• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ৬, ২০১৯, ০১:১২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ৬, ২০১৯, ০১:১২ পিএম

কুবিতে ভর্তিচ্ছুদের ভোগান্তি, ব্যবস্থার আশ্বাস প্রশাসনের

কুবিতে ভর্তিচ্ছুদের ভোগান্তি, ব্যবস্থার আশ্বাস প্রশাসনের

দুদিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধ। ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে ভোগান্তির শিকার হতে হয় পরীক্ষার্থীদের। যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া, খাবারের উচ্চমূল্য, আবাসিক হোটেলগুলোতে থাকতে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের নানাবিধ হয়রানি, ছিনতাইয়ের মুখে পড়াসহ বিভিন্ন ঝামেলা পোহাতে হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এসব ভোগান্তি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয় প্রশাসন। 

আগামী ৮ ও ৯ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।  যেখানে লড়বেন প্রায় ৬৮ হাজার ভর্তিচ্ছু। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সবার পরীক্ষা নেয়ার জায়গা না থাকায় পরীক্ষার্থীদের একটি বড় অংশকে কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। অভিযোগ আছে, শহরের বিভিন্ন কেন্দ্রে যাতায়াতের সময় পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়।

অন্যদিকে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ফলে বাস কিংবা ট্রেন থেকে নেমে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে ব্যবহার করতে হয় স্থানীয় সিএনজি, অটোরিকশা কিংবা লোকাল মাইক্রোবাসের। কিন্তু, এসবে চড়তে গিয়ে শিক্ষার্থীদের গুণতে হয় দ্বিগুণের অতিরিক্ত ভাড়া। 

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসে যেখানে সাধারণ সময়ে ভাড়া ১০ টাকা সেখানে ৫০ টাকা দিতে হয়েছিল। নতুনদের অপরিচিত জায়গায় আসার সুযোগে স্থানীয় যানবাহন চালকেরা ভর্তি পরীক্ষার সময় অনেক বাড়তি ভাড়া নেন’।

এছাড়াও পরীক্ষার্থীদের থেকে স্থানীয় খাবার হোটেলগুলোতে খাবারের অতিরিক্ত দাম আদায়ের অভিযোগও রয়েছে।  বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য এক শিক্ষার্থী শাহ জাহান মনির জানান, ‘কক্সবাজার থেকে আমি পরীক্ষা দিতে এসেছিলাম তাই বাইরের হোটেলে খেতে হয়েছিল। খুবই নিম্নমানের খাবার খাইয়ে আমার থেকে অনেকটা জোরপূর্বক ১৫০ টাকা রাখা হয়েছিল।’ 

ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে প্রায় লাখ খানেক মানুষের আগমন ঘটে কুমিল্লায়। ফলে থাকার জন্য অনেকেই দ্বারস্থ হয়ে থাকেন সেখানকার আবাসিক হোটেলগুলোতে। সেখানেও বাড়তি টাকা আদায় এবং নানাবিধ হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি এতো বেশি মানুষের আগমন ঘটায় অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে যানজটে পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছুতে ভোগান্তিতে পড়ে পরীক্ষার্থীরা।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে সিএনজি ও অটো চালকরা যেন ভাড়া না বাড়ায় এ নিয়ে আমরা মিটিং করব। যদি কেউ বাড়তি ভাড়া আদায় করে বা কোনো পরীক্ষার্থী ভোগান্তির শিকার হয়, তাহলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রিক কুমিল্লা জেলা পুলিশের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) বলেন, ‘আমরা তিনটি বিষয়ের উপর নজর দিয়েছি।  ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের বিশেষ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রন টিম থাকবে। বাড়তি ভাড়ার ব্যাপারটি নিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয় এবং স্থানীয় মোটরযান চালক নেতাদের সাথে আমরা কথা বলবো। কেউ যেন বেশি ভাড়া না নেয় সে ব্যাপারে আমাদের তরফ থেকে কঠোর নির্দেশনা থাকবে। পাশাপাশি আমাদের টহল টিম থাকবে যারা বাড়তি ভাড়া আদায় বা খাবারের উচ্চমূল্য নেয়ার ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে’। 

বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী জানান, ‘ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে বরাবরের মতো এবারও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। আমাদের নিজস্ব বিএনসিসি এবং রোভার স্কাউট সব কেন্দ্র ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিযুক্ত থাকবে।  প্রক্টরিয়াল টিম সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে। কুমিল্লা জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন সহ অন্য সব ইউনিটের সাথেই আমরা নিয়মিত মিটিং করছি। আশা করছি ভোগান্তি ছাড়াই পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পারবে।’ 

কেএসটি

আরও পড়ুন