যুগ্ম সচিব থেকে পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত সচিব হলেন বরিশাল বাবুগঞ্জ-মুলাদী অঞ্চলের কৃতি সন্তান, সমাজের অবহেলিত, অন্নবস্ত্রহীন মানুষের অভিভাবক ড. হারুন অর রশিদ বিশ্বাস।
শনিবার (২৬ অক্টোবর)এ আদেশ জারি করা হয়েছে। এর আগে তিনি বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ড. হারুন অর রশিদ বিশ্বাস ১৯৯৪ সালের ২৫ এপ্রিল বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন।
তিনি ১৯৬৫ সালের ১১ জুলাই বরিশাল জেলা বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ভূতেরদিয়া গ্রামে মরহুম আউয়াল বিশ্বাস ও শামসুন্নাহার দম্পতির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা জীবনে তিনি তার নিজ গ্রামে ফরিদগঞ্জ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা শেষ করে বাবুগঞ্জ সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৯ সালে এসএসসি ও ১৯৮১ সালে বরিশাল বিএম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৯০ সালে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। চাকুরী জীবনে শুরুতে ড. হারুন অর রশিদ বিশ্বাস ঢাকা ও ময়মনসিংহ জেলায় ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পর্যায়ক্রমে তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক ও দুদক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালক করেন।
এছাড়া ফেনী জেলা রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর, বাগেরহাট জেলার মংলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছিলেন, পরে তিনি “ধান ও সবজিতে আর্সেনিক প্রভাব” বিষয়ে ২০০৮ সালে পি,এইচ,ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের একান্ত সচিব হিসেবে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন।
সদালপী ও বিনয়ী এই মানুষটি নিজ দায়িত্বের পাশাপশি নিজ জন্মভূমির মানুষের প্রতি মর্মত্ববোধ থেকে প্রতিনিয়ত মানব সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন। সাধারণ হতদরিদ্র মানুষের কল্যাণে তিনি সর্বদাই অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সুশিক্ষায় অপরাধমুক্ত, মাদকমুক্ত উন্নয়নশীল একটি সমাজ গঠন তাঁর অঙ্গিকার। মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনে তিনি নিয়মিত সহযোগিতা করে আসছেন। সমাজকে সহযোগিতা করতে সুশিক্ষার আলো জ্বালাতে তিনি নিজস্ব চেতনায় তাঁর নিজ এলাকায় তাদের প্রতিষ্ঠিত ভাঙন কবলিত ফরিদগঞ্জ বহুমূখী ফাজিল মাদ্রাসাকে স্থানান্তর করে নতুন রুমে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এবং নদী ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থার মাধ্যমে ভাঙন থেকে রক্ষা করেছেন কেদারপুর খেয়াঘাট ও মাদ্রাসা ও মসজিদসহ আবাদী জমি।
সমাজের সুবিধা বঞ্চিত এতিম শিশুদের কথা চিন্তা করে প্রতিষ্ঠা করেছেন মরহুম আব্দুল আউয়াল বিশ্বাস এতিম খানা। বাবুগঞ্জ মুলাদীর অসহায় মানুষের সেবার মহান ব্রত নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছন আউয়াল-শামসুর রহমান ওয়েলফেয়ার ট্রাষ্ট যার মাধ্যমে বাবুগঞ্জ-মুলাদীর কয়েক হাজার গরীব, দুঃখী ও মেহনতী মানুষের খাদ্য বস্ত্রের ব্যবস্থা হয়েছে। চলমান বৈশ্বিক মহামারি (কোভিড-১৯) করোনভাইরাস মোকাবেলায় বাবুগঞ্জ-মুলাদীর দুই সহস্রাধিক অসহায় কর্মহীন পরিবারের মাঝে নিজ অর্থে খাদ্য সহায়তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পিপিই প্রদান করেছেন। চাকুরী জীবনে সততা ও আত্মবিশ্বাস তাকে একটি সঠিক এবং কাঙ্খিত অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছে। তিনি কৃতজ্ঞ সৃষ্টিকর্তা, পিতামাতা ও সমাজ ব্যবস্থাপনার প্রতি।
পদোন্নতির প্রসঙ্গ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি তার ভালো কাজের সুফল, তার এ পদোন্নতি সরকার ও দেশের কল্যাণে কাজ করার পোষণা হিসেবে কাজ করবেন বলে মনে করেন।
জাগরণ/এমএইচ