• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০১৮, ০১:৩৯ পিএম

মঙ্গল বার্তা দিতে অবতীর্ণ হলো অবতার ইনসাইট

মঙ্গল বার্তা দিতে অবতীর্ণ হলো অবতার ইনসাইট
ছবি: রোবট ‘ইনসাইট’ (সংগৃহিত)

 

আধুনিক বিজ্ঞানের মহাকাশ গবেষণা প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মচিত হলো। অবশেষে সকল উদ্বেগ আর উৎকন্ঠা মুছে মঙ্গলগ্রহে সফলভাবে অবতরণ করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মনুষ্যবিহীন ল্যান্ডারযান (ধীরগতির অবতরণ ক্ষমতাসম্পন্ন) রোবট ‘ইনসাইট’। বাংলাদেশ সময় সোমবার (২৬ নভেম্বর) রাত ১টা ৫৩ মিনিটে মঙ্গলের বুকে সফলভাবে অবতরণ করে 'ইনসাইট'।

অক্ষত অবস্থায় মঙ্গলে অবতরণের ৬ মিনিট পরই সেখান থেকে পৃথিবীতে ছবি পাঠানো শুরু করে ইনসাইট। তার প্রেরিত ১ম ছবিটি পৃথিবীতে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই উল্লাসে ফেটে পড়ে নাসার জেট প্রোপালশান ল্যাবরেটরি। দীর্ঘ ৭ বছরের কঠোর পরিশ্রমের ক্লান্তি ভুলানো প্রাপ্তি এ দৃশ্যমান সাফল্য। নাসার ইতিহাসে মঙ্গলে প্রেরিত ৮ম যান হিসেবে সফল অবতরণকারী রোবট-অবতার এই 'ইনসাইট'।

তবে রোবটযান ইনসাইটের একটি জটিল অংশের কাজ এখনো বাকি আছে বলে সংস্থার সূত্রে জানা যায়। বাংলাদেশ সময় আজ মঙ্গলবার(২৭ নভেম্বর) দুপুরের দিকে ইনসাইটের সাথে সংযুক্ত (সোলার অ্যারে) বিস্তৃত সোলার প্যানেলগুলো সৌরশক্তির মাধ্যমে নিজেকে পুনঃশক্তি প্রাপ্ত (রিচার্জ) করার জন্য স্বয়ংক্রিয় ভাবে ঢাকনা খুলে বেরিয়ে আসার কথা। এই জটিল কাজটি ঠিকঠাক সম্পন্ন হল কিনা, তা পর্যবেক্ষনের জন্য রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করতে হবে নাসার বিজ্ঞানীদের । 

মঙ্গল গ্রহে সংঘটিত ভূমিকম্পের ও অভ্যন্তরীণ কাঠামো সম্পর্কে অনুসন্ধানী তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যেই নাসার এবারের মঙ্গল যাত্রায় পাঠানো হয়েছে 'ইনসাইট'কে। অবতরণ করে সেখানকার মাটিতে সিসমোমিটার (কম্পন মাপক যন্ত্র) স্থাপনের পর থেকেই তথ্য পাঠাতে শুরু করেছে ইনসাইট ল্যান্ডার। সিসমোমিটারে যুক্তরাজ্যের তৈরি একটি সেন্সরও সংযুক্ত রয়েছে। এটিই বিজ্ঞানীদের মঙ্গলের ভূমিকম্প ‘মার্সকোয়েক’ সম্বন্ধে তথ্য প্রেরণ করবে। নাসা’র মনুষ্যবিহীন এ যান মঙ্গলের ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১৬ ফুট গভীর পর্যন্ত খনন কাজে সক্ষম। 

২০১৮ সালের ৫ মে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের ভান্দেনবার্গ এএফবি থেকে 'ইনসাইট'-কে মঙ্গল গ্রহের উদ্দেশ্যে উৎক্ষেপন করা হয়। পৃথিবী ত্যাগের আগে ২ দফায় পৃথিবীবাসীর উদ্দেশ্যে 'ইনসাইট' প্রদর্শনের টিকিট উন্মুক্ত করে নাসা। 

নাসার জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরি সূত্র মতে, এই সুযোগে নাসার মঙ্গল টিকিট বা বোর্ডিং পাস সংগ্রহ করেন ২৪ লাখ ২৯ হাজার ৮০৭ জন। বিপুল সংখ্যক এই পৃথিবীবাসীর স্বাক্ষর নিজের সঙ্গে বয়ে মঙ্গলে নিয়ে যায় ইনসাইট ল্যান্ডার। অত্যাধুনিক এই মহাকাশ অনুসন্ধানী যানটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার। 

ইনসাইটের মঙ্গলে অবতরণ সরাসরি দেখার সুযোগ ছিলো গোটা  বিশ্বের। এ ছাড়া নিউইয়র্ক সিটির টাইমস স্কয়ারের নাসদাক স্টক মার্কেট টাওয়ারের বিশাল পর্দায় ইনসাইটের মঙ্গলে অবতরণ সরাসরি সম্প্রচার প্রদর্শিত হয়।

মঙ্গলগ্রহে ইনসাইটের এই সফল যাত্রাকে ২০৩০ সালে মহাকাশে মনুষ্যবাহী এক্সপ্লোরার যান পাঠানোর প্রাথমিক সম্ভাবনার ইতিবাচক প্রস্তুতি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে নাসা।

সাইসে/এস_খান