• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ৩, ২০১৯, ০৩:৫৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ৩, ২০১৯, ০৩:৫৭ পিএম

জুড়ীর টিলায় অমূল্য রত্ম (২)

কমলায় পোকার আক্রমণ, উদ্বিগ্ন চাষিরা

কমলায় পোকার আক্রমণ, উদ্বিগ্ন চাষিরা

মৌলভীবাজার জেলার বাগানগুলোতে মৌসুমের শুরুতে কমলায় গান্ধী পোকা, ফলের মাছি পোকাসহ বিভিন্ন পোকার আক্রমণে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে কমলা। কিছু গাছে দেখা দিয়েছে আগামরা রোগের প্রাদুর্ভাব। এতে গাছ শুকিয়ে মরে যাওয়ায় বাগান মালিক ও চাষিরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। অনেক চাষি পোকার আক্রমণের কারণে আগেই কমলা বিক্রি করে দিয়েছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলায় কমলা বাগানের সংখ্যা ১৪৬টি। জেলাজুড়ে ১৭৮ হেক্টর জমিতে কমলার চাষ হয়েছে। তার মধ্যে জুড়ী উপজেলায় ৯২ হেক্টর, বড়লেখায় ৬০ হেক্টর, কুলাউড়ায় ২০ হেক্টর জমি সহ জেলার অন্যান্য উপজেলায় এই কমলার চাষ। এর মধ্যে কমলা চাষি রয়েছেন ১৪৬ জন। 

জুড়ি উপজেলার গোয়ালবাড়ি ইউনিয়নের রূপাছড়া, লালছড়া, হায়াছড়া, শুকনাছড়াসহ পাহাড়ি এলাকার কমলা চাষিরা জানান, গান্ধী পোকা কমলার ওপর দিয়ে হেঁটে গেলে সেই কমলা ঝরে পড়ে। এ কারণে চাষিরা আগাম বিক্রি করে ফেলছেন। কমলা বড় হওয়ার আর সময় পায় না। এমনকি মিষ্টি হতে পারে না। যার কারণে কম দামে বিক্রি করতে হয়।

দুমা বাড়ি এলাকার কমলা চাষি খোরশেদ আলম জানান, পোকার আক্রমণের কারণে আমি মৌসুমের শুরুতেই বাগানের কমলা বিক্রি করে দিয়েছি। দেরি করলে কমলা পাওয়া যাবে না। পোকার আক্রমণে ঝরে পড়বে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, কমলা গাছে কার্টাপ গ্রুপের কীটনাশক ব্যবহার করলে গান্ধী পোকা, ফলের মাছি পোকা দমন করা সম্ভব। লেবু জাতীয় গাছে ফেনা রোগ, গ্রিনিং, ফোম ডিসিস আগা মরা (ডাই বেক) ও গামোসিস (গাছ থেকে আঠার মতো কষ ঝরা) ধরনের রোগ দমনে কপার অক্সিক্লোরাইড ও হেক্সাকোনাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক ১৫ দিন পর পর তিন বার স্প্রে করলে এই জাতীয় রোগ দমন করা যায়।

কমলার উৎপাদন নিশ্চিত করতে বর্ষার পরপর গাছের ডাল ছাঁটাই এবং খরার সময় সেচ দেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে- পৌষ থেকে ফাল্গুন মাসে সেচ দিলে রোগ ও পোকার আক্রমণ কম হয়।
এজন্য জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় পানির পাম্প বসিয়ে ডিপ সেচের মাধ্যমে এ সমস্যা দূর করার জন্য একটি প্রকল্পের কথা হয়েছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এখানকার চাষিরা উপকৃত হবে বলে জানায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, ‘নিয়মিত সেচ, সার ও কীটনাশক প্রয়োগের অভাবে গাছ থেকে কমলা ঝরে পড়ে। গাছে যে পরিমাণ কমলা আসে সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় গাছ তা ধরে রাখতে পারে না। নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করলে গান্ধী পোকা দমন সম্ভব। এ ছাড়া লেবু জাতীয় গাছে আগামরা রোগ হয়ে থাকে। এটাতেও ছত্রাকনাশক স্প্রে করলে সুফল পাওয়া যায়। আমরা চাষিদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণসহ পরামর্শ দিয়ে থাকি।

কেএসটি

আরও পড়ুন