• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০১৯, ০৯:৫৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২৯, ২০১৯, ০৯:৫৭ পিএম

সাকিবের আগে বিখ্যাত যারা নিষিদ্ধ হন ক্রিকেটে

সাকিবের আগে বিখ্যাত যারা নিষিদ্ধ হন ক্রিকেটে
ক্রিকেট ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িত যারা- টিএসএম প্লাগ

ক্রিকেটে অশুভ শক্তির থাবা

............................

ক্রিকেট বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিল কিংবদন্তি ক্রিকেটার দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক হ্যানসি ক্রনিয়ের ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারি। ২০০০ সালে ক্রনিয়ের ফিক্সিং কেলেঙ্কারির পর দুর্নীতিরোধে ২০০৪ সালে বিশেষ একটি আইন করে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। এ আইনের আওতায় একে একে অন্তত ৪০ জন বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হয়েছেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে রয়েছেন পাকিস্তানের সেলিম মালিক। ১৯৯৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়ার্ন, টিম মে ও মার্ক ওয়াহকে ২০০০ সালে ঘুষ নেয়ার বিনিময়ে বাজে খেলার প্রস্তাব দিয়ে দোষী সাব্যস্ত হন। এ অপরাধে নিষেধাজ্ঞার খড়গে পড়েন তিনি। আইসিসি তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে। যদিও ২০০৮ সালে সে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয়।

জুয়াড়িদের সাথে লেনদেনের জন্য আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হন পাকিস্তানের আরেক ক্রিকেটার আতাউর রেহমান। অবশ্য এ ক্রিকেটারের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহর হয় ২০০৬ সালে। ভারতীয় ক্রিকেটের লিজেন্ড মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের দায়ে বিসিআইসি কর্তৃক আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হন। পরে ২০১২ সালে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয় তার।

ভারতীয় আরেক ক্রিকেটার অজয় শর্মা জুয়াড়িদের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হন। ভারতেরই আরেক ক্রিকেটার মনোজ প্রভাকর নিষিদ্ধ হন ৫ বছরের জন্য। জুয়াড়িদের সাথে সংযুক্ত হওয়ার অভিযোগে অজয় জাদেজাও নিষিদ্ধ হন। তাকে নিষিদ্ধ করা হয় ৫ বছরের জন্য। পরে ২০০৩ সালে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হয় জাদেজার।

দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার হার্শেল গিবস নিষিদ্ধ হন ৬ মাসের জন্য। দক্ষিণ আফ্রিকার আরেক ক্রিকেটার হেনরি উইলিয়ামসও জুয়াড়িদের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার জন্য ৬ মাসের জন্য নিষিদ্ধ হন।

কেনিয়ার ক্রিকেটার মরিস ওদুম্বে জুয়াড়িদের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার জন্য ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটাররাও জুয়াড়িদের সঙ্গে তথ্য লেনদেনের অভিযোগে পড়েছেন নিষেধাজ্ঞার কবলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার মারলন স্যামুয়েলস দলের তথ্য জুয়াড়িদের কাছে পাচার করার দায়ে ২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন।

পাকিস্তানের ক্রিকেটার মোহাম্মদ আমিরের ঘটনা তো মহাতারকার পতনের গল্প। ২০১০ সালের আগস্টে লর্ডস টেস্টে অর্থের বিনিময়ে ইচ্ছাকৃতভাবে নো বল করার অপরাধে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন আমির। একই ম্যাচে পাতানো খেলার দায়ে ৭ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন পাকিস্তানের ক্রিকেটার মোহাম্মদ আসিফ। সালমান বাটও একই অভিযোগে নিষিদ্ধ হন ১০ বছরের জন্য। আরেকটি ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হন পাকিস্তানের আরেক ক্রিকেটার দানিশ কানেরিয়া।

বাজিকরদের থেকে টাকা গ্রহণ করার অপরাধে ক্রিকেটে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন ভারতীয় ক্রিকেটার এস শ্রীশান্ত। ২০১৩ সালের ৯ মে আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে একটি ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে পরিকল্পিতভাবে ১৪ রান দেন। পরে ১৬ মে ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। যদিও এক মাস পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। ২০১৩ সালেই ম্যাচ পাতানোর কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হন বাংলাদেশি ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুল। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের ২০১৩ মৌসুমে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে সম্পৃক্ততার অভিযোগে নিষিদ্ধ হন। প্রথমে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ৮ বছর দেয়া হলেও পরে তা কমিয়ে ৫ বছর করা হয়।

নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটার লু ভিনসেন্ট আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হন। প্রথমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের একটি খেলায় ফিক্সিংয়ের একটি পদক্ষেপের রিপোর্ট করতে ব্যর্থ হওয়ায় জন্য ৩ বছর নিষিদ্ধ হলেও পরে ইংরেজ ঘরোয়া ক্রিকেটে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য আজীবন নিষিদ্ধ হন।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের একটি খেলায় ফিক্সিংয়ের একটি পদক্ষেপের রিপোর্ট করতে ব্যর্থ হওয়ায় জন্য নিষিদ্ধ হন শ্রীলংকান ক্রিকেটার কৌশল লোকুরচ্চি। তিনি ১৮ মাসের জন্য নিষিদ্ধ হন। 

প্রোটিয়া ক্রিকেটে আরেকটি কেলেঙ্কারির জন্ম দিয়ে আলোচনায় আসেন গুলাম বোদি। স্পট-ফিক্সিংয়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ৫ বছরের জেল হয় তার। ঘটনাটি ২০১৫ সালের। তখন সুপার স্পোর্টসের ধারাভাষ্যকার পরিচয়ের সুযোগ নেন। কীভাবে সহজে টাকা উপার্জন করা যায়, তা জানিয়ে সাবেক সতীর্থ-ক্রিকেটারদের ফুসলানোর চেষ্টা করেন বোদি।

হংকং জাতীয় দলের দুই ক্রিকেটারকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে আজীবন বহিষ্কার করা হয়। অন্য এক ক্রিকেটার নিষিদ্ধ হন পাঁচ বছরের জন্য। হংকং জাতীয় দলের দুই সহোদর ইরফান আহমেদ ও তার ভাই নাদিম আহমেদকে আজীবন বহিষ্কার করে আইসিসি। একই সঙ্গে হাসিব আমজাদকে সব ধরনের ক্রিকেটে পাঁচ বছর নিষিদ্ধ করা হয়। ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে স্কটল্যান্ড ও কানাডার বিপক্ষে ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন তারা।

গত ৫ এপ্রিল শ্রীলঙ্কার জাতীয় দলের খেলোয়াড় দিলহারা লুকুহেতিগেকে ফিক্সিংয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে সাময়িক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত কোনও ধরনের ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না তিনি।

এইচএস/এসএমএম

আরও পড়ুন