• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯, ১২:১৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৯, ১২:১৫ পিএম

খুলনায় ৯৯৭টি মন্দিরে পূজার আয়োজন

শেষ মুহূর্তে দুর্গা প্রতিমায় চলছে রঙ তুলির ছোঁয়া

শেষ মুহূর্তে দুর্গা প্রতিমায় চলছে রঙ তুলির ছোঁয়া

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ শারদীয় দুর্গোৎসবের রঙ ছড়িয়ে দিতে ব্যস্ত সময় পার করছে মৃৎশিল্পের দক্ষ কারিগররা। তাদের হাতের নিপুণ ছোঁয়া আর শেষ মুহূর্তে রঙ তুলির আঁচড়ে প্রাণবন্ত হয়ে উঠতে শুরু করেছে একেকটি প্রতিমা। শৈল্পিক কারুকার্যের অলঙ্কারে ফুটে উঠছে দেবী দুর্গার সৌন্দর্য।

দেবী দুর্গার আগমনে দম ফেলবার ফুসরত নেই মৃৎশিল্পীদের। শনিবার মহালয়া উদযাপনে মাধ্যমে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে বলে জানা গেছে। এরপর আগামী (৪ অক্টোবর) শুক্রবার ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ ও মহাষষ্ঠী বিহিত পূজো ও সায়ংকালে দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস, শনিবার (৫ অক্টোবর) মহাসপ্তমী বিহিত পূজো, দেবীর নব পত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন, সপ্তমাদি কল্পারম্ভ ও মহাসপ্তমী বিহিত পূজো। রোববার (৬ অক্টোবর) মহাষ্টমী, কুমারী ও সন্ধিপুজো, সোমবার (৭ অক্টোবর) মহানবমী, মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ও বিজয়া দশমী বিহিত পূজোর মধ্যে দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে। পুরোহিতরা জানিয়েছেন- এ বছর  দেবী দুর্গা ঘোটকে আগমন করে ঘোটকেই স্বামীগৃহে গমন করবে।

এবছর খুলনা জেলায় ৯৯৭টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে রয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ১২৯টি এবং জেলার নয়টি উপজেলায় আটশ ৬৮টি পূজামণ্ডপ। মহানগরীর আটটি থানায় একশ ২৯টি পূজামণ্ডপ রয়েছে। এর মধ্যে সদর থানা এলাকায় ২৫টি, সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় ১১টি, খালিশপুর থানা এলাকায় ১১টি, দৌলতপুর থানা এলাকায় ২২টি, খানজাহান আলী থানা এলাকায় ১১টি, হরিণটানা থানা এলাকায় ৬টি, লবণচরা থানা এলাকায় ১০টি এবং আড়ংঘাটা থানা এলাকায় ৩৩টি পূজামণ্ডপ।

জেলার নয়টি উপজেলা ৮৬৮টি পূজামণ্ডপ রয়েছে। এর মধ্যে বটিয়াঘাটা উপজেলায় ১১৮টি, দাকোপ উপজেলায় ৮২টি, রূপসা উপজেলায় ৭২টি, তেরখাদা উপজেলায় ১০৪টি, দিঘলিয়া উপজেলায় ৬১টি, ফুলতলা উপজেলায় ৩২টি, ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৯৭টি, পাইকগাছা উপজেলায় ১৪৯টি এবং কয়রা উপজেলাতে ৫৪টি পূজামণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর শিববাড়ি মোড়ের সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, বড় বাজার কালীবাড়ি দুর্গা মন্দির, শীতলাবাড়ি দুর্গা মন্দির, দোরখোলা দুর্গা মন্দির, কৈয়া বাজার দুর্গা মন্দির, জিলেরডাঙ্গা দুর্গা মন্দির, হোগলাডাঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকার মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, ছোট বড় সব মন্দিরেই এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। রঙ তুলির ছোঁয়ায় প্রতিমার আকর্ষণ বাড়ানোর পাশাপাশি দৃষ্টিনন্দন মণ্ডপ তৈরিতে অঘোষিত প্রতিযোগিতায় নেমেছে অনেকে। 

প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন এমন কয়েকজন মৃৎশিল্পী জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিমা তৈরির কাজ একটু বেশি। প্রতিমা দৃষ্টিনন্দন করতে দিনরাত কাজ হচ্ছে। এখন রঙ তুলির আঁচড়ে সাজানো হচ্ছে।

পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, মন্দিরে ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিজস্ব স্বেচ্চাসেবক নারী ও পুরুষরা দায়িত্বপালন করবে। 

গত সোমবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে দুর্গা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সাথে জেলা প্রশাসক বিশেষ সভা করেছেন। ওই সভায় জেলা প্রশাসক দুর্গাপূজাকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। ওই সভায় জানান হয় পূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি মণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি আনসার ও  স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থাকবে পুলিশসহ সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

খুলনা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি)  অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. আনিচুর রহমান বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ তার পেশাগত দায়িত্ব পালনে কঠোরতা অবলম্বন করবে। দুর্গাপূজা নিবিঘ্নে ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসন বদ্ধপরিকর। এ সংক্রান্ত বিষয় নিযে জেলা প্রশাসনের সাথে পূজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দদের সাথে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, খুলনায় কোথায় বা কোন মন্দিরে বিশৃঙ্খলা ঘটার সম্ভাবনা নেই।

কেএসটি

আরও পড়ুন