• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২১, ০৮:২৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৫, ২০২১, ০২:২৬ এএম

সরব দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী

দলিত শিশু ধর্ষণ-হত্যায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ

দলিত শিশু ধর্ষণ-হত্যায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ
ছবি- সংগৃহিত

নয়াদিল্লিতে ৯ বছরের এক বাচ্চা মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা ও তার মরদেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তার বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। বুধবার এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

একজন বিচারকের নেতৃত্বে গঠিত এই দলটির তদন্তে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে- এই আশা প্রকাশ করে টুইটে কেজরিওয়াল বলেন, এ ঘটনায় দোষী দুষ্কৃতিকারীদের শাস্তি নিশ্চিতে দিল্লির শীর্ষ আইজীবীরা যুক্ত থাকবেন।

দিল্লির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে টুইটে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত দিল্লির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া। রাজ্য সরকার এক্ষেত্রে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

গত রোববার রাতে দিল্লির দক্ষিণ-পশ্চিমে সেনানিবাস এলাকার নিকটবর্তী একটি শ্মশানঘাটে ৯ বছর বয়সী ওই মেয়েটিকে ধর্ষণের পর হত্যা ও সেই মরদেহ জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

নিহত মেয়েটি ভারতের দলিত বা নিম্নবর্ণভূক্ত বাল্মিকী সমাজের। শ্মশানের নিকটবর্তী বাল্মিকী বস্তিতে মা-বাবার সঙ্গে থাকত মেয়েটি।

নিহত শিশুর মা বিবিসিকে এ সম্পর্কে বলছিলেন, আমরা সেদিন গ্রামে গিয়েছিলাম আর আমাদের বাচ্চা শ্মশানঘাটের ওয়াটার কুলার থেকে খাবার জল নিতে গিয়েছিল। শ্মশানের মন্দিরের পুরোহিত বা পন্ডিতজি আমাদের ফোন করে হঠাৎ খবর দেয়, কুলার থেকে জল নিতে গিয়ে আমাদের মেয়ে নাকি কারেন্ট খেয়ে মারা গেছে।

তিনি আরও বলেন, রাতেই তাড়াহুড়ো করে সৎকার করা হয়। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস ‘পন্ডিতজি’ আর ওর দলবল আমাদের মেয়েকে জীবন্ত পুড়িয়ে দিয়েছে।

ঘটনার মূল অভিযুক্ত রাধেশ্যাম নামের ওই পুরোহিতকে সোমবার রাতে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আটক করা হয়েছে লক্ষ্মীনারায়ণ, কুলদীপ ও সালিম নামে তার তিন সঙ্গীকে। তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, হত্যা, ভয় দেখানো ও প্রমাণ লোপাট করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে।

ভারতে নারী ও মেয়ে শিশুদের নিরাপত্তার অভাবের বিষয়টি ব্যাপক আকারে সামনে আসে ২০১২ সালের দিল্লির বাসে ২৩ বছর বয়সী এক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও নৃশংসভাবে হত্যার পর। বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল ওই ঘটনায় এবং তখন থেকেই এটি একটি বড় রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ভারতে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দেশজুড়ে ৩২ হাজার নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ভারতে। হিসেব করলে দেখা যায়, ওই বছর প্রতি ঘণ্টায় ৪ জন নারী ধর্ষিত হয়েছেন দেশটিতে।

তবে ভারতের সমাজ বিজ্ঞানী ও নারী অধিকার কর্মীদের মতে- এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি। কারণ, সামাজিক বাস্তবতার কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ধর্ষণের ঘটনা থানা বা আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে না ভারতে।

বুধবার নিহত মেয়েটির মা-বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ভারতের বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী। শোক বিহ্বল ওই দম্পতিকে তিনি বলেন, তাদের মেয়ে সমস্ত ভারতের কন্যা শিশুদের প্রতিনিধিত্ব করে এবং ন্যায়বিচার তাদের প্রাপ্য।

জাগরণ/এসকে