• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০১৯, ০৮:২২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ৮, ২০১৯, ০৬:৪২ পিএম

অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা

অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা
রোহিঙ্গা ক্যাস্প- ফাইল ছবি

 

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের একটি অংশ অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। তারা চুরি ছিনতাই ডাকাতির মতো অপরাধ করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, তারা আদমপাচার, জাল টাকার ব্যবসা ও ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসাও চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইয়াবা পাচার ও পাসপোর্ট জালিয়াতি করে বিদেশ যাওয়ার মতো কাজ করতে পিছপা হচ্ছে না রোহিঙ্গারা। জাল জালিয়াতির মাধ্যমে জাল টাকা ও ডলারের ব্যবসাতেও জড়িয়ে পড়ছে রোহিঙ্গারা। এ সকল বিষয়ে তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার পরই তদন্তে নেমেছে দুদক।   

দুদক কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গারা কোন মাধ্যমে ও কী প্রক্রিয়ায় জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে যাচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়ার সাথে কারা জড়িত এবার সে তথ্য বের করতে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

তিনি বলেন, মূলত ১৩ রোহিঙ্গার নাম ও পরিচয়কে সামনে রেখে অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেছে সংস্থাটি। এর মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অনুসন্ধান কর্মকর্তা। দুদক উপ-পরিচালক সৈয়দ আহমেদকে দেওয়া হয়েছে অনুসন্ধানের দায়িত্ব। 
 
দুদকের পরিচালক মুনির হোসেন বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন মিডিয়া ও প্রাপ্ত অভিযোগ থেকে আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি।বিষয়টি অনেকটা আতঙ্কেরও বটে। কিভাবে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জাতীয় পরিচায়পত্র ও বাংলাদেশি পাসপোর্টের মালিক হলো সেটাই বড় প্রশ্ন। এতে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশিদের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে।  

উল্লেখ্য, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি অংশ পালিয়ে বাংলাদেশের জাল জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশ গমন করছে, এমন অভিযোগ উঠেছে বেশ কিছুদিন ধরে।  বিশেষ করে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী ১৩ রোহিঙ্গাকে এই দেশে ফেরত পাঠানোর পর বিষয়টি নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে। ফেরত ১৩ জন হলেন- ওমর ফারুক, মোসালিম, মো আরিফ, আবদুল মজিদ, খাজা মাঈনুদ্দীন, হাসিবুর রহমান, নাজিম বিল্লাহ, জামাল হোসেন, শামসুল আলম, আমানউল্লাহ, বকুল, মিজানুর রহমান ও মোমিয়া।  তারা নিজেদের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, কুমিল্লা, বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা, ঝিনাইদহ, মাদারীপুরের বাসিন্দা হিসেবে ঘোষণা দিয়ে পাসপোর্ট করেছে।  

তারা প্রত্যেকেই ওমরাহ বা হজের জন্য তিন মাসের ভিসা নিয়েছিলেন। নির্দিষ্ট সময় পরও দেশে ফিরে না যাওয়ায় সৌদি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন এবং জেদ্দার সুমাইসি কারাগারে ছিলেন।

মুনীর বলেন, অভিযোগ অনুসন্ধানে এরই মধ্যে পাসপোর্ট অধিদফতর ও নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে রোহিঙ্গাদের নাম উল্লেখ করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। এর সঙ্গে যাদেরই সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

এ বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, আমরা এ বিষয়ে ইতোমধ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। কথা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট ইস্যু করলো কারা? এটা খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে।

জানা যায়, গত ৭ জানুয়ারি সৌদি আরবের জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ পাঠানো হয় ১৩ রোহিঙ্গাকে।  সেদিন রাত ২টার দিকে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০২ ফ্লাইটে তারা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। পরে তাদেরকে ইমিগ্রেশন পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়।  এ সময় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) সোহেল রানা সাংবাদিকদের জানান, সৌদি আরব থেকে ফিরে আসা ওই ১৩ ব্যক্তি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তারা মিয়ানমারের নাগরিক। বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে সৌদি আরব গিয়েছিল। অবৈধভাবে পাসপোর্ট করা ও আইন না মানার কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এইচএম/টিএফ