• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯, ০২:০০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯, ০২:০০ পিএম

তিন যুগ পর শুরু হলো ‘খোয়াই নদী’ উদ্ধার

তিন যুগ পর শুরু হলো ‘খোয়াই নদী’ উদ্ধার

সকল প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে দীর্ঘ তিন যুগ পর অবশেষে শুরু হয়েছে হবিগঞ্জের পুরাতন খোয়াই নদী উদ্ধার অভিযান।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় শহরের মাছুলিয়া এলাকা থেকে অভিযান শুরু করে জেলা প্রশাসন। আগামী কয়েক দিনের ভেতরে সবগুলো অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

খোয়াই নদী উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্ব দেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত হোসেন রুবেল। এ সময় পৌরসভাসহ অন্যান্য কর্মকর্তা বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। 

জানা যায়, প্রায় ৩ যুগ আগে নদী শাসনের মাধ্যমে খোয়াই নদীর গতিপথ পরিবর্তন করায় শহরের ভেতরের ৫ কিলোমিটার অংশ পুরাতন নদীতে পরিণত হয়। মূলত এরপর থেকেই সেখানে নজর পরে প্রভাবশালীদের। অব্যাহত দখলের ফলে দুইশ ফুট প্রশস্ত নদীটি এখন নালায় পরিণত হয়েছে। আর এসব দখলদারকের তালিকায় রয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদসহ সুশীল সমাজের ব্যক্তিরাও। এমনকি সরকারিভাবেও নদী ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে জেলা পরিষদ ভবন, মেজর জেনারেল এম এ রব স্মৃতি পাঠাগার, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ। কিন্তু বারবার উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু হলেও কিছুই দৃশ্যমান হয়নি। বিভিন্ন অপশক্তির কারণে বারবারই স্থগিত হয়েছে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া। অবশেষে সোমবার বেলা ১১টা থেকে খোয়াই নদীর উপর নির্মত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নেমেছে প্রশাসন।

প্রশাসনের এমন উদ্যোগে খুশি হবিগঞ্জবাসী। এই সাথে পরিবেশবাদীরা মনে করছেন তাদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফল পেতে যাচ্ছেন বলে দাবি করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাখাওয়াত হোসেন রুবেল বলেন, ‘জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে সোমবার সকাল থেকে আমরা খোয়াই নদী উদ্ধারে নেমেছি। বিপুল সংখ্যা শক্তিশালী নির্মাণ এখানে থাকার কারণে বেশ কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।’

জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবির মুরাদ বলেন, ‘গত কয়েক দিনে সরেজমিনে সরকারি জায়গা পরিমাপ করে ৬শ দখলদারের নাম তালিকাভুক্ত করেছেন। এর মধ্যে অনেকেরই অফিস, বিল্ডিং, মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা ও বাগান বাড়ি রয়েছে। এর মধ্যে মসজিদ, মন্দির, মাদ্রাসা ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্থাপনা উচ্ছেদের ক্ষেত্রে পর্যালোচনা করা হবে। অনেক স্থাপনা উচ্ছেদের ক্ষেত্রে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলে কাগজপত্র দেখে সঠিক হলে বিবেচনা করা হবে। আর ডায়াবেটিক হাসপাতাল ও জেলা পরিষদ সরকারিভাবে বন্দোবস্ত দেয়া। সেটা আইনি প্রক্রিয়ায় দেখা হবে।’

তিনি বলেন, ‘নদী ও খালের জায়গা সরকাররিভাবে কোন বন্দোবস্ত দেয়া হয় না। যদি কোন ব্যক্তি লিজ নিয়ে থাকেন তাহলে সেটা অবৈধ। শ্রেণি পরিবর্তন বৈধ নয়, যেগুলো শ্রেণি পরিবর্তন করা হয়েছিল সেগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ উচ্ছেদ অভিযানে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সহকারী কমিশনার ভূমি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিদ্যুৎ ও গ্যাস অফিসের কর্মচারীরাও উপস্থিত থেকে সহযোগিতা করবে। যতদিন পর্যন্ত এ উচ্ছেদ অভিযান চলবে ততদিন পর্যন্ত হবিগঞ্জ পৌরসভা জেলা প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।’

কেএসটি

আরও পড়ুন