• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০১৯, ০৬:৩৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২৪, ২০১৯, ০৬:৩৩ পিএম

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও খালেদা জিয়ার মুক্তিই লক্ষ্য : ফখরুল 

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও খালেদা জিয়ার মুক্তিই লক্ষ্য : ফখরুল 
বক্তব্য রাখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর - ছবি : জাগরণ

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের সামনে একটি মাত্র লক্ষ্য। সেটি  হচ্ছে- বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে গণঅভ্যুত্থান গড়ে তোলা। রোববার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার জনগণের ম্যন্ডেটে নির্বাচিত নয়, তাই তাদের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা নেই। তারা আজ রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ব্যর্থ করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে লুটতরাজের রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। দেশকে এর থেকে রক্ষা একটি মাত্র উপায়- সেটি হল গণঅভ্যুত্থান। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে একটি কার্যকর গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর মাধ্যমে গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার ও বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

আজ সকাল ১০টায় পুলিশ বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এরপরে আমরা আর কোনো সমাবেশের অনুমতি নেব না। সভা-সমাবেশ আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার তাই আমরা আমাদের যখন ইচ্ছা সভা-সমাবেশ করবো। দেশনেত্রী মুক্তির লক্ষ্যে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।

খালেদা জিয়াকে প্রায় ২০ মাস ধরে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে দাবি করে ফখরুল বলেন, তিনি কোনো রকম কোনো কিছুতে জড়িত না থাকার পরেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে এই সাজা দেয়া হয়েছে। অথচ একই সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ নেতাকর্মীদের নামে যেসব  মামলা দেয়া হয়েছিল সবগুলো মামলা তুলে নেয়া হয়েছে। আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা ছিল ৪টি যা এখন হয়েছে ৩৭টি। আর প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা ছিল ১৫টি যা সব তুলে নেয়া হয়েছে। 

তিনি বলেন, দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে উৎখাত করতে হবে। আজকে কোনো বিভক্ত না হয়ে আমাদের রাজপথের আন্দোলনে নেমে পড়তে হবে। নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, এখন অন্য কোনো স্লোগান না দিয়ে সবাই স্লোগান দেবেন, ‘এই সরকার নিপাত যাক’।

নির্বাচন বাতিল করার দাবি জানিয়ে ফখরুল বলেন, নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন করুন। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে। জনগণই এদেশের মানুষের ভাগ্য নির্ধারণ করবে। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার সবদিক দিয়ে ব্যর্থ হয়ে গেছে। ব্যবসা বাণিজ্য লাটে উঠেছে। শেয়ার মার্কেট লুট করে নিয়েছে। ব্যাংকগুলো চালাতে পারছে না। বিচার বিভাগ একটু একটু করে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করছে। আজকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে তারা সরকার চালাতে চায়। 

শনিবার রাতে নিহত ‘বিএনপিপাগল রিজভী হাওলাদারের’ কথা স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি ছিলেন আমাদের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। সারাক্ষণ এই কার্যালয়ের সামনে থেকে তিনি আমাদের নেত্রীর মুক্তি চাইতেন, গণতন্ত্রের মুক্তি চাইতেন। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, যে মামলায় খালেদা জিয়ার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই সেই মামলায় তাকে সাজা দেয়া হয়েছে। সবাই মিলে একযোগে অপপ্রচার করেছে এতিমের টাকা নাকি মেরে খাওয়া হয়েছে। অথচ একটি টাকাও খরচ হয়নি। সব টাকা ব্যাংকে রয়েছে। অতএব এতিমের টাকা মারার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। 

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আপনারা কি খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন করবেন, না এই সরকারের পতনের আন্দোলন করবেন? আমি বলতে চাই, এই সরকারের পতন না হলে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। তাই আমাদের বসে না থেকে সরকার পতনের আন্দোলন করতে হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, নিতাই রায় চৌধুরী, ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আব্দুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, নাজিম উদ্দিন আলম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মুনসি বজলুল বাসিত আনজু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, মহিলা দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, মাহবুবুল হক নান্নু, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, রফিক সিকদার, শাম্মী আকতার, সাইফুল ইসলাম পটু, আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল প্রমুখ।

টিএস/ এফসি

আরও পড়ুন