• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২০, ০১:১৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৩, ২০২০, ০১:৫০ এএম

কূটনৈতিক লড়াইয়ে দিল্লির নিরব বিজয়

চীন-পাকিস্তান ইস্যুতে ভারতের সমর্থনে জার্মান-যুক্তরাষ্ট্র

চীন-পাকিস্তান ইস্যুতে ভারতের সমর্থনে জার্মান-যুক্তরাষ্ট্র
প্রতীকী ছবি

জাতিসংঘের নিরাওত্তা পরিষদে ২৯ জুন পাকিস্তানের স্টক এক্সচেঞ্জ হামলার ঘটনায় একটি ভারতবিরোধী নিন্দা প্রস্তাব রুখে দিল জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র। এই হামলা নিয়ে পাকিস্তানের অভিযোগের আঙুল ছিল ভারতে দিকে।

পাকিস্তনের পক্ষ থেকে দাবি ছিল, ভারতের যোগ রয়েছে করাচি হামলায়। আর তাতে নিরব সমর্থন জানিয়েই এই অভিযোগের খসড়া পেশ করেছিল চীন। কিন্তু নিয়মানুসারে, এ ধরনের প্রস্তাবনার ক্ষেত্রে বেধে দেয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর নিরব সমর্থন বা আপত্তি উত্থাপনের যে বিধি, তাতেই আটকে গেল চীন-পাকিস্তান কৌশল। কারণ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভারতের বিরুদ্ধে আনত এই অভিযোগের ইস্যুতে প্রথমেই আপত্তি জানায় জার্মানি। এতে করে প্রস্তাবনাটি গ্রহণ সাপেক্ষে বাড়ে সময়ের পরিসীমা।

এদিকে দ্বিতীয় দফায় প্রস্তাবটির ব্যাপারে আপত্তি আসে আমেরকিরা তরফ থেকেও। কূটনৈতিক মহলের মত, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবটি প্রেক্ষিতে ভারতের পক্ষেই নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে জানান দিলো বার্লিন ও ওয়াশিংটন, যা চলমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ভারতের জন্য একটি বিশাল কূটনৈতিক বিজয়। তাছাড়া এই দুই দেশের সহযোগিতা ভারতের হাত শক্ত করবে। 

তারা বলছেন, তালেবান জঙ্গি নেতা লাদেনকে শহীদ মর্যাদা দেয়া ইমরান খান সরকারের ভারত বিরোধী কূটনৈতিক চালে মাত খাওয়ার পাশাপাশি হংকং ইস্যুর পর আরো একচোট কূটনৈতিক ধাক্কা খেলো চীনও।

আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থার তথ্য মতে, নিরাপত্তা পরিষদের একটি অধিবেশনে মার্কিন সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে চীনের তরফে যে খসড়া পেশ করা হয়, তাতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পাকিস্তানে চালানো হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের ও তাদের মদতদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ঘটনার বিরোধিতা করেছিল সব পক্ষই। কিন্তু কূটনৈতিক মহলের মত, চীন এই প্রস্তাব সর্থন করে ভারতের দিকেই আঙুল তোলে।

বলাই বাহুল্য নিরাপত্তাপরিষদে এই প্রস্তাবটি পেশের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব পক্ষ নীরবতা বজায় রাখলে প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। কিন্তু জার্মানি এই প্রস্তাবে আপত্তি জানায় মঙ্গলবার বিকেলেই। আর পরবর্তী নির্ধারিত সময়ের হিসেবে বৃহস্পতিবার আপত্তি আসে আমেরিকার তরফেও।

উল্লেখ্য এফটিএ পাকিস্তানকে জঙ্গিমদতের প্রশ্নে এখনও ধূসর তালিকায় রেখেছে। জঙ্গিগোষ্ঠীকে আর্থিক মদত বন্ধ না করলে বড় সমস্যার মুখে পড়বে পাকিস্তান, এই মর্মে একাধিক বার্তা দিয়ে রেখেছে এফটিএ। বারবার সময় দেওয়া সত্ত্বেও সেই ধূসর তালিকা থেকে উঠে আসতে পারেনি পাকিস্তান।

অপরদিকে হংকং নিরাপত্তা আইনের নামে অঞ্চলটির স্বাধীনতা খর্বকারী চীনও বর্তমানে রয়েছে ব্যাপক কূটনৈতিক চাপে। বিশেষ করে প্রতিটি পশ্চিমা দেশই এই ইস্যুতে চীনের বিরুদ্ধে বর্তমানে সরব। এই পরিস্থিতির মাঝেই ভারতের বিরুদ্ধে আনা পাকিস্তানের অভিযোগের ব্যাপারে তাদের সমর্থনের মূল কারণ কি, সেটা পরিষ্কার।

সেক্ষেত্রে জার্মান-যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির মধ্যদিয়ে পরিষদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্য নিজেদের অবস্থান ভারতের পক্ষেই ঘোষণা করলো। যা বর্তমান সময়ের আলোকে ভারতের জন্য বেশ ইতিবাচক।