• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০১৯, ০৫:৪৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৩০, ২০১৯, ০৫:৪৭ পিএম

বরিশালের ৬ জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১২৭, দুজনের মৃত্যু

বরিশালের ৬ জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১২৭, দুজনের মৃত্যু

বরিশালসহ বিভাগের ছয় জেলায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা একশ ছাড়িয়ে গেছে। ছয় জেলায় এ পর্যন্ত মোট ১২৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৪৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) সহ বিভিন্ন জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। এর মধ্যে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (২৯ জুলাই) দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হওয়া ব্যক্তিরা হলেন বাকেরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের নাসির খানের ছেলে আসলাম খান (২৪) ও পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার গোসনতারা গ্রামের আমদ আলীর ছেলে সোহেল (১৮)। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে নিজ নিজ এলাকায় তাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

এদিকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা ফ্রি করে দিয়েছে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই সাথে চিকিৎসাসেবা শতভাগ নিশ্চিত করতে মেডিসিন ওয়ার্ডগুলোতে চিকিৎসক ও নার্সদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, গত ১৬ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত শেবাচিম হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ৭২ জনকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়। বর্তমানে এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩১ জন রোগী। বাকিরা চিকিৎসা গ্রহণ শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

ডা. বাকির হোসেন বলেন, যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে আসলামকে ২৯ জুলাই রাত সাড়ে ৯টায় শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন ইউনিট-৩ এর অধীনে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সোয়া ৩টায় তার মৃত্যু হয়।

এছাড়া ২৯ জুলাই দুপুর ১টা ২০ মিনিটে একই ইউনিট-৩ এর অধীনে ভর্তি করা হয় সোহেলকে। তিনিও চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৩টা ৪০ মিনিটে মারা যান। এরা দুজনই শেষ ক্রান্তিকালে হাসপাতালে এসে ভর্তি হন। তার আগেই ডেঙ্গু জ্বর হার্ট, লিভার ও কিডনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ফেলে।

পরিচালক বলেন, এরা দুজনই ঢাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছিলেন। চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন। ভেবেছিলেন ঢাকা থেকে দেয়া ওষুধে সুস্থ হয়ে যাবেন। কিন্তু তা না হয়ে অবস্থা খারাপের দিকে গেলে সোমবার তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের চিকিৎসা দিয়ে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাদের আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, শেবাচিম হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসাব্যবস্থার কোনো ত্রুটি হচ্ছে না। একমাত্র জায়গাস্বল্পতার কারণে ডেঙ্গু রোগীদের আলাদা থাকার ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। তাছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ডেঙ্গু রোগীদের সকল প্রকার চিকিৎসার পাশাপাশি পরীক্ষা-নিরীক্ষাও একদম বিনা মূল্যে করা হচ্ছে। ওষুধের ব্যবস্থাও হাসপাতালেই রয়েছে। তবে নরমাল স্যালাইনের কিছুটা সংকট রয়েছে। বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। শিগগিরই স্যালাইনের সংকট দূর হবে বলেও আশাবাদী শেবাচিম হাসপাতালের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

সাধারণ মানুষের প্রতি পরামর্শস্বরূপ পরিচালক বলেন, ডেঙ্গু কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। এটা চিকিৎসাতেই সুস্থ হওয়া সম্ভব। তাই গায়ে জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা এবং বমি বমি ভাব দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল জেলা বাদেই বিভাগের অপর ৫ জেলায় এখন পর্যন্ত ৫৫ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। যার মধ্যে পটুয়াখালী জেলায় ২০ জন, ভোলা জেলায় ১১ জন, পিরোজপুর জেলায় ৫ জন, বরগুনা জেলায় ১৮ জন ও ঝালকাঠি জেলায় ১ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হওয়া নতুন ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২৫।

এনআই

আরও পড়ুন