• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৬, ২০১৯, ০৯:৩৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৬, ২০১৯, ০৯:৩৬ পিএম

ঢাকা-নবাবগঞ্জ সড়কে চলছে পরিবহন নৈরাজ্য

ঢাকা-নবাবগঞ্জ সড়কে চলছে পরিবহন নৈরাজ্য
নবাবগঞ্জে ঢাকাগামী দুটি পরিবহন রাস্তা আটকে সড়কে যানজট সৃষ্টি করেছে -  ছবি : জাগরণ

নবাবগঞ্জ-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কে নেই কোনো আইনকানুনের বালাই। দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কে চলছে গণপরিবহনের নৈরাজ্য। যাত্রীবাহী বাসের সামনে দাঁড়িয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করছে অন্য বাস। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না বাসে যাতায়াতকারী জনসাধারণ।

এতে করে বাস মালিকদের দৈনিক টার্গেট পূরণ হলেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিরতিহীন সিটিং সার্ভিসের নামে চলছে ‘চিটিং’ সার্ভিস। আর এসব পরিবহনে নবাবগঞ্জ থেকে রাজধানীর গুলিস্তান মাত্র ৩৭ কিলোমিটার রাস্তা যেতে সময় লাগছে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা।

দীর্ঘ কয়েক যুগের এ সমস্যার জন্য পরিবহন মালিকদের খামখেয়ালিপনা ও প্রশাসনের  উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন স্থানীয় যাত্রীরা। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে চায় নবাবগঞ্জবাসী। নিয়মিত ঢাকাগামী যাত্রীদের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসনের মাসিক মিটিংয়ে এ বিষয়টি নিয়ে অনেকবার আলোচনা হলেও কোনো অগ্রগতি নেই। এর ফলে নবাবগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন স্ট্যান্ডে যাত্রী ওঠানোর নামে যানজট ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করলেও দেখার কেউ নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, বান্দুরা ও দোহারের মিনি কক্সবাজার থেকে এন মল্লিক পরিবহন, যমুনা সার্ভিস ও দ্রুতি পরিবহনের বাসগুলো ছেড়ে আসে। এরপর একটি আরেকটিকে যেতে না দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাস্তা আটকে রেখেছে। এভাবে পাল্লাপাল্লি করে যানজট তৈরি করে রাখছে। এতে মাত্র ৩৭ কিমি রাস্তায় সময় লাগছে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। ফলে যাত্রীরা পড়ছেন ভোগান্তিতে। নির্দিষ্ট সময়ে অফিস বা ব্যবসার কাজে যেতে পারছেন না।

এদিকে নবাবগঞ্জ-ঢাকা আঞ্চলিক সড়কে চলাচলরত যাত্রীবাহী পরিবহন সংস্থার অনেক গাড়ির সঠিক কাগজপত্র নেই, নেই চালকদের সঠিক প্রশিক্ষণ ও গাড়ির ফিটনেস। যাত্রীসেবার নামে পরিচালিত এসব পরিবহন কোনো জবাবদিহির প্রয়োজন মনে করছে না। এমনকি ঈদকে সামনে রেখে বাস ভাড়া চার গুণ বৃদ্ধি করলেও তাদের কিছু যায়-আসে না। শুধু ভোগান্তির কবলে পড়ে পকেট কাটা যায় সাধারণ যাত্রীদের। প্রশাসন মাঝেমধ্যে লোক দেখানো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে তাদের সতর্ক করে দিলেও পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আইন মানছে না বলে অভিযোগ আছে।

অন্যদিকে ঢাকা-নবাবগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে বান্দুরা থেকে এন মল্লিক পরিবহন এবং মৈনট ঘাট থেকে ছেড়ে আসা যমুনা বাস সার্ভিস মাঝিরকান্দা এলাকায় আসার পর কে কার আগে যাবে তা নিয়ে তাদের মধ্যে চলে রাস্তা দখলের লড়াই। পরিবহনগুলো পুরো রাস্তা দখল করে চলতে থাকে। মাঝিরকান্দা থেকে কেরানীগঞ্জের কদমতলী পর্যন্ত এসব পরিবহন পুরো সড়ক দখলের কারণে পথচারীদের পড়তে হয় নানা সমস্যায়। রাস্তা পারাপার হতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। এভাবেই দিনভর দাপিয়ে বেড়ায় নবাবগঞ্জ থেকে রাজধানীর গুলিস্তানগামী এসব পরিবহনের বাসগুলো।

নবাবগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মুহাম্মদ গোলাম নবী শেখ বলেন, ‘আমাদের পুলিশ সদস্যরা যানজট নিরসনে নিয়মিত কাজ করছে। সমস্যার সমাধানে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। বাস মালিকদের আন্তরিকতা না থাকায় মূলত এ সমস্যা হচ্ছে।’

নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম সালাউদ্দিন মনজু বলেন, যাত্রীদের ভোগান্তি ও যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে যাত্রী, চালক ও পরিবহন সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

এনআই

আরও পড়ুন