মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় হয়ে গেলেন ‘অভিষেকবাবু’! নোবেলজয়ী অভিজিতের কথা বলতে গিয়ে মুখ ফস্কে ভাইপো তথা তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! আর এ নিয়েই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে কীভাবে বাঙালি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের নাম ভুল বললেন, সে নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী নেতারা। এ ঘটনায় মমতাকে তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করে কোনও বিরোধী নেতার সহাস্য মন্তব্য, ‘অ শুনলেই মমতা ভাবেন অভিষেক’। কেউ আবার বলেছেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়েই উনি চিন্তিত সবসময়’।

এ প্রসঙ্গে একদা মমতার সৈনিক তথা সদ্য বিজেপিতে যোগ দেয়া রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে হাসতে হাসতে বলেন, ‘উনি আসলে সব কিছুতেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে পান, যেটা খুবই দুঃখজনক। বাংলা তথা ভারতবর্ষের গর্ব নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী তার নাম ভুল বলছেন, এটা দুর্ভাগ্যের’।

মমতাকে বিঁধে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ‘উনি আসলে না জেনেই কথা বলতে থাকেন। অ শুনলেই ভাবেন অভিষেক। এটাই ওর পতনের মূল কারণ’।

বিজেপির পাশাপাশি বাম ও কংগ্রেস নেতারাও মমতার এহেন ‘কীর্তি’তে সোচ্চার হয়েছেন। সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, ‘মমতা নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান হলে, অভিষেকই পেতেন নোবেল। এক হতে পারে, প্রবাসে কে কী কাজ করছেন, তার কোনও খবর রাখেন না উনি। দ্বিতীয়ত, তার মনজুড়ে রয়েছেন অভিষেক। তার ব্যাপারে উনি চিন্তিত। আর তৃতীয়ত হতে পারে, উনি যেটা বলেছেন সেটাই ঠিক। স্বৈরতান্ত্রিক মনোবৃত্তির হলে যা হয়। অনেক সময় পাশে যারা থাকেন, তারা বলে দেন, যে দিদি এটা নয়, ওটা হবে। কিন্তু তারা জানেন, বলে কোনও লাভ হবে না। আর অনেকে বলার সাহস রাখেন না’।

কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘বাংলায় নোবেল চালু করে দিলেই হল। কাটমানিতে নোবেল!’

ঠিক কী বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?

বুধবার (১৬ অক্টোবর) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, ‘আগেও অমর্ত্য সেন, মাদার টেরেজা পেয়েছেন নোবেল…বাংলা থেকে এবার অভিষেকবাবু (পড়ুন, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়) পেলেন। এটা গর্বের। বাংলা গর্বের দিকে এগোচ্ছে…’। এরপর মমতা আবারও বলেন, ‘অভিষেকবাবুর মা (পড়ুন, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা) এখানে আছেন, একবার যাব ওর সঙ্গে দেখা করতে’।

সাংবাদিক বৈঠকের পর বিকেলে কলকাতায় নোবেলজয়ীর মায়ের সঙ্গে দেখা করেন মমতা।

এসএমএম