বরিশাল নগরজুড়ে অভিভাবকদের মধ্যে ভর করেছে শিশু অপহরণ আতঙ্ক। স্কুল এবং রাস্তা থেকে শিশুদের ধরে নেওয়া হচ্ছে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে সর্বত্র। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে এমনই একটি ঘটনার প্রমাণ মিলেছে কাউনিয়া বিনাপানি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
চাচাতো ভাই পরিচয় দেওয়া এক যুবক ওই স্কুল থেকে প্রথম শ্রেণিতে পড়া এক ছাত্রকে অপহরণের চেষ্টা করে। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষের সাবধানতার কারণে রক্ষা পায় সাড়ে চার বছর বয়সী সামিউল ইসলাম শিফাত নামের শিশুটি। ফলে ঘটনাটি নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে আরো বেশি আতঙ্ক ভর করেছে।
এদিকে অপহরণকারী সন্দেহে হৃদয় নামের ওই যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। সে কাউনিয়া পাসপোর্ট গলির মনু মিয়ার ছেলে বলে পরিচয় দিয়েছে। তাছাড়া এ ঘটনায় শিশুটির বাবা কাউনিয়া রোকেয়া আজিম সড়কের বাসিন্দা অটো টেম্পোর চালক আবুল বাশার খলিফা বাদী হয়ে কাউনিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
শিশুর মা শিলা আক্তার জানান, তার দুই ছেলে বিনাপানি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় স্কুল ছুটির মুহূর্তে হৃদয় নামের যুবক স্কুল কর্তৃপক্ষের নিকট নিজেকে চাচাতো ভাই পরিচয় দিয়ে শিফাতকে সাথে নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু তার আচার-ভঙ্গি শিক্ষকদের সন্দেহ হলে তারা শিফাতের মা ও বাবাকে ফোন করেন।
এর মধ্যেই শিশুর নানি মোসাম্মৎ বেগম নাতি সামিউল ইসলাম শিফাতকে আনতে স্কুলে গেলে হৃদয়ের প্রতারণা ধরা পড়ে যায়। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অন্য অভিভাবকরা তাকে ধরে কাউনিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
বরিশাল জিলা স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র রাফসানের মা উম্মে হাবিবা বলেন, কিছুদিন ধরে শিশু অপহরণকারীরা ছড়িয়ে পড়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। তাই ভয়ও বেড়ে গেছে। এখন শিশুসন্তানকে একা ছাড়তে সাহস পাচ্ছি না। এমনকি স্কুলে নিয়ে আসার পরে ছুটির পূর্বে পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে চোখ-কান খোলা রাখার অনুরোধ জানান এই অভিভাবক।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন হৃদয়কে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে তাকে অপহরণকারী সন্দেহে আটক করা হয়েছে। তাকে আপাতত জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ওসি।
এনআই