• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৯, ০৩:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৯, ০৩:৩০ পিএম

শিক্ষক পেটানো সেই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৯ সদস্যের অনাস্থা

শিক্ষক পেটানো সেই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ৯ সদস্যের অনাস্থা
কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ  -  ছবি : জাগরণ

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় শিক্ষক পেটানো সেই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পরিষদের ৯ সদস্য।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ওই ৯ ইউপি সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অনাস্থা প্রস্তাব এনে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।

লিখিত অভিযোগে কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের ওই ৯ সদস্য তাদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শিক্ষক পেটানো, অর্থ আত্মসাৎ, সাম্প্রদায়িক ইস্যু সৃষ্টি, পরিষদের সদস্য ও জনগণের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ ১৫টি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন ওই ৯ ইউপি সদস্য।

জানা গেছে, গত শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের ধারাবাশাইল বাজারে বসে গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারকে চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ ও তার ভাই মনি বাড়ৈ পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠান।

এ ঘটনার পরে গোটা ইউনিয়নে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ঘটনার পর থেকে ইউনিয়নবাসী বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করে আসছে। ইউনিয়নবাসীর সাথে প্রতিবাদের কর্মসূচি হিসেবে ওই ৯ ইউপি সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব এনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এর আগে শিক্ষক পেটানোর ঘটনায় শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারের স্ত্রী মনি হালদার বাদী হয়ে কোটালীপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় পুলিশ চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর ভাই মনি বাড়ৈকে গ্রেফতার করে। পরে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য অনাদি বৈরাগী অনুপ বলেন, ‘আমাদের চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর বিরুদ্ধে শিক্ষক পেটানো, অর্থ আত্মসাৎ, সাম্প্রদায়িক ইস্যু সৃষ্টি, পরিষদের সদস্য ও জনগণের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। আমরা এতদিন ভয়ে তার অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারিনি। শিক্ষক পেটানোর পরে পুরো ইউনিয়নবাসী তার বিরুদ্ধে যখন ক্ষোভে ফেটে পড়ে, তখন আমরা অভিযোগ দায়ের করি। আমরা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈর বহিষ্কার দাবি করছি।’

কোটালীপাড়া শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাফায়েত হোসেন বলেন, শিক্ষক হচ্ছে জাতি গড়ার কারিগর। জাতির মেরুদণ্ড। চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ শিক্ষকের গায়ে হাত দিয়ে জাতির মেরুদণ্ডে আঘাত করেছেন। তিনি জাতি গড়ার কাজে বাধা সৃষ্টি করছেন। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে যদি শিক্ষকদের গায়ে হাত তুলতে পারেন, তাহলে তার কাছ থেকে ইউনিয়নবাসী ভালো কিছু আশা করতে পারে না।

চেয়ারম্যান উত্তম কুমার বাড়ৈ বলেন, ‘ঘটনার দিন কান্দি ইউনিয়নের একটি বিদ্যালয় নিয়ে শিক্ষক অমূল্য রতন হালদারের সাথে  ধারাবাশাইল বাজারে আমার কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শিক্ষক অমূল্য রতন হালদার আমার বাপ-মা তুলে গালি দেন। তখন আমার ভাই মনি বাড়ৈর সাথে তার হাতাহাতি হয়। অপরদিকে যে ৯ ইউপি সদস্য আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছেন, তারা পূর্বেও আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ এনে প্রশাসনের কাছে দরখাস্ত করেছিলেন। সেসব অভিযোগ তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়।’

অনাস্থা প্রস্তাব এনে দাখিলকৃত অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমানের কাছে জানার জন্য তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে ওই ৯ ইউপি সদস্যের লিখিত অভিযোগ দাখিলের রিসিভ কপি গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সাংবাদিকদের হাতে এসে পৌঁছায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাহফুজুর রহমান বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন।

এনআই

আরও পড়ুন