বাগেরহাটের শরণখোলায় বাসের ধাক্কায় আহত সেই নাছিমা বেগম (৪০) মারা গেছেন। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত ওই নারী উপজেলার উত্তর কদমতলা গ্রামের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী শহিদুল পহলানের স্ত্রী।

এদিকে নাছিমা বেগমের মৃত্যুর খবরে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকালে শরণখোলার সর্বস্তরের ছাত্রজনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা সকাল ১০টায় উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে দুর্ঘটনাস্থল পাঁচরাস্তা বাদল চত্বরে প্রতিবাদ সভা করে। দুপুরের পর থেকে শরণখোলা-মোরেলগঞ্জ রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঘাতক চালককে গ্রেপ্তার ও সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বাস চলাচল করতে দেওয়া হবে না বলে বিক্ষোভকারীরা জানান।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওইদিন দুপুরে বাসা থেকে নাছিমা বেগম ও তার ছেলে খুলনার সুন্দরবন পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র নাজমুল পহলান ভ্যানযোগে উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজারে যাওয়ার পথে পাঁচরাস্তা বাদল চত্বর মোড়ে এলে তাফালবাড়ী থেকে ছেড়ে আসা একটি যাত্রীবাহী বাস ব্রেকফেল করে ওই ভ্যানে ধাক্কা দেয়। এতে ভ্যানচালক শারীরিক প্রতিবন্ধী সবুর মিয়ার (৪৫) দুটি পা ভেঙে যায় এবং তারা মা-ছেলে গুরুতর আহত হন। বর্তমানে নাজমুলও খুমেক হাসপাতালের আইসিইউতে সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছেন।

সভায় রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন, ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শরীফ খায়রুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা আসাদুজ্জামান আসাদ, কলেজছাত্র বায়জীদ ফকির ও নওয়াজ আমীন বক্তব্য দেন। বক্তারা ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার, নিরাপদ সড়ক, শরণখোলা-মোরেলগঞ্জ রুটে ফিটনেসবিহিন বাস চলাচল বন্ধ এবং উপজেলার ব্যস্ততম বাদল চত্বর মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োজিত রাখার দাবি জানান।

শরণখোলা-মোরেলগঞ্জ-মোংলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি শামীম আহসান পলাশ বলেন, বাস মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বসে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এ ব্যাপারে শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তা (ওসি) দিলীপ কুমার সরকার বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘাতক বাসটি জব্দ রয়েছে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস বলেন, ভাঙচুর হওয়ার আশঙ্কায় মালিকপক্ষ আপাতত বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে বলে শোনা গেছে। এ ব্যাপারে বাস মালিকদের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এনআই