• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০১৯, ১১:৩৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২৫, ২০১৯, ১২:৫৫ এএম

বিধানসভা ও উপনির্বাচনে ভোটের হাল

মহারাষ্ট্রে বিজেপি জোটের আধিপত্য, হরিয়ানায় কংগ্রেসের জোর টক্কর

মহারাষ্ট্রে বিজেপি জোটের আধিপত্য, হরিয়ানায় কংগ্রেসের জোর টক্কর

             বি ধা ন স ভা নি র্বা চ ন

আগামী পাঁচ বছরের জন্য ভারতের মহারাষ্ট্র বিধানসভায় ফের রাজত্ব কায়েম করতে যাচ্ছে বিজেপি-শিবসেনা জোট। তবে হরিয়ানায় এখন পর্যন্ত এগিয়ে থাকলেও মোদীর ক্ষমতাসীন জোটকে জোর টক্কর দিচ্ছে সোনিয়া গান্ধীর ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস।

ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য মতে ভোট গ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) এই দুই রাজ্যের বিধান সভা নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু হয় ঠিক সকাল আটটায়। ভোটের সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে জানা যায়, এখনও পর্যন্ত দুই রাজ্যেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। তার মধ্যে মহারাষ্ট্রে বিরাট ব্যবধানে এগিয়ে থেকে আবারও নিজেদের রাজত্ব কায়ম করতে চলেছে গেরুয়া দল। বর্তমানে দুই রাজ্যেই শাসন ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। 

বিধানসভা নির্বাচনের (মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানা)সর্বশেষ পরিস্থিতি : সৌজন্যে- নিউজ১৮.কম

মহারাষ্ট্রের বিধান সভা নির্বাচনের হালচাল

ভারতীয় বার্তা সংস্থা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনের তথ্য মতে, মহারাষ্ট্রে শিবসেনার সঙ্গে জোট বেঁধে দ্বিতীয় মেয়াদেও সেখানে নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে চলেছে নরেন্দ্র মোদীর গেরুয়া বাহিনী। বিজেপিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ দেওয়ার আশায় এ রাজ্যে শারদ পাওয়ারের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে জোট বেঁধে লড়লেও আশানুরূপ ফল লাভে ব্যর্থ হয় সোনিয়ার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস (আইএনসি)। সর্বশেষ তথ্য মতে, বেসরকারিভাবে রাজ্যের মোট ২৮৮টি আসনের মধ্যে ১৬২টি আসনে নিজেদের জয় নিশ্চিত করেছে বিজেপি-শিবসেনা জোট। যেখানে বিজেপি এককভাবে পেয়েছে ১০৩টি আসন এবং এগিয়ে রয়েছে ২টি আসনে। আর তাদের জোট সঙ্গী শিবসেনা এককভাবে জিতে নিয়েছে ৫৭টি আসন।

পক্ষান্তরে, তাদের প্রধান বিরোধী শক্তি আইএনসি-এনসিপি জোট জিতেছে ৯৭টি আসনে। এর মধ্যে আইএনসি এককভাবে ৪২টি আসনে জয় লাভ করেছে আর এগিয়ে আছে ২টি আসনে। অপরদিকে তাদের জোট সঙ্গী জিতেছে ৫৩টি আসনে। 

এছাড়া মুসলিম নেতৃত্বাধীন দল সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এআইএমআইএম) ২টি আসনে এবং স্বতন্ত্রসহ অন্যান্যরা জিতেছে ২৭টি আসন। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে এই রাজ্যে কোনো দলকে পেতে হবে মোট ১৪৫ টি আসন।

• হরিয়ানার বিধানসভা ভোটের সর্বশেষ হালচাল

এদিকে হরিয়ানা রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে জোর টক্কর চলছে মোদীর ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সোনিয়া গান্ধীর ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের মধ্যে। সর্বশেষ তথ্য মতে, রাজ্যের মোট ৯০টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৪০ টিতে এবং কংগ্রেস ৩১টি বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্যে যে কোনও দলকে পেতে হবে ৪৬ টি আসন। এখানে মনোহর লাল খাট্টারের সরকারের ৪ মন্ত্রী, রাজ্য বিজেপি প্রধান সুভাষ বার্নালা এবং বিধানসভার স্পিকার কানওয়ার পাল গুর্জার পিছিয়ে আছেন বলে জানা গেছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

হরিয়ানায় সরকার গঠনের ক্ষেত্রে সংখ্যগরিষ্ঠতা অর্জনে দুশ্যান্ত চৌতলার নেত্ররত্বাধীন জেজেপি তাসের টেক্কা হয়ে যেতে পারে। বর্তমানে তাদের আধিপত্য রয়েছে ১০টি আসনে। আর অন্যান্যরা পেয়েছে ৯টি আসন।

• ১৮ টি রাজ্যে উপনির্বাচনের ভোট গণনাও আজ

এছাড়া সোমবার (২১ অক্টোবর) উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ভারতের ১৮ টি রাজ্যের ৫১ টি বিধানসভা আসন এবং দুটি লোকসভা আসনেও। সেই কেন্দ্রগুলিরও ভোট গণনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। গত নির্বাচনের পরিসংখ্যান মতে বিজেপি এবং তার মিত্রদের এই বিধানসভা আসনগুলির মধ্যে প্রায় ৩০ টি আসন ছিল, আর কংগ্রেসের ছিল ১২ টি। বাকী গুলি আঞ্চলিক দলগুলির।
 
পাশাপাশি উত্তর প্রদেশেও ভোট গণনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেটাকে অনেকেই ছোটখাটো বিধানসভা নির্বাচন হিসাবেই দেখছে। কেননা এখানে ১১ টি আসনে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হয়, পাশাপাশি গুজরাট (৬টি আসন), বিহার (৫ টি আসন), আসাম ও পাঞ্জাব (প্রত্যেকে ৪ টি আসন), কেরালায় ৫ টি আসন রয়েছে আসন), সিকিম (৩ টি আসন), রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ এবং তামিলনাড়ু (প্রত্যেকে ২ টি আসন) এবং অরুণাচল প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, পুডুচেরি, মেঘালয় এবং তেলঙ্গানার একটি করে আসনে ভোটগ্রহণ হয়।
 
গত পাঁচ বছরে মহারাষ্ট্রে শিবসেনার সঙ্গে নানা সময়ে বিজেপির মতবিরোধ হলেও এই নির্বাচনেও তাঁরা শিবসেনার সঙ্গেই জোট বেঁধে লড়েছে। ২০১৪ সালে যখন দুটি দলের মধ্যে অল্প সময়ের এক বিচ্ছেদ হয়েছিল তখন দুই দলের কেউই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে সফল হয়নি। শিবসেনা সেই সময় রাজ্য ও কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের নীতি বিরুদ্ধে প্রচুর সমালোচনা করে।
 
এবার, শিবসেনা বিজেপির সঙ্গে ৫০:৫০ আসন ভাগাভাগির প্রস্তাব দিলেও তাঁদেরকে বেশ কয়েকটি কম আসনই দেওয়া হয়েছে। যদিও এই প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে যে বিজেপি-শিবসেনা জোট জয় পেলে শিবসেনার থেকেই উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হবে। পাশাপাশি বিজেপি এও ঘোষণা করেছে, সেখানে জয় পেলে মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের নেতৃত্বেই সেখানে ফের সরকার গড়বেন।
 
বিরোধীরা একাধিক স্থানীয় ইস্যু যেমন বেকারত্ব, কৃষির সংকট, কৃষকদের আত্মহত্যা এবং অর্থনীতির মন্দার বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করে নির্বাচনী প্রচারে, যেখানে জাতীয় ইস্যুগুলি তুলে ধরে প্রচার চালায় বিজেপি। এই নির্বাচনের ফলাফল থেকে বোঝা যাবে যে ভোটাররা স্থানীয় ইস্যু নাকি জাতীয় ইস্যু, কোনটার উপর ভিত্তি করে তাঁদের ভোট দিয়েছেন।

এসকে

আরও পড়ুন