• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২৬, ২০১৯, ০৪:৪৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২৬, ২০১৯, ০৪:৪৯ পিএম

দিঘলিয়া গণহত্যা দিবস ২৭ আগস্ট

দিঘলিয়া গণহত্যা দিবস ২৭ আগস্ট

২৭ আগস্ট দিঘলিয়া গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার  দেয়াড়া গ্রামে পাক হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকারদের হাতে ৬০ জন নিরীহ গ্রামবাসী নিহত হন। মুক্তিযুদ্ধে নিহত এসব শহীদের কোন স্বীকৃতি আজও  মেলেনি। সেসময়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় এখনও বেঁচে আছেন একজন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, ৭১’ গণহত্যা আর্কাইভ ও জাদুঘর কয়েক বছর যাবত দিনটিকে ‘একাত্তরের দেয়াড়া গণহত্যা’ দিবস হিসেবে পালন করছে। তবে এ বছর কোন অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেই বলে জানা গেছে। 

স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবদার রহমান তার দলবল নিয়ে দিঘলিয়ার দেয়াড়া গ্রামে অবস্থান করছেন এই খবরের ভিত্তিতে পাক হানাদার বাহিনীর দোসর কয়েকশ রাজাকার ১৯৭১ সালের ২৭ আগস্ট ওই গ্রামটি ঘিরে ফেলে। রাজাকার বাহিনী ডা. মতিয়ার রহমানসহ দেয়ারা গ্রাম থেকে ৬১ জনকে ধরে নিয়ে যায়। তারা মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্রনেতা শেখ আবদার রহমানের সন্ধান চায়। আটককৃত কেউই মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবদার রহমানের সন্ধান দিতে অস্বীকার করায় সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে এদেরকে প্রকাশ্য দিবালোকে দেয়াড়া গ্রামের তিনটি স্থানে গুলি ও জবাই করে হত্যা করা হয়। কিন্তু ঘাতকের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েও সৌভাগ্যক্রমে সৈয়দ আবুল বাসার নামে এক ব্যক্তি প্রাণে বেঁচে যান। আবুল বাসার এখনও ধারালো অস্ত্রের ১৯টি ক্ষত চিহ্ন নিয়ে বেঁচে আছেন। এই লোমহর্ষক ঘটনা এলাকার শত শত মানুষ প্রত্যক্ষ করে। রাজাকাররা ২২ জনের লাশ তিনটি স্থানে গণকবর দেয় এবং বাকি লাশগুলো পার্শ্ববর্তী ভৈরব নদে ভাসিয়ে দেয়।

মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের ৩৯ বছর এসে ২০১০ সালে গণকবরের সন্ধান মেলে। সে সময়ে উদ্ধার হয় সেসব শহীদদের হাড়গোড় ও মাথার খুলি। সেগুলো একত্রে করে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়। স্থানীয় যুবলীগ নেতা সাংবাদিক শেখ মনিরুল ইসলাম অন্যতম উদ্যোক্তা হয়ে জনৈক শিল্পপতির সহায়তায় উদ্ধার হওয়া হাড়গোড় একত্রে মাটিচাপা দিয়ে সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করে দেন। 

যুবলীগ দিঘলিয়া উপজেলা শাখার নেতা ও দিঘলিয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শেখ মনিরুল ইসলাম জানান, ১৯৭১ সালের ২৭ আগস্ট দেয়াড়ায় গণহত্যার গঠনা ঘটে। সে সকল শহীদদের স্মৃতিরক্ষায় উদ্ধার হওয়া হাড়গোড় একত্রে সংরক্ষণ করা হয়েছে। বেশ কয়েক বছর দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন কর্মসূচি পালন করে। এবার কোন কর্মসূচি আছে কিনা জানি না।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মহেন্দ্র নাথ সেন জানান, এবার দেয়াড়া গণহত্যা দিবসে জেলা শাখার পক্ষ থেকে কোন কর্মসূচি নেই। 

৭১’ গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ট্রাস্টি সদস্য প্রফেসর শঙ্কর কুমার মল্লিক বলেন, ট্রাস্টি সাধারণ সম্পাদক ডা. শেখ বাহারুল আলম রোববার হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এজন্য এবার দিবসটি উপলক্ষে কোন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি।

কেএসটি

আরও পড়ুন