• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০১৯, ০৮:১৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৭, ২০১৯, ০৮:১৮ পিএম

জেলেরা ধরছে ইলিশ, তাদের ধরছে পুলিশ

জেলেরা ধরছে ইলিশ, তাদের ধরছে পুলিশ
শিবালয়ের যমুনার পাড়ে অবাধে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ  -  ছবি : জাগরণ

মানিকগঞ্জের পদ্মা-যমুনায় থেমে নেই মা ইলিশ শিকার। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও ধরপাকড়ের মধ্যেও চলছে মৌসুমি জেলেদের ইলিশ শিকারের মহোৎসব।

জেলেরা ধরছে ইলিশ, তাদের ধরছে পুলিশ। বিশেষ করে শিবালয়ে এ সময়ে ইলিশ রক্ষার নামে চলছে চোর-পুলিশ খেলা। উপজেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে প্রতিদিন জেলে ও ইলিশ ক্রেতাদেরকে আটক করছে পুলিশ। জব্দ করছে বিপুল পরিমাণ মাছ ও জাল। জব্দকৃত যৎসামান্য মাছ যাচ্ছে এতিমখানায়।

আবার অনেকে খাবারের জন্য বাসাবাড়িতে ইলিশ মজুত করেও প্রশাসনের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন পরিবহনে ও রাস্তাঘাটে চলছে তল্লাশি, জব্দ করা হচ্ছে মাছ, চলছে জেল-জরিমানা।

প্রশাসনের এত নজরদারির মধ্যেও থেমে নেই মা ইলিশ নিধন। জেলেরা নির্বিচারে শিকার করছে মা ইলিশ। নদীর পাড়ে দাঁড়ালেই দেখা যায়, শত শত নৌকা ভাসছে নদীতে। জেলেদের জালে যেমন ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে চকচকে রুপালি ইলিশ। তেমন নদীর  পাড় এলাকা এবং শিবালয়ের আলোকদিয়াসহ-চরাঞ্চলে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিবালয়ের আলোকদিয়ার চরে চলছে শুধু ইলিশ কেনাবেচা। বিকাল হলেই প্রতিদিন শত শত নারী-পুরুষ নৌকা নিয়ে ওই চরে যাচ্ছে মাছ কিনতে। দেখে মনে হবে এ যেন ইলিশের মেলা বসেছে। দাম যে খুব একটা কম তা নয়। হুজুগে বাঙালি তাই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ইলিশ কিনতে। ছোট-বড় মিলে গড়ে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকা করে।

জানা গেছে, গত ৯ অক্টোবর রাত ১২টার পর থেকে সারা দেশে একযোগে মা ইলিশ মাছ ধরার ওপর সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে, যা আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত চলতে থাকবে। এ সময়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে চলছে ইলিশ শিকারের প্রতিযোগিতা। জেলেদের জালে ধরা পড়ছে অসংখ্য ডিমওয়ালা মা ইলিশ। এরা প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে নানা কৌশল অবলম্বন করে ইলিশ শিকার করছে এবং গোপনে তা বিক্রি করছে ক্রেতাদের কাছে।

এদিকে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে চলছে ব্যাপক অভিযান ও ধরপাকড়। প্রতিদিন আটক করা হচ্ছে জেলে ও মাছ ক্রেতাদের। জব্দ করা হচ্ছে জাল ও মাছ। ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ১২৯ জনকে ১ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান এবং ৪৬ জনকে ১ লাখ ৬৬ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ১৩ লাখ ৮১ হাজার মিটার কারেন্ট জাল ধ্বংস করা হয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ১ হাজার ৭৯২ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করে বিভিন্ন এতিমখানায় দেয়া হয়েছে বলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

প্রতিদিন চলছে ধরপাকড়। তার পরও থেমে নেই ইলিশ শিকারিদের নিধন কার্যক্রম। এরা আরো উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে  সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ নিধন চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবছরই এসব মৌসুমি জেলেরা সারা বছর নদীতে মাছ না ধরলেও এ সময়ে ৩-৪ লাখ টাকা করে কামাবে, এ টার্গেট নিয়েই নদীতে নামছে মা ইলিশ ধরতে। পদ্মা-যমুনার কয়েকটি চরাঞ্চলে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, এক সুবিশাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে চলছে মা ইলিশ নিধন।

এসব বিষয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম ফিরোজ মাহমুদ বলেন, ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। অভিযান সফল করতে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

এনআই

আরও পড়ুন