• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৪, ২০১৯, ০৯:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৪, ২০১৯, ০৯:৩০ পিএম

মোদির গরিবিয়ানার প্রচারে কত খরচ

মোদির গরিবিয়ানার প্রচারে কত খরচ
নরেন্দ্র মোদী - ফাইল ছবি

ভারতের গত লোকসভা নির্বাচনে নিজেকে তুলে ধরেছিলেন চা-ওয়ালা হিসাবে। এবারে তিনি চৌকিদার হিসেবে আসরে হাজির। চৌকিদার মানে জনগণের চৌকিদার। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর মোদী নিজেকে একজন গরিব লোক বলে প্রমাণ করতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখছেন না। যেন এক ফকির ভিক্ষার (ভোট-ভিক্ষা) ঝোলা নিয়ে বেড়িয়ে পড়েছেন।

কতটা গরিব ভারতের প্রধানমন্ত্রী? তিনি নিজেই বলেছেন, বৃদ্ধা মা তার হাত্খরচ দেন। ভোটের বাজারে আসমুদ্র-হিমাচল তার নিজের এবং তাকে নিয়ে বিজেপি দলের প্রচার এক অন্য মাত্রা নিয়েছে সন্দেহ নেই। গত দু’তিন বছরে গরিব দেশের ততোধিক গরিব প্রধানমন্ত্রীর প্রচারে যে একটা মজবুত ব্র্যান্ডিং তৈরি হয়েছে, তাতেও কোনও সন্দেহ নেই।

প্রশ্ন উঠেছে, এই গরিবিয়ানার প্রচারে কত খরচ করছে বিজেপি? ১৩০ কোটির দেশ ভারতবর্ষ। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ গরিব। এই ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে একজন ফিকির বানানো হয়েছে। মোদির বক্তৃতা, তাঁর জবান নিয়ে বায়ওপিক, সবেতেই নজর গরিবিয়ানা।

দেশের সবচেয়ে বড়লোক পার্টি বিজেপি। এবারের ভোট বিজেপি তার সম্পত্তির ৯০ শতাংশই খরচ করছে বিজ্ঞাপন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারে। কোথা থেকে আসছে এই টাকা? কতটা খরচ হচ্ছে বিজ্ঞাপনে? তথ্য বলছে, ২০১৭-১৮ সালের অর্থবছরে বিজেপির রোজগার ছিল ১,০৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯৮৯ কোটি টাকা এসেছে অনুদান হিসাবে। এর মধ্যে আবার ৫৬৭ কোটি খরচ হয়েছে নির্বাচনি প্রচারে।

কোথা থেকে এসেছে এই বিপুল অর্থ? সূত্র জানাচ্ছে, আয়ের ৫০ শতাংশ অর্থ এসেছে নির্বাচনি বন্ড থেকে। ২০১৭-১৮তে নির্বাচনি বন্ড বিক্রি হয়েছে ২১৫ কোটি টাকার। এর মধ্যে বিজেপি পায় ২১০ কোটি টাকা। এই নির্বাচনি বন্ডের মাধ্যমে অনুদানকারীরা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে পারেন। শোনা যায়, অনুদানকারীর তালিকায় দেশের কয়েকজন তাবড় শিল্পপতি রয়েছেন। রয়েছেন কয়েকজন বিদেশিও। 

২০১৭-১৮ সালে নির্বাচনি প্রচারে কংগ্রেস খরচ করেছে ২৯ কোটি টাকা, যা বিজেপির থেকে ২০ গুণ কম। বিজ্ঞাপন ব্রান্ড হিসাবে বিজেপি নেটফ্লিক্সকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে। আবার, গুগল-এ বিজেপি খরচ করেছে ৬ কোটি টাকা, যা কংগ্রেসের চেয়ে দশ গুণ বেশি। ফেসবুকে খরচ ১.৩২ কোটি টাকা।

এবারের ভোটে গরিব মানুষ বিজেপির প্রচারের হাতিয়ার। আর সেই হাতিয়ারের মুখ মোদী। তিনি কখনও আম-জনতার সঙ্গে চায়ে পে চর্চা করছেন। কখনও আবার চৌকিদারদের সঙ্গে কথা বলছেন। কিন্তু দরিদ্র মানুষের এই প্রচার কি এই দরিদ্র দেশকেই নিতে হচ্ছে না? ভোটপর্ব মিটলেও প্রশ্নটা থেকেই যাবে।

এফসি