• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০১৯, ০৩:২৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৭, ২০১৯, ০৩:৫৩ পিএম

নুসরাত হত্যা মামলায় ৭ম দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ

নুসরাত হত্যা মামলায় ৭ম দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ

ফেনীর সোনাগাজীর আলোচিত মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ৭ম দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা চলছে। 

রোববার (০৭ জুলাই) সকাল ১১টা  ৪৫ মিনিটে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে মামলার প্রধান আসামি সিরাজ উদ দৌলা, আওয়ামী লীগ নেতা রহুল আমিন ও কমিশনার মাকসুদসহ ১৬ আসামিকে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এর আদালতে হাজির করা হয়। 

বৃহস্পতিবার (০৪ জুলাই) মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী মোহাম্মদ মোস্তফার সাক্ষ্যগ্রহণের পর বিচারক কেরোসিন বিক্রেতা লোকমান হোসেন লিটন, বোরকা বিক্রেতা জসিম উদ্দিন ও দোকানের কর্মচারী হেলাল উদ্দিন ফরহাদের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরার দিন ধার্য করেন। 

দুপুর দেড়টা পর্যন্ত লোকমান হোসেন লিটন ও জসিম উদ্দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা চলে। এরপর হেলাল উদ্দিন ফরহাদের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরার কথা রয়েছে।

গত ২৭ জুন মামলার ৯২ জন সাক্ষীদের মধ্যে প্রথমে নুসরাতের বড় ভাই ও মামলার বাদী মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ৩০ জুন আসামিপক্ষের ১৬ আইনজীবী তার জেরা শেষ করেন। ১ জুলাই নুসরাতের বান্ধবী সুলতানা নিশাত ও ফুর্তির সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা হয়। ২ জুলাই ফুর্তির জেরা শেষে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার ব্যক্তিগত সহকারী নুরুল আমিন আদালতে সাক্ষ্যদান শুরু হয়ে ৩ জুলাই সাক্ষ্যদান শেষ হয়। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী মোস্তফার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।

এদিকে নুসরাতকে হত্যার আগে গত ২৭ মার্চ শ্লীলতাহানির অপর একটি মামলার একমাত্র আসামি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে পিবিআই। বুধবার (৩ জুলাই) ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেনের আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হয়। পরে বৃহঃস্পতিবার তা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের মামুনুর রশিদের আদালতে স্থানান্তর করা হয়। আদালত আগামী ৯ জুলাই এই মামলাটির চার্জ শুনানির দিন ধার্য করে।

এ মামলার চার্জশিট জমা দেয়ার আগে ৭ জন সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। 

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতহানির মামলা তুলে না নেয়ায় তাকে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে; যা মৃত্যুশয্যায় নুসরাত বলে গেছেন। ১০ এপ্রিল ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুসরাতের মৃত্যু হয়।

পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ফেনীর পরিদর্শক মো. শাহ আলম আদালতে মোট ১৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র জমা দেন।

অভিযোগপত্রের ১৬ আসামি হলেন- মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা, ন‚র উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজীর পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল। 

এ মামলায় মোট ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় অন্য ৫ জনকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করে পিবিআই। আদালত তা অনুমোদন করে। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মিলেছে। 

এছাড়া যৌন হয়রানির মামলার পর নুসরাতের জবানবন্দি গ্রহণের সময় তার ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে সাইবার আইনে মামলা হওয়ার পর সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে।


একেএস

আরও পড়ুন