ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমানকে অপসারণের দাবিতে ইবি ছাত্রলীগের বিদ্রোহী গ্রুপের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ক্যাম্পাসে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল, প্রশাসন ভবন ও প্রধান ফটক অবরোধ, উপাচার্যের সাথে দফায় দফায় সাক্ষাৎ করেছেন তারা। দাবি আদায় না হওয়ায় বিকেল ৫টায় উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ করে অবস্থান নেন তারা।

এদিকে ইবিকে সাত দিনের মধ্যে অছাত্র ও মাদকমুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান ৩য় বারের মতো প্রক্টরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অছাত্র ও মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অনস্থান নেয়ায় তার বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে বলে দাবি করেন ড. মাহবুবর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেয়ার আগেই ক্যাম্পাস ৭ দিনের মধ্যে মাদক ও অছাত্রমুক্ত করার ঘোষণা দিই। তারা এটাকেই কেন্দ্র করে আন্দোলন করছে।’

জানা যায়, বেলা ১টায় প্রক্টরকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ছাত্রলীগের বিদ্রোহী নেতা-কর্মীরা। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে প্রক্টরকে অপসারণের দাবি জানান তারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তৌকির মাহফুজ মাসুদ, রিজভী আহমেদ পাপন, ফয়সাল সিদ্দীকী আরাফাত, মিজানুর  রহমান লালনসহ নেতা-কর্মীরা। উপাচার্যের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া না পেয়ে প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২টা ও সাড়ে ৪টার নির্ধারিত বাস ছেড়ে যেতে পারেনি। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আন্দোলনকারীরা জানান, ২০১৪ সালের ২৫ আগস্ট ছাত্রলীগের ওপর পুলিশকে গুলি করার নির্দেশদাতা বর্তমান প্রক্টর। যে ব্যক্তি ছাত্রলীগের ওপর গুলি করার নির্দেশ দেন তাকে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। তাকে অব্যাহতি না দেয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

পরে দুপুর ৩টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ২য় দফায় উপাচার্যের কাছে দেখা করতে যান ছাত্রলীগের বিদ্রোহী নেতা-কর্মীরা। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের বিষয়টি ভেবে দেখার সময় চেয়ে প্রধান ফটক থেকে অবরোধ তুলে নেয়ার অনুরোধ জানান। তার অনুরোধ নাকচ করে প্রক্টরকে অপসারণ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালাবেন বলে তারা জানান। পরে নেতারা সেখান থেকে বের হয়ে অবরোধ চালাতে থাকেন।

সাড়ে ৫টায় প্রধান ফটক অবরোধ ছেড়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে তারা। এতে অবরুদ্ধ রয়েছেন উপাচার্য।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী বলেন, তাকে কিছুদিনের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রক্টরের দায়িত্বের জন্য যোগ্য লোক খোঁজা হচ্ছে। এর মধ্যে যোগ্য ব্যক্তি পেলে তার ওপর দায়িত্ব দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২১ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান ৩য় বারের মতো প্রক্টরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তার দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রক্টরকে অব্যাহতি দেয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা) উপাচার্যের কার্যালয় অবরুদ্ধ রয়েছে।

এনআই