• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২০, ০৮:৫১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৭, ২০২০, ০৮:৫১ পিএম

গালওয়ানে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে ভারত

গালওয়ানে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে ভারত

সীমান্তে ভারত-চীন উত্তেজনা কিছুটা কমলেও বাড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না ভারতীয় সেনাবাহিনী। তাদের ধারণা চীনা বাহিনী পিছু হঠলেও ফের ফিরে আসতে পারে। কারণ পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে সামরিক অবকাঠামো তৈরি করে ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল চীনা বাহিনী। তাতে যে কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তাই সব পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকছে ভারত।

ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ঘাতক মাউন্টেন ফোর্স, স্থলবাহিনীর পাশাপাশি শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম নিয়ে তৈরি আছে ভারতীয় বিমানবাহিনীও। মিরাজ, সুখোই, মিগ-২৯ এর মতো কমব্যাট ফাইটার এয়ারক্রাফট চক্কর দিচ্ছে সীমান্তে। আর সীমান্তে শক্তি আরও বাড়াতে আমেরিকার থেকে সদ্য কেনা পাঁচটি অ্যাপাচি অ্যাটাক হেলিপক্টার পাঠানো হবে লাদাখ সীমান্তে। শুরু হয়েছে তার প্রস্তুতিও।

বিশ্বের অত্যাধুনিক মাল্টিরোল হেলিকপ্টারগুলোর মধ্যে অ্যাপাচি এএইচ-৬৪ অন্যতম। ২০১৫ সালে প্রথম বোয়িংকে ২২ টি অ্যাটাক অ্যাপাচি কপ্টারের টেন্ডর দেয় ভারত। মার্কিন সরকারের সঙ্গে কয়েক হাজার কোটি টাকার চুক্তি হয়। গত বছর ১৭টি এএইচ অ্যাপাচি-৬৪ এসে পৌঁছয় ভারতের হাতে। আরও পাঁচটি আসার কথা ছিল গত মার্চেই। কিন্তু করোনা ও লকডাউনের জেরে অ্যাপাচি পাঠাতে পারেনি বোয়িং। মে মাসে বাকি পাঁচটি অ্যাপাচি-৬৪ কপ্টার ভারতের হাতে আসে। এই পাঁচটি অ্যাপাচি পাঠানকোটের এয়ারবেসে পাঠানো হয়েছে টেস্ট-ফ্লাইটের জন্য। কিছুদিনের মধ্যেই সেগুলো লাদাখ সীমান্তে পৌঁছে যাবে।

এএইচ অ্যাপাচি-৬৪ কপ্টারকে বলা হয় বোয়িং অ্যাপাচি অ্যাটাক কপ্টার। যুদ্ধাস্ত্র বয়ে নিয়ে যেতে পারে আবার নিশানায় আঘাতও করতে পারে। এতে রয়েছে ৩০ মিলিমিটার এম২৩০ চেন গান যা মেন ল্যান্ডিং গিয়ারের মাঝে ফিট করা আছে। ১২৮টি টার্গেটকে লক্ষসীমায় আনতে পারে অ্যাপাচি। একসঙ্গে ৬৪টি নিশানায় আঘাত হানতে পারে। 

আমেরিকার এএইচ-১ কোবরা কপ্টারের বদলে প্রথম মডেল-৭৭ নামে ফিল্ডে নামে অ্যাপাচি। এই প্রোটোটাইপ বানায় হিউজেস হেলিকপ্টার। এরপরে ওয়াইএএইচ-৬৪ নামে এর আধুনিকীকরণ হয় ১৯৭৫ সালে।  হিউজেস হেলিকপ্টার কিনে এএইচ-৬৪ নামে এর নয়া ভার্সন তৈরি করে ম্যাকডোনেল ডগলাস। মার্কিন বাহিনীতে এই কপ্টার কাজ করা শুরু করে ১৯৮৬ সাল থেকে। এরপরে ক্রমান্বয়ে অ্যাপাচি কপ্টারের আধুনিকীকরণ হয়। শেষে এই কপ্টারের প্রযুক্তিতে বদল এনে তাকে আরও আক্রমণাত্মক করে তোলে বোয়িং।

অ্যাপাচের ককপিটে দুটি আসন আছে। এর আধুনিক সেন্সর রাতেও কাজ করতে পারে। যে কোনো পরিবেশে ও আবহাওয়ার পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারে অ্যাপাচি। এই কপ্টারে আছে চার-ব্লেডের মেন রোটর ও চার-ব্লেডের টেল রোটর। আধুনিক জেনেরাল ইলেকট্রিক টি৭০০ টার্বোশ্যাফট ইঞ্জিনে চলে অ্যাপাচি-৬৪। প্রতি মিনিটে ১৭৭৫ ফুট ভার্টিকল ক্লাইম্ব করতে পারে অ্যাপাচি।

এই কপ্টারের সঙ্গে হেলফায়ার মিসাইলের প্রযুক্তিও যোগ করা আছে। দুটি সেন্সর পডের সঙ্গে রয়েছে থার্মোগ্রাফিক ক্যামেরা। হাই-রেসোলিউশন রঙিন ছবি তুলতে পারে এই ক্যামেরা। এর পুরনো ভার্সন শুধু সাদা-কালো ছবি তুলে আনতে পারে। ক্লোজ কমব্যাট অ্যাটাকের জন্যও ব্যবহার করা যায় অ্যাপাচি-৬৪। এজিএম-১১৪ হেলফায়ার অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল ও হাইড্রা-৭০ রকেট ছোড়া যায় অ্যাপাচি থেকে।
সূত্র : দ্য ওয়াল