• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০১৯, ০৮:৪৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১, ২০১৯, ০৮:৪৯ পিএম

মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মান না দিতে মুক্তিযোদ্ধার আবেদন

মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মান না দিতে মুক্তিযোদ্ধার আবেদন
বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিমউদ্দিন  -  ছবি : জাগরণ

দিনাজপুরের পর এবার পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে ছেলের চাকরি না হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সলিমউদ্দিন (৬৬) ক্ষোভে মৃত্যুর পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান না দিতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছেন। একই সঙ্গে পরিবারের সদস্যদেরকেও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই তাকে দাফনের নির্দেশ দিয়েছেন।

মুক্তিযোদ্ধা সলিমউদ্দিনের বাড়ি আটোয়ারী উপজেলার তড়েয়া ইউনিয়নের কাটালী মীরপাড়া গ্রামে।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) জেলা প্রশাসক বরাবর তিনি এই আবেদন করেন। এছাড়া ওই চিঠির অনুলিপি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীসহ বিভিন্ন দফতরেও দেয়া হয়েছে।

আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি আটোয়ারী উপজেলার ১৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী পদে নিয়োগ দেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে তার ছেলে সাহিবুল ইসলাম (২৬) দাড়খোর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই পদে আবেদন করে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু ওই নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা না মেনে নিয়োগ কমিটি সাদেকুল ইসলাম নামের অন্য এক প্রার্থীকে নিয়োগ  দেয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।

পরে এই অনিয়মের অভিযোগে তার ছেলে নিয়োগ কমিটির সভাপতি আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে সহকারী জজ আদালতে (আটোয়ারী) মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। তবে মামলার কারণে তারা নানামুখী চাপে পড়েছেন বলে আবেদনে দাবি করা হয়েছে।

আবেদনে মুক্তিযোদ্ধা কোটা না মানায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে দাবি করে জীবদ্দশায় সন্তানের বেকারত্ব দূর না হলে এবং নিয়োগে অনিয়মের বিচার না হলে মৃত্যুর পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান না দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিমউদ্দিন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের পাশেই আমার বাড়ি। বিদ্যালয়ে আমি জমি দিয়েছি। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ছাড়া আমার অন্য কোনো আয়ের পথ নেই। কষ্ট করে কোনোমতে সংসার চালাই। তাই ছেলের চাকরির জন্য ঘুষ দিতে পারিনি বলে ওরা আমার ছেলেকে চাকরি দিল না। তাকে বেকার হয়েই থাকতে হচ্ছে। যারা টাকা দিয়েছে তাদের চাকরি হয়েছে। এমন অনিয়ম যদি দেখতেই হবে, তবে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম কেন? এসব ঘটনার বিচার না হলে মৃত্যুর পর আমি রাষ্ট্রীয় সম্মান চাই না।’

আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সৈয়দ মাহমুদ হাসান বলেন, ‘আমি এখনো এ রকম কোনো আবেদন পাইনি। অভিযোগের কাগজ পেলে আমরা খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘নিয়োগপ্রক্রিয়াটি ২০১৭ সালে সম্পন্ন হয়েছে। তবু আমরা তার অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে খতিয়ে দেখছি। এছাড়া তার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না নেয়ার আবেদনের বিষয়টি নিয়ে তার সাথে আমরা দ্রুত কথা বলে সমাধান করব। আমরা চাই একজন মুক্তিযোদ্ধা তার প্রাপ্য সম্মান যথাযথভাবে যেন পান।’

এনআই

আরও পড়ুন