমনই কেড়ে নিয়েছে বহু বুদ্ধিজীবী, আত্মার আত্মীয়দের। বহু নারী হয়েছেন বিধবা, সন্তানহারা। অনেকের কাছেই যুদ্ধের স্মৃতি হয়ে উঠেছে এক তমসাচ্ছন্ন রাত্রি।

২৫ মার্চ রাতে ইয়াহিয়া খান ঢাকা ত্যাগের পর পাকিস্তান পৌঁছানোর আগেই ঢাকায় গণহত্যা শুরু হয়। সে রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় বাঙালির নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। কিন্তু তিনি গ্রেপ্তার হওয়ার আগে ২৬ মার্চ রাতের শুরুতেই ওয়্যারলেস বার্তার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দিয়ে যান। তার আগে ৭ মার্চের ভাষণেই বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, যার যা আছে তা নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে।

৫০ বছর আগে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পৃথিবীর ইতিহাসে এক নৃশংসতম গণহত্যার নজির স্থাপন করেছিল হানাদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। রাজধানী ঢাকায় সারা দিনের কাজ শেষে কর্মক্লান্ত নিরীহ মানুষ যখন ঘরে ফিরে ঘুমিয়ে ছিলেন, তখন তাদের হত্যার জন্য পথে নামল জলপাই রঙের ট্যাংক আর সাঁজোয়া বহর। হিংস্র শ্বাপদের মতো ধেয়ে গেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পুলিশ-ইপিআর ব্যারাকের দিকে। শুরু হলো কুখ্যাত ‘অপারেশন সার্চলাইট’।

তারপর নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি নিধনে সামনের সারিতে ছিলেন পাকিস্তানি জেনারেল টিক্কা খান। আর ছিল তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও শান্তি কমিটি।

মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন ২৫ মার্চ রাত সম্পর্কে লিখেছেন, “সে রাতে ৭০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়, গ্রেপ্তার হয়েছিল আরও তিন হাজার লোক। ঢাকায় ঘটনা শুরু মাত্র হয়েছিল। পুরো পূর্ব পাকিস্তানজুড়ে সৈন্যরা বাড়িয়ে চলল মৃতের সংখ্যা। জ্বালাতে শুরু করলো ঘরবাড়ি, দোকানপাট। ধ্বংস সাধন তাদের নেশায় পরিণত হল যেন। রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক-শেয়ালের খাবারে পরিণত হলো। সমস্ত বাংলাদেশ হয়ে উঠল শকুন-তাড়িত শ্মশান ভূমি।”

সারা দেশে এক মিনিট ব্ল্যাকআউট

২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে আজ বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারা দেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাকআউট’ পালন করা হবে। ২৫ মার্চ রাতে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবন ও স্থাপনাসমূহে কোনো আলোকসজ্জা করা যাবে না। গণহত্যা দিবসের জাতীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।