• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০১৯, ০৩:২১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২৪, ২০১৯, ০৩:৩৮ পিএম

জাহালমকাণ্ডে সোনালী ব্যাংকের দায় স্বীকার

জাহালমকাণ্ডে সোনালী ব্যাংকের দায় স্বীকার

ভুল আসামি হয়ে কারাভোগকারী জাহালম ইস্যুতে নিজেদের দায় স্বীকার করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছে সোনালী ব্যাংক। এই বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী বুধবার নতুন দিন ধার্য করা করেছেন আদালত।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশিদ আলম খান শনিবার (২৪ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দৈনিক জাগরণকে তিনি বলেন, প্রতিবেদনের একটি কপি আমাদের দেয়া হয়েছে। এতে অনিয়মটা কিভাবে হয়েছে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২৮ আগস্ট বুধবার দিন ধার্য করেছেন আদালত। 

এ ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের ৮ জন জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে। যাদের মূলে ছিলেন আমিনুল হক। জড়িতদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যাংকটি। প্রায় ৪১৬ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জালিয়াতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কারো বেতন কাটা হয়েছে, কাউকে তিরস্কার করা হয়েছে। এই ইস্যুতে প্রথম দায় স্বীকার করলো সোনালী ব্যাংক।

হাইকোর্টে উপস্থাপন করা ওই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদুক) আইনজীবীকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনারা (দুদক) জাহালমের ঘটনায় ১১ জন তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী এবং কেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তার কোনো তথ্য নেই- এটা কেমন প্রতিবেদন? আদালত আরও বলেন, আমরা সর্ষের মধ্যে ভূত দেখতে চাই না। সর্ষের মধ্যে সর্ষই থাকা উচিত। 

দুদকের আইনজীবীর কথার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বলেন, আমরা দুদকের কাজ নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলছি না। শুধু জাহালমের ঘটনার বিষয়ে এখানে যে শুনানি চলছে তা নিয়ে বলছি। আপনাদের প্রতিবেদন যথাযথ হয়নি। এটা আমরা একেবারেই গ্রহণ করতে পারছি না। পরিপ্রেক্ষিতে দুদক আইনজীবী আদালতকে বলেন, ১১ তদন্ত কর্মকর্তার বিষয়ে আজ একটা আদেশ দেন।

তখন আদালত আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, এখন অর্ডার দিলে তো আমরা বলব আপনারা আদালতের আদেশ মানেন নাই ‘কন্টেমড অব কোর্ট’ স্ট্যান্ডিং অর্ডার তো রয়ে গেছে আবার আদেশ দেব কেন? পরে প্রতিবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তাদের নাম ও অভিযোগের তথ্যসহ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৮ আগস্ট দিন ধার্য করেন।

জাহালমের বিষয়ে শুনানির নির্ধারিত দিনে গত বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান, ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে আসাদ্দুজ্জামান শুনানি করেন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান দুদকের প্রতিবেদন পেশ করে বলেন, জাহালমকে ভুল আসামি করা ৩৩ মামলাই পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ১১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হবে।

এর আগে দুদকের পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) জালাল সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাহালমকে ভুল আসামি করা ৩৩ মামলাই পুনরায় তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ১১ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের হবে।

একটি জাতীয় দৈনিকে ‘৩৩ মামলায় ভুল আসামি জেলে’ ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। টাঙ্গাইলের নাগরপুরের ডুমুরিয়া গ্রামের জাহালম ‘ভুল আসামি’ হয়ে বিনা দোষে ৩ বছর জেল খাটার ঘটনায় প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাশগুপ্ত।

ওই প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপনের পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৩৩ মামলার মধ্যে মোট ২৬টিতে ‘ভুল’ আসামি হয়ে জেল খাটার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুদক চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ও মামলার বাদীসহ ৪জনের ব্যাখ্যা শোনেন আদালত। এরপর জাহালমকে ২৬ মামলায় জামিন দেন হাইকোর্ট।

এমএ/একেএস

আরও পড়ুন