• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০১৯, ০৩:২৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৯, ২০১৯, ০৩:৪০ পিএম

ভালুকা উপজেলা আ.লীগের সম্মেলন : তৃণমূলে উৎসবের আমেজ

ভালুকা উপজেলা আ.লীগের সম্মেলন : তৃণমূলে উৎসবের আমেজ

ময়মনসিংহের ভালুকায় ১৬ বছর পর তৃণমূলে আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। উপজেলার ১টি পৌরসভা এবং ১১টি ইউনিয়নে সম্মেলনকে ঘিরে পদ প্রত্যাশীরা মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

দীর্ঘদিন পর সম্মেলনকে ঘিরে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে বইছে উৎসবের আমেজ। তবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক হেভিওয়েট প্রত্যাশী থাকায় তৃণমূলের সকল নেতাকর্মীদের মাঝে বইছে আলোচনা ও সমালোচনা। এদিকে, পদপ্রত্যাশীরা নিজের অবস্থান তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দিচ্ছেন নানা স্ট্যাস্টাস। কেউ কেউ ফেসবুকে লাইভেও আসছেন। তুলে ধরছেন তাদের অতীত কার্যক্রমের ফিরিস্তি।

ভালুকা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- সভাপতি পদে ময়মনসিংহ দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর ১১ নম্বর সাবসেক্টর কমান্ডার মেজর আফছার উদ্দিনের সু-যোগ্য পুত্র, ময়মনসিংহ-১১ ভালুকা আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ ধনু, উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ গোলাম মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগের সম্মানীত সদস্য ও দানবীর খ্যাত আলহাজ এম এ ওয়াহেদ । 

সাধারণ সম্পাদক পদে ভাষা সৈনিক ও সাবেক সাংসদ অ্যাড. মোস্তফা মতিনের সু-যোগ্য কন্যা জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা এমপি মনিরা সুলতানা মনি। উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম পিন্টু, উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওমর হায়াত নঈম, দপ্তর সম্পাদক কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ। সবাই জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন। এরই মধ্যে সরগরম হয়ে উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতি। অনেকেই বলেছেন, এবার উপজেলা কমিটিতে আসছে চমক। চলছে নানা হিসেব নিকেশ। ছিঁটকে পড়তে পারেন পুরাতন অনেকেই। তবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে আগ্রহের যেন কমতি নেই। 

এদিকে, বিভিন্ন ইউনিটের কর্মীদের নিয়ে নিয়মিত বৈঠক শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশী নেতারা। বিত্তবানদের ড্রয়িং রুম থেকে শুরু করে চায়ের দোকান পর্যন্ত চলছে এর জল্পনা-কল্পনা। ছবি দিয়ে নিজ নিজ পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রচারণা চালাচ্ছেন কর্মীরা। বিগত দিনে দলের জন্য তাদের অবদান ও ত্যাগের কথাও তুলে ধরছেন কেউ কেউ। এসময় দলের দুর্দিনে বিভিন্ন মিটিং, মিছিল ও আন্দোলন সংগ্রাম অংশগ্রহণের ছবি ও তথ্য যোগ করছেন। বিএনপি-জামায়াত জোট আমলের মামলা হামলা, কারাবরণের তথ্য-উপাত্ত এবং পারিবারিক সাংগঠনিক ঐতিহ্যও তুলে ধরছেন। আবার পছন্দের পদ পেতে ঊর্ধ্বতন নেতাদের বাসা ও অফিসে ভিড় জমাচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা। 

ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম পিন্টু দৈনিক জাগরণকে বলেন, আগামী ১৬ নভেম্বরের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করার খবরে তৃণমূলে নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দ-উৎসাহ বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়ন তরান্বিত করতে নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে উপজেলা আ.লীগের নতুন নেতৃত্ব আসবে এটাই আশা করি।

জেলা আওয়ামী লীগের সম্মানীত সদস্য ও দানবীর খ্যাত আলহাজ এম এ ওয়াহেদ বলেন,  আ.লীগের মুখোশ পরা কারা দলের ক্ষতি করেছে, নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে তারা এখন চিহিৃত হয়ে যাবে। আগামী সম্মেলনে পরীক্ষিত নেতা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দল ও সরকারের উন্নয়নকাজ এগিয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা রাখি।
 
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ গোলাম মোস্তফা বলেন, আগের তুলনায় ভালুকার আওয়ামী লীগ সংঘটিত শক্তিশালী তাই সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ভালুকার প্রতিটি এলাকার নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণ ফিরে এসেছে। সর্বত্রই চলছে কমিটি নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা। দলের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছেন, দুর্দিনে দলের সঙ্গে ছিলেন- এমন নেতারা বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃত্বে আসবেন বলে জানান তিনি।

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা এমপি মনিরা সুলতানা মনি বলেন, আ.লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে ভালুকা উপজেলা আ.লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এ সম্মেলনের মাধ্যমে আগামী দিনে ত্যাগী নেতা নির্বাচিত হবে বলে আশা করেন তিনি।

ময়মনসিংহ-১১ ভালুকা আসনের সাংসদ আলহাজ কাজিম উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আমি আমার কোনো সিদ্ধান্ত কারো উপরে চাপিয়ে দিবো না কখনোই। সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক মডেল হিসেবেই ভালুকায় তৃণমূল থেকে পৌর, ইউনিয়ন উপজেলার রাজনীতি নির্ণয় কবরে দলের কাউন্সিলররাই। তবে কাউন্সিলরদের প্রতি আমার নির্দেশনা থাকবে তারা যেন কোন সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, নব্য আওয়ামী লীগকে দলের পদে অন্তর্ভুক্ত না করে। আসন্ন সম্মেলনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালে তৃণমূল ভোটে উপজেলা আ.লীগের কমিটি গঠন হয়। এতে সভাপতি হন সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. এম আমানউল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক হন আলহাজ গোলাম মোস্তফা। 

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের পর প্রায় ১৬ বছর ভালুকায় আ.লীগের কোন সম্মেলন হয়নি। 

কেএসটি

আরও পড়ুন