• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২০, ০৮:০৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১০, ২০২০, ০৮:১১ পিএম

জাহিদ স্যারের পাঠশালা

থমকে গেছে পথ তবু চলছে জ্ঞানের রথ

থমকে গেছে পথ তবু চলছে জ্ঞানের রথ
ইউটিউব ভিডিও ক্লিপে জাহিদ স্যারের পাঠশালা

কোনো কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপন বা অনলাইনে শিক্ষা পুঁজির নতুন বাণিজ্যিক পসরার চিত্র নয় এটি। কথায় আছে 'ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে'। আর এই লোক কথার সত্যতাই যেন প্রমাণ করছেন তিনি। তিনি একজন শিক্ষক।
করোনা সংক্রমণের ফলে যখন বিপর্যস্ত বিশ্ব, তখন সেই আগ্রাসনে সৃষ্ট মৃত্যুপ্রলয় ঠেকাতে, পৃথিবীর বহু দেশের মত বাংলাদেশেও সাধারণ ছুটির আদলে চলছে লকডাউন। এর ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীদের কোলাহল মুখরিত বিদ্যাঙ্গণগুলো। এমন দীর্ঘ ছুটির মাঝে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার চর্চা ঢিলেঢালা চলবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সংকট কেটে গেলে অন্যরা যেমন তেমন পরীক্ষার হলে কিন্তু আবারও সংকটেই পরবেন তারা। 
কার্যত এমন বাস্তবতা অনুধাবনেই বাংলা ব্যাকরণ ও মধুসূদনের মেঘনাদ বধের মত উচ্চমার্গীয় সাহিত্যের সাবলীল পাঠ নিয়ে হঠাৎই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর ইউটিউবে হাজির মধ্যবয়সী এই মানুষটি। নাম জাহিদুর রহমান। এই সংকট আর উদ্বেগের মাঝেও যিনি ভুলে জাননি, তিনি একজন শিক্ষক, একজন সভ্য মানুষ গড়ার কারিগর। প্রকৃতি যখন ধ্বংসে মেতেছে তিনি তা পায়ে ঠেলে দক্ষ কারিগরের মত সৃজনশীল শিক্ষা বিলিতে মত্ত।
জনাব জাহিদুর রহমানের দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল এন্ড কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। বোর্ড পরীক্ষায় সুদীর্ঘ সময় ধরে যে কাণ্ডারীদের মন্ত্র সাধনে দাপুটে সাফল্য এই প্রতিষ্ঠানটির; তাদেরই একজন এই জাহিদুর রহমান। সদা চঞ্চল, প্রাণবন্ত ও শিক্ষার্থীদের মাঝে 'চির তারুণ' হিসেবে সুপরিচিত এই মানুষটির রয়েছে দীর্ঘ শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা।
বিগত দু'তিন দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জাহিদুর রহমান স্যারের কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ বেশ সাড়া সৃষ্টি করে। ক্লিপ থেকে জানা যায়, শুধু মাত্র শিক্ষার্থীদের পাঠ কার্যক্রম সচল রাখতেই তার এই ঐকান্তিক প্রয়াস। আর অবসর বলেই সুযোগটিকে তিনি নিয়েছেন সিলেবাসের জটিল সমস্যাগুলোর সমাধানে। যাতে চাপমুক্তভাবে শিক্ষার্থীরা সেগুলো এই সুযোগে আত্মস্থ করে নিতে পারে।
এদিকে তার এমন উদ্যোগে বেজায় খুশি অভিভাকদের অনেকেই। পাশপাশি তথ্য প্রযুক্তির এই সময়োপযোগী ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের টেবিলে প্রয়োজনীয় পাঠলিপি ঠিক পৌঁছে দিচ্ছেন জাহিদ স্যার। পরিস্থিতি যাই হোক, এই সংকট, শঙ্কা, আতঙ্ক- কোনো কিছুই তাকে ভুলিয়ে দিতে পারেনি তিনি শিক্ষক। আগুয়ান বাংলাদেশের আগামী প্রজন্মের প্রযত্নে এমন জাহিদ স্যারেরা পাথেয় হয়ে থাকুন চিরকাল।