• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০১৯, ০৬:৪৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৯, ২০১৯, ০৭:২৩ পিএম

বন্যার কারণে জামালপুরে জমেনি ঈদবাজার ও গরুর হাট

বন্যার কারণে জামালপুরে জমেনি ঈদবাজার ও গরুর হাট
জামালপুরের বিভিন্ন হাটে গরু উঠলেও নেই ক্রেতা-সমাগম - ছবি : জাগরণ

বন্যাকবলিত জেলা জামালপুরে শেষ মুহূর্তেও জমে ওঠেনি ঈদবাজার ও গরুর হাট। বেচাবিক্রি খুব একটা নেই। মার্কেটগুলো ফাঁকা, ক্রেতার ভিড় না থাকায় দোকানিরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। গতবারের চেয়ে বেচাবিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে জানালেন জামালপুর শহরের কথাকলি মার্কেটের শহীদ স্টোরের মালিক মো. শহীদ মিয়া।

গরুর হাটেরও একই চিত্র। বিক্রেতারা হাটে গরুর দড়ি ধরে ক্রেতার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। জামালপুর-শেরপুর সীমান্তে সবচেয়ে বড় হাট বসে ফেরিঘাটে। হাটে গরু উঠলেও ক্রেতা-সমাগম নেই। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যা পর্যন্ত হাটে মোট ৬টি গরু বিক্রি হয়েছে। শুক্রবার (৯ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত একটি গরুও বিক্রি হয়নি বলে জানালেন হাটের ইজারাদার আব্দুস সামাদ।

তিনি আরো জানান, গতবার এই সময়ে গরুর ক্রেতা-বিক্রেতা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হতো। রওনার রসিদ কাটতে ব্যস্ত সময় যেত। ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগমে সরগরম থাকত হাট। এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। ঈদবাজার ও গরুর হাটেও পড়েছে বন্যার প্রভাব।

বন্যাকবলিত জেলা জামালপুর। জেলার ৭টি উপজেলায় বন্যাকবলিত হয়ে ১৫ লাখ মানুষ সহায়-সম্পদ হারিয়ে প্রায় নিঃস্ব। দুর্গত এলাকাগুলোতে ঘরে খাবার নেই। হাতে টাকা নেই। অনেকেই পারছে না বন্যায় আক্রান্ত ঘরবাড়ি মেরামত করতে, কেউ কেউ দু’বেলা খাবার জুটাতে পারছে না। সেখানে ঈদের কেনাকাটা তাদের কাছে আমবস্যার চাঁদের মতো, গরু কোরবানির কথা বলাই বাহুল্য। মুষ্টিমেয় উচ্চবিত্ত, সরকারি চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীরা কোরবানির জন্য গরু কিনলেও তা হাতে গোনা।

কথাকলি মার্কেটের দিদার ব্রাদার্সের মালিক দিদার হোসেন বলেন, গত ঈদবাজারের চেয়ে এবার বেচাবিক্রি তিন ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। ঈদবাজার টার্গেটে ধারদেনা ও সুদে যে পুঁজি খাটিয়েছি, তা থেকে আসল তোলাই মুশকিল। সুদের টাকার লাভ নিয়ে বড়ই দুশ্চিন্তায় আছি।

শহরের ব্র্যান্ডিং বিপণিবিতান প্রাইড, লোটো, টেক্সমার্টসহ নামী-দামি শোরুমগুলোতে অলস ভঙ্গিতে বসে আছেন সেলসম্যানরা। ক্রেতা-সমাগম নেই বললেই চলে।

শহরের হাটচন্দ্রা গ্রাম থেকে কেনাকাটা করতে এসেছেন সুমাইয়া রুহানি। তার সাথে কথা বললে তিনি জানান, বন্যার কারণে এখন সবারই অভাব। গতবার যে বাজেট ছিল, এবার তার অর্ধেকও নেই। তাই তেমন একটা কেনাকাটা হয়নি।

সদর উপজেলার হাটচন্দ্রা, নান্দিনা, কালীবাড়ি, মেলান্দহ উপজেলার ভাবকী নলেরচর, হাজারবাড়ি, ইসলামপুর উপজেলার ধর্মকুড়া ও মাদারগঞ্জের কুয়ালিকান্দি গরুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, গরুখামারি ও গৃহস্থরা হাটে গরু তুললেও ক্রেতার অভাবে এবং বাজারমূল্য কম থাকায় দিন শেষে গরু নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

রশিদপুর এলাকার হাসমত আলী বলেন, ‘দুই দিন ধরে গরু নিয়ে হাটে হাটে ঘুরছি। কেনার লোক কম। বাজার সস্তা। যে ট্যাহা গরুর পিছে খরচ করছি, হেই দামও করে না কেউ। মাঝখান তনে গরুর বেচবার আইয়্যা হাতখরচ, যাতায়াত ভাড়াই লস। এহন ঈদের আগে গরু বেচবের পামু কি না দুশ্চিন্তায় আছি।’

এনআই

আরও পড়ুন