• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২০, ০৯:৩১ এএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১৫, ২০২০, ০৯:৩১ এএম

খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মান কাজ

তিন বছরের প্রকল্প শেষ হয়নি  ১০ বছরেও

তিন বছরের প্রকল্প শেষ হয়নি  ১০ বছরেও

মোংলা বন্দর থেকে সড়ক পথে যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষে খুলনা পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প নেয়া হয় ২০১০ সালে। শুরুতে তিন বছরের মধ্যে ওই প্রকল্পের সকল কাজ শেষ করার জন্য সময় নির্ধারন করা হয়। কিন্তু  চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত তিন দফা সময় বাড়িয়ে ১০ বছরেও শেষ হয়নি চলমান রেলপথ নির্মান কাজটি।মোংলা বন্দর কতৃপক্ষের আওতাধিন ৯০ একর জমির উপর দিয়ে রেল পথ নির্মান নিয়ে বিরোধ রয়েছে। 


এর ফলে কবে শেষ হবে ওই প্রকল্পের কাজ এনিয়ে দেখা দিয়েছে  অনিশ্চিয়তা।


সম্প্রতি মোংলা-খুলনা রেল পথ নির্মান কাজের অগ্রগতি নিয়ে একটি পর্যালোচনা করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি)। তাতে দেখাযায়, ১০ বছরে ওই প্রকল্পের ৬৯ ভাগ কাজ সম্পর্ণ হয়েছে। 

জানা যায়, রেল পথ নির্মান কাজের শুরুতে মোংলা বন্দরের মধ্যে কিছু রেল স্ট্যাক করার কারণে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইরকনের মধ্যে সংকট তৈরি হয়। এতে আটকে যায় প্রকল্প কাজের অগ্রগতি। প্রকল্পটি তিন বছরের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। 


তবে গত ১০ বছরের বেশি সময় পার হলেও এ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৯ শতাংশ। এর মধ্যে প্রকল্পের মূল কাজ রেলপথ নির্মাণে অগ্রগতি হয়েছে মাত্র ৫৪ শতাংশ। এরই মধ্যে তিন দফা বাড়ানো হয়েছে কাজের ব্যয় ও মেয়াদ। এর মাধ্যমে ব্যয় বেড়েছে প্রায় ১২১ শতাংশ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল এর মোংলা অফিসের দায়িত্ব প্রাপ্ত এক কর্মকর্তা জানান,নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতিসহ অন্যান্য জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় আবারো ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে।

এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন  বলেন, জমির জটিলতা এ প্রকল্পের কাজের ক্ষেত্রে নানা সময়ে বিপত্তি তৈরি করেছে। নতুন করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়গুলো নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। নিয়ম অনুসারে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন জমিগুলো রেলপথ মন্ত্রণালয়ে দ্রুত হস্তান্তর করা হলেই আমরা কাজ সম্পন্ন করতে পারব। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বেশ কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, চলমান খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণ কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। প্রকল্পটি এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। জমিসংক্রান্ত বিষয়গুলো সংশ্লিষ্টরা গুরুত্ব সহকারে দেখছেন। ফলে জমি নিয়ে বিরোধ দুর হয়ে যাবে।

জানা গেছে, খুলনা-মোংলা বন্দর রেলপথ নির্মাণে প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৭২১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণ ছিল ১ হাজার ২২ কোটি ৩১ লাখ টাকা ও সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৫১৯ কোটি ৮ লাখ টাকা সরবরাহের কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবায়নে বিলম্ব ও বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন শেষে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যায়। এতে প্রকল্প ব্যয় দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। 


এক্ষেত্রে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ হাজার ৪৩০ কোটি ২৬ লাখ টাকা ও ভারতীয় ঋণ পাওয়া যাবে ২ হাজার ৩৭১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। ফলে প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে গেছে ২ হাজার ৮০ কোটি ২২ লাখ টাকা। পাইলিংয়ে জটিলতাও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাব রয়েছে। আটটি স্টেশনের মধ্যে দুটি স্টেশন বিল্ডিংয়ের (আরাংঘাট ও মোহাম্মদপুর নগর) ছাদ করা হয়েছে। অন্যান্য রেল স্টেশনের পাইলিংয়ের কাজ চলছে। তবে ট্র্যাক নির্মাণ ও সিগন্যালিংয়ের কাজ এখনো শুরু হয়নি।


এম

আরও পড়ুন