• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০১৯, ০৬:৫৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২, ২০১৯, ০৬:৫৪ পিএম

পৌর কর্মকর্তার মৃত্যু

ডেঙ্গুতে কাঁপছে পশ্চিমবঙ্গ, নির্বিকার সরকার

ডেঙ্গুতে কাঁপছে পশ্চিমবঙ্গ, নির্বিকার সরকার

কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গায় ডেঙ্গুর প্রকোপ এক ধাক্কায় বেড়ে যাওয়ার পরেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও কলকাতা পৌরসভার হুঁশ ফেরেনি। গাফিলতির দায় নিয়ে চলছে চুলচেরা বিচার। সরকারি খাতায় এখনও দেখাচ্ছে মৃত্যুর সংখ্যা শূন্য। এরই মাঝে কলকাতা পৌরসভার কর্মকর্তা ড. শান্তনু মজুমদারের মৃত্যু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে ডেঙ্গু দমনে সরকারি উদ্যোগে কতটা ফাঁক রয়েছে। মৃত কর্মকর্তার বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সোদপুর পৌরসভার অন্তর্গত। তার বাড়ি বাইরে হলেও কর্মক্ষেত্র কলকাতা। তাই কোন এলাকার ডেঙ্গুর মশা ‘এডিস ইজিপ্টাই’ কামড়েছিল তা বলা মুশকিল। তবে তার মৃত্যু ও ডেঙ্গু নিয়ে চলছে আলোচনা, বাড়ছে উদ্বেগও।

উল্লেখ্য, গত বছর শীতের শুরুতে ঢাকাসহ বাংলাদেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে ডেঙ্গু। পশ্চিমবঙ্গে এবার এখনও সেই পর্যায়ে না পৌঁছলেও ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে আতঙ্ক ছড়াতে শুরু করেছে। বেসরকারি হিসাবে ডেঙ্গুতে এখনও পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার।

শান্তনুবাবু কলকাতা পৌরসভার ২ নম্বর বরোর সমাজকল্যাণ দফতরের ম্যানেজার ছিলেন। তিনি ও তার বাবা অসিত মজুমদার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানেই শান্তনুবাবু মারা যান। তার স্ত্রী ও এক পুত্র রয়েছে। তার মৃত্যুতে পৌরসভার বাইরে যেমন, তেমনই ভেতরেও সমালোচনা শুরু হয়েছে। ডেঙ্গু মোকাবিলা সরকার আদৌ সেভাবে মাথা ঘামাচ্ছে কি না, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। পৌরকর্মীদের বক্তব্য, এত বড় একটা শহরে সবাই মিলে কোমর বেঁধে কাজে না নামলে এর প্রতিরোধ সম্ভব নয়।

কলকাতা পৌরসভারই এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, বর্ষা বিদায় নিতেই বাড়তে শুরু করেছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। এরইমধ্যে কলকাতার কয়েকটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। কলকাতা পৌরসভা সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে শুধু কলকাতা শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই হাজার। তবে বেসরকারি মতে, সংখ্যাটা আরো অনেকটাই বেশি। ডাক্তারের চেম্বারে রোগীর ভিড় বেড়েই চলেছে। ভিড় বাড়ছে হাসপাতালগুলোতেও। তবে মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ দুজনেই মন্তব্য করেছেন, অন্যান্য বারের মতো এবার ডেঙ্গু ছড়ায়নি এবং পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিকই আছে। চলতি সপ্তাহেই ডেঙ্গু নিয়ে পৌরসভায় বিশেষ বৈঠক ডেকেছিলেন অতীন ঘোষ।

জানা গেছে, কলকাতার ১২টি বরোতে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। ৫৭, ৬৩, ৮১, ৯৩, ৯৫, ৯৭, ৯৯, ১০০, ১২৯, ১৩১ ও ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডগুলো বেশি আক্রান্ত বলে স্বীকার করেছে পৌরসভাই। পৌরকর্মীদের অনেক বেশি তৎপর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ডেঙ্গু মোকাবিলার কাজে গাফিলতি হলে কড়া শাস্তির হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি।

শুধু কলকাতা নয়, রাজ্যের একাধিক জেলায়ও ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। সেসব পৌরসভা ও পঞ্চায়েতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। তাদের ডেঙ্গু মোকাবিলায় নিদেশিকা দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যভবনের তরফে। পানি জমতে না দেয়া, আবর্জনা পরিষ্কার করা, মশার স্প্রে ছড়ানো ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা দেখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এফসি

আরও পড়ুন