ব্রিটিনের রানি বলে কথা। তিনি তো আর শুধু আর ইংল্যান্ড নন, অস্ট্রেলিয়া-কানাডাসহ কয়েক ডজন দেশেরও অধিশ্বর তিনি। ফলে ব্রিটিশ শাসকের সব কিছুই অতি রাজকীয় ব্যাপার।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শবযাত্রা দেখতে লন্ডনের রাস্তায় রাস্তায় নেমেছে মানুষের ঢল। রানির কফিন দেখতে বাকিংহাম প্যালেস থেকে ওয়েস্টমিনিস্টার পর্যন্ত সড়কে তিল ধরনের ঠাই নেই।
রানির মরদেহ যে কফিনে করে নেয়া হচ্ছে, সেটিরও মহিমাও কম নয়। এই কফিনের রয়েছে বিশেষ বৈশিষ্ট্য। সহজে পচন ধরতে দেয় না মরদেহে।
প্রায় ৩২ বছর আগেই ইংলিশ ওক কাঠ দিয়ে তৈরি হয়েছিল রানির কফিনটি। রাজকীয় রীতি মেনে কফিনটির গায়ে সিসার পরত দেয়া হয়েছে। ফলে মরদেহে পচন ধরে অনেক দেরিতে।
আটজন বাহক রানির কফিনটি বহন করেন। সিসার পরত থাকার জন্য কফিনটির ভেতর বাইরে বাতাস ও আর্দ্রতা প্রবেশ করতে পারে না। এ কারণেই দীর্ঘ সময় ধরে দেহ সংরক্ষণ করা যায়।
কফিনটি কে তৈরি করেছিলেন, সেই সম্পর্কে নিশ্চিত কোনও তথ্য পাওয়া যায় না। ১৯৯১ সাল থেকে লন্ডনে রাজপরিবারের অন্ত্যেস্ট্রিক্রিয়া পরিচালনা করে লেভারটন অ্যান্ড সন্স সংস্থা।
কফিনের ভেতর রানির দেহের সঙ্গে বেশ কিছু মূল্যবান জিনিসপত্র রাখা হবে। সেগুলো যাতে নিরাপদে থাকে, তার জন্য এর ঢাকনাটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে।
বার্মিংহামের এক প্রতিষ্ঠান কফিনটির পিতলের হাতল তৈরি করেছে। এটি বিশেষভাবে রাজকীয় ক্যাসকেটের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এই কফিনটি তৈরি করতে লেগেছে বহুদিন।
কফিনের ভেতর রানির দেহের সঙ্গে যে মূল্যবান জিনিসপত্রগুলি থাকবে, তার মধ্যে রয়েছে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মুকুট, গোলক এবং রাজদণ্ড।
গত বছর মৃত্যু হয়েছিল রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের স্বামী প্রিন্স ফিলিপের। তার জন্য যে কফিনটি তৈরি করা হয়েছিল, রানির কফিনটি হুবহু এক রকমের।
প্রিন্স ফিলিপকে লন্ডনের পশ্চিমে উইন্ডসরের সেন্ট জর্জ চ্যাপেলের রাজা ষষ্ঠ জর্জ মেমোরিয়াল চ্যাপেলে সমাহিত করা হয়। রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকেও তার পাশেই সমাহিত হবেন।
বোরবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রথমবার রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কফিন দেখা যায়। বালমোরাল এস্টেট থেকে ফুলে ঢাকা কফিনটি আনা হয়েছিল স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবার্গের হলিরুড হাউসে।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সেখান থেকে আনা হয় সেন্ট জাইলস ক্যাথিড্রালে। ২৪ ঘন্টা পর রয়্যাল এয়ার ফোর্সের বিমানে রানির দেহ আনা হয় লন্ডনে।
জাগরণ/আন্তর্জাতিক/কেএপি