• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৮, ২০২০, ০২:৩৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৮, ২০২০, ০২:৫২ পিএম

কোভিড-১৯

৭২তম দিনে শনাক্ত ও মৃত্যুর সব রেকর্ড ভঙ্গ

৭২তম দিনে শনাক্ত ও মৃত্যুর সব রেকর্ড ভঙ্গ
অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা

আক্রান্তের ৭২তম দিন

........

৭২তম দিনে এসে একদিনে সর্বাধিক শনাক্ত ও মৃত্যু দেখলো বাংলাদেশ।

গত ২৪ ঘণ্টায় (রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) দেশে নতুন করে ১ হাজার ৬০২ জনের দেহে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট শনাক্ত হলেন ২৩ হাজার ৮৮০ জন। 

গত ২৪ ঘন্টায় মারা গেছেন আরও ২১ জন। মৃতদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ এবং ৪ জন নারী। জেলাভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকার ১২ জন, চট্টগ্রামের ৭ জন, রাজশাহীর ১ জন এবং সিলেটের আছেন ১ জন। এ নিয়ে মোট প্রাণহানি হলো ৩৪৯ জনের।  শনাক্ত অনুযায়ী মারা গেছেন ১.৪৬ জন।গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২১২ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৪ হাজার ৫৮৫ জন।

সোমবার (১৮ মে) দুপুরে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

মোট ৪২টি ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করা হয়ে থাকে যার মধ্যে ঢাকার ২১টি এবং ঢাকার বাইরে ২১টি। গত ২৪ ঘন্টায় মোট ৯ হাজার ৯০১ টি নমুনা সংগ্রহ হয়েছে। এর মধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে ৯ হাজার ৭৮৮টি। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ লাখ ৮৫ হাজার ১৯৬ টি।

গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনের নেয়া হয়েছে ২৩১ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনের আছেন ৩৩৩ জন। এছাড়া আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৯৬ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন ১ হাজার ৭০০ জন।

যারা কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন তারা সম্পূর্ণ সুস্থ এবং স্বাভাবিক। তারা স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারবেন। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শ থাকবে, তারা যেন এখনও নিজ ঘরে থাকেন।

শনিবার (১৬ মে) শনাক্ত হয় ১২৭৩ ও মারা যায় ১৪ জন। 

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দিনে ১০ হাজার নমুনা পরীক্ষার টার্গেট করা হলেও তা এখনও বাস্তবায়ন করা যায়নি।

কর্মকর্তারা বলেছেন, নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে লোকবলের সমস্যার কারণে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিলম্ব হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলেছেন, বাংলাদেশে এই পরীক্ষা শুরুর পর দুই মাসেও এর সংখ্যা বাড়াতে না পারলে সংক্রমণের সঠিক পরিস্থিতি বোঝা যাবে না।

গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের পরীক্ষা শুরু করে। ৮ মার্চ দেশে প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। ১৮ মার্চ প্রথম কোনও করোনা রোগী মারা যায়।

দেশে গত ২৮ এপ্রিল করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৫৪৯ জন। এরপর ২৯ এপ্রিল ৬৪১ জন, ৩০ এপ্রিল ৫৬৪ জন, ১ মে ৫৭১ জন, ২ মে ৫৫২ জন, ৩ মে ৬৬৫ জন, ৪ মে ৬৮৮, ৫ মে ৭৮৬ জন, ৬ মে ৭৯০ জন, ৭ মে ৭০৬ জন, ৮ মে ৭০৯ জন এবং ৯ মে ৬৩৬ জন, ১০ মে ৮৮৭ জন, ১১ মে ১০৩৪ জন, ১২ মে ৯৬৯, ১৩ মে সর্বাধিক ১ হাজার ১৬২ জন, ১৪ মে ১০৪১, ১৫ মে ১২০২, ১৬ মে ৯৩০ ও ১৭ মে ১২৭৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়।

বিশ্বে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৩ লাখ ১৬ হাজার ৬৬০ জন। ছোঁয়াচে এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে ৪৮ লাখ ১ হাজার ৫৩২ জন। প্রথম ১ হাজার মৃত্যুতে সময় লেগেছিল একমাস। পরবর্তী তিন মাসে সেই সংখ্যা তিন লাখ। এছাড়া মোট মৃত্যুর ৮০ ভাগের বেশি ইউরোপ-আমেরিকায়।

টানা লকডাউন আর নানা সতর্কতার পরও ঠেকানো যাচ্ছে না প্রাণহানি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার ভয়াবহতা রুখতে এই মুহূর্তে শিথিলতার কোনও সুযোগ নেই, বাড়াতে হবে প্রস্তুতি।

অদৃশ্য এক ভাইরাসের নজিরবিহীন তাণ্ডবের মধ্যে সবারই প্রশ্ন, আর কত প্রাণ নিয়ে থামবে করোনা। যার জবাবে লম্বা সময় ধরে লড়াইয়ের পরামর্শ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।

সংস্থাটির প্রধান ড. হ্যান্স ক্লুগ এর মতে, এখন আরও প্রস্তুতি নিতে হবে।

তিনি বলেন, করোনা নিঃসন্দেহে একটি শক্তিধর ভাইরাস। দ্রুত এটি বিদায় নেবে সে সম্ভাবনাও নেই। এ সঙ্কট মোকাবেলায় তাই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।

গোটা বিশ্বে, প্রাণঘাতি ভাইরাসটির প্রকোপ থেকে সুস্থ হয়েছেন ১৮ লাখ ৫৮ হাজার ১০৬ জন।

এসএমএম

আরও পড়ুন