• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ০১:১২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ০১:১৩ পিএম

বাংলাদেশ দুর্নীতি-লুটপাটের রাজত্ব: রিজভী

বাংলাদেশ দুর্নীতি-লুটপাটের রাজত্ব: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী- ফাইল ছবি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দুর্নীতি এখন মহামারী রূপ ধারণ করেছে। বাংলাদেশ বর্তমানে দুর্নীতি আর লুটপাটের রাজত্বে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের আর্থিক খাত আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে ধুঁকছে। বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণের ব্যাপারে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে, যা ১২ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে শোকে দুঃখে কৃষক ধান পুড়িয়ে দেয়। কোরবানির চামড়ার ন্যায্য মূল্য না পেয়ে মানুষ চামড়া মাটির নিচে পুঁতে রাখে। অথচ দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে চলছে হরিলুট। ব্যাংকগুলো পরিণত হয়েছে লুটেরাদের মানিব্যাগে। 

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দেশ থেকে হারিয়ে গেছে জবাবদিহিতা আর শৃঙ্খলার সব রীতিনীতি। পুকুর কাটা শিখতে রাজশাহীর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ১৬ কর্মকর্তা রাষ্ট্রের ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয় করে ইউরোপ সফরে যাচ্ছেন। আবার মশা মারা শিখতে সিঙ্গাপুর যাচ্ছে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা। সিলেটে বক্স-কালভার্ট বানাতে কনসালটেন্সি বাবদ খরচ করা হয়েছে দেড় কোটি টাকা ! চারবছর সময় নিয়ে ঢাকা ওয়াসার একটি পানি পরিশোধন প্রকল্প শেষ করেছে, যার প্রকল্প ব্যয় ৩ হাজার ৮’শ কোটি টাকা। সম্প্রতি প্রকল্পটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফেটে গেছে পানির পাইপ।

তিনি বলেন, চারদিকে শুধু ‘উল্টে পাল্টে দে মা, লুটেপুটে খাই’ অবস্থা বিস্তার ঘটেছে। আজও সেই আওয়ামী লীগের লোকজন লুটপাট আর দুর্নীতিকে তাদের নীতি করে নিয়েছে। গত মে মাসে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ফ্ল্যাটের জন্য ৬ হাজার ৭১৭ টাকায় একেকটি বালিশ ক্রয়ের মহাদুর্নীতিসহ ৩৬ কোটি টাকার বেশি লুটপাটের ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর এবার দুর্নীতির বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে আড়াল করাতে একটি পর্দা কিনতে দাম দেখিয়েছে সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা। হাসপাতালটির যন্ত্র ও সরঞ্জাম কেনাকাটাতেই অন্তত ৪১ কোটি টাকার দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। হাসপাতালের একটি অক্সিজেন জেনারেটিং প্ল্যান্ট কেনার খরচ দেখানো হয়েছে ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা। একটি ভ্যাকুয়াম প্ল্যান্ট ৮৭ লাখ ৫০ হাজার, একটি বিএইইস মনিটরিং প্ল্যান্ট ২৩ লাখ ৭৫ হাজার, তিনটি ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মেশিন ৩০ লাখ ৭৫ হাজার, আর একটি হেডকার্ডিয়াক স্টেথোসকোপের দাম ১ লাখ ১২ হাজার টাকা। এমন অবিশ্বাস্য দামে ১৬৬টি যন্ত্র ও সরঞ্জাম কিনেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালটির ১১ কোটি ৫৩ লাখ ৪৬৫ টাকার মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম কেনাকাটায় বিল দেখানো হয়েছে ৫২ কোটি ৬৬ লাখ ৭১ হাজার ২০০ টাকা।

তিনি বলেন, দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) সরকার বিরোধী নেতাকর্মীর পিছনে বেপরোয়াভাবে ছুটাছুটি করলেও দেশের প্রতিটি সেক্টরে যখন দুর্নীতি মহামারী আকার ধারণ করেছে, তখন তারা নীরব ভূমিকা পালন করছে। দুদকের হাত-পা বর্তমান শাসক দলের কাছে বাঁধা রয়েছে। এই দুদক কি করছে, আজকে জাতি জানতে চায়।

টিএস/টিএফ

আরও পড়ুন