• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯, ০৫:২৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯, ০৫:২৫ পিএম

সীমান্তে দুই বাংলার মিলন মেলা

সীমান্তে দুই বাংলার মিলন মেলা

ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার চাপাসা ও রাণীশংকৈল উপজেলার কোচল সীমান্তের মাঝামাঝি কুলিক নদীর তীরে পাথরকালী মেলা উপলক্ষে লাখো মানুষের সমাগমে মিলন মেলায় পরিণত হয় সীমান্ত এলাকা।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় বাংলাদেশ ও ভারতীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কিছু সময় কথা বলার সুযোগ করে দেয় ভারতীয় বিএসএফ ও বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। দুই দেশে বসবাসরত আত্মীয়-স্বজনরা নিকটজনদের একনজর চোখের দেখা দেখার জন্য ছুটে আসেন পাথরকালী মেলায়। নাড়ির টানে দুই বাংলা থেকে বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে আসেন লাখো মানুষ।

অনেক খোজাঁখুঁজির পর নিজের আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে একটু বুকে জড়িয়ে ধরার ইচ্ছা পোষণ করলেও কাঁটা তারের বেড়ার কারণে উপস্থিত নারী পুরুষদের সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। চোখের পানি ফেলে নিকটজনকে কাছে পাওয়ার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন অনেকে। দীর্ঘদিন দূরে থাকা, দেখা না হওয়ায় অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। আবার প্রিয়জনের দেখা না পেয়ে অনেককে চোখের পানি ফেলে বাড়ি ফিরে যেতে হয়।

দেখা সাক্ষাতের পাশাপাশি আত্মীয় পরিজনরা পরস্পরকে ফলমূল, বাড়িতে রান্না করা খাবার, ইলিশ মাছ, শাড়ি লুঙ্গি, কম্বল ইত্যাদি বিনিময় করে কাঁটাতারের উপর দিয়ে ছুঁড়ে ছুঁড়ে। সেই সাথে কাঁটাতারের বেড়ার উভয় পাশে বসে ২ দেশের ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন পসরা।

দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা রওশন এলাহী ভারতে বসবাসকারী চাচার সঙ্গে দেখা করতে ছুটে আসেন। তিনি জানান, আমার চাচা দীর্ঘ ১০ বছর ধরে ভারতে আছেন। তার সঙ্গে আমাদের দেখা সাক্ষাৎ হয় না। কথা হয় মোবাইলে। আজ সরাসরি দেখা করার জন্য এসেছি।

বগুড়ার গাবতলী থেকে রানু পাল। তার বোন ভগ্নিপতিসহ সকলে ভারতে থাকেন। তাদের সঙ্গে দেখা নেই ১২ বছর। তিনি জানান, অনেকদিন পরেই আজ ভাগনি ও তার পরিবারের সাথে দেখা হয়েছে। তারা আমাদের আপেল কমলা  উপহার দিয়েছে। আমরা তাদের শাড়ি কাপড় উপহার দিয়েছি। এখন খুব ভাল লাগছে।

রানীশংকৈল উপজেলার উত্তর লেহেম্বা থেকে আসেন নগেন রায় ও তার স্ত্রী। তার মেয়ে ভারতের নকশাল বাড়িতে থাকে। দেখা নেই দীর্ঘদিন। তিনি জানান, মেয়ে জামাতার সঙ্গে দেখা করতে এসেছি। নাতি নাতনীদের দেখে ভাল লাগল।

মেলা কমিটির সভাপতি নগেন কুমার পাল জানান, এ এলাকাটি এক সময় ছিল ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অন্তর্ভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর এদেশে বসবাসরত বাসিন্দাদের আত্মীয় স্বজন দুদেশে ছড়িয়ে পড়ে। সেই থেকে নিয়মিত দেখা সাক্ষাৎ হয় না। পাথরকালী মেলায় বিজিবি-বিএসএফ তাঁর কাটার কাছে যাবার সুযোগ করে দেয় বলে বছরে একদিন দেখা হয় দুদেশে বসবাসকারী নিকটজনের।

কেএসটি

আরও পড়ুন