বরিশালে ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলনে তৎকালীন ইপিআর বাহিনীর গুলিতে নিহত শহীদ আলাউদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে সোমবার (২৮ জানুয়ারি) শহীদ আলাউদ্দিন স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়।
এর মধ্যে সকাল ৮টায় নগরীর সদর রোডে অশ্বিনী কুমার টাউন হল চত্ত্বরে শহীদ আলাউদ্দিনের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শহীদ আলাউদ্দিন স্মৃতি সংসদ, গণফোরাম বরিশাল জেলা কমিটি, ছাত্র মৈত্রী জেলা ও মহানগর কমিটি, কমিউনিস্ট পার্টি, বরিশাল শিক্ষা বোর্ড, শহীদ আসাদ পরিষদ, একে স্কুল শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ শহীদ আলাউদ্দিনের পরিবার ও কলাপাড়া উপজেলাবাসিরা। পরবর্তীতে সকাল ১০টায় অশ্বিনী কুমার হল চত্ত্বরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় শহীদ আলাউদ্দিন স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক ও কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট খান আলতাফ হোসেন ভুলুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় শহীদ আলাউদ্দিনের প্রতি স্মৃতিচারন করে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সদস্য সচিব অধ্যাপক নজরুল হক নিলু, অ্যাডভোকেট হিরন কুমার দাস মিঠু, অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, বাসদ বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী, বরিশাল শিক্ষাবোর্ড উপ-সচিব আবদুর রহমান, শহীদ আসাদ পরিষদ বরিশাল জেলার সাধারণ সম্পাদক রতন চক্রবর্তী, শহীদ আলাউদ্দিনের ভাগ্নে সেলিম সিকদার, মুক্তিযোদ্ধা আ. রসিদ খন্দকার, একে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
বক্তারা বরিশাল-পটুয়াখালী সড়কের পায়রা নদীতে নির্মানাধীন লেবুখালী সেতু শহীদ আলাউদ্দিনের নাম করনের দাবী জানিয়ে বলেন, তৎকালীন স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের শাষনের বিরুদ্ধে ১১ দফা দাবী নিয়ে রাজপথে নেমে ছিলেন ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদ। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বের করা মিছিলে ইপিআর বাহিনী গুলি চালায়। এতে বরিশাল সদররোডে একে স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র আলাউদ্দিন শহীদ হন। যাদের রক্তের বিনিময়ে ৬৯’ এর গণ আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্র আজও স্বাধীন হয়নি। তাই আবারো এদেশের মেহনতি মানুষ-ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র উদ্ধারের আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, পটুয়াখালী কলাপড়া উপজেলার হাজীপুর গ্রামের মন্তাজ মিয়া ও রাশিদা বেগম দম্পতির সন্তান ছিলেন শহীদ আলাউদ্দিন। তিনি ১৯৬৯ সালে বরিশাল নগরীর আসমত আলী খান ইনস্টিটিউশন (একে স্কুল) এর নবম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
১৯৬২ সালে স্বৈরশাসক আইয়ুবের বিরুদ্ধে যে ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল তা পরবর্তী সময়ে ১৯৬৯ সালে গণবিক্ষোভে রূপ নেয় এবং সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ৬৯-এর ২৮ জানুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে বরিশালের ছাত্র-জনতা মিছিল বের করলে সদর রোডে ইপিআরের গুলিতে মারা যান আলাউদ্দিন। রক্তে রঞ্জিত হয় আলাউদ্দিনের সাদা স্কুল ড্রেস।
এসসি/