• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯, ০৬:১০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৯, ০৬:১১ পিএম

চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি

খালেদার জামিন মেলেনি হাইকোর্টে

খালেদার জামিন মেলেনি হাইকোর্টে

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন সরাসরি খারিজ (সামারিলি রিজেক্ট) হওয়ার পর আবেদনটি ফেরত নিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি ফরিদ আহমেদ ও বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য যায়।

আদালত বলেন, যেহেতু বিষয়টি এর আগে হাইকোর্টের একটি জ্যেষ্ঠ বেঞ্চে শুনানির সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেহেতু বিষয়টি এখন আপিল বিভাগে নিয়ে যেতে পারেন।

এ সময় খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, বিষয়টি এর আগে হাইকোর্টের অন্য একটি বেঞ্চে শুনানি হলেও আপনাদের শুনতে কোনো বাধা নেই। তখন আদালত আবেদনের শুনানিতে সাড়া না দিলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন, তাহলে জামিন আবেদনটি আমরা (টেক ব্যাক) ফেরত নিচ্ছি।

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তাদের শুনানি করতে হয়নি।

দুদক আইনজীবী দাবি করেন, আদালত সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনটি ফেরত দিয়েছে। তিনি বলেন, জামিন আবেদনের শুনানির জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম। অ্যাটর্নি জেনারেলও প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু কোর্ট নিজেই সন্তুষ্ট হতে পরেনি যে, তারা নতুন করে একটা মামলা আবার শুনতে পারবেন, যেখানে একবার খারিজ হয়েছে। হাইকোর্টের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে তারা আপিল বিভাগে যেতে পারেন। সেই একই আবেদন আবার নতুন করে হাইকোর্ট শুনতে পারেন না। এ প্রশ্নে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা রুলসটা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।

অন্য কোন বেঞ্চে আবেদনটি নিয়ে যাওয়া হবে কি-না, জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, আইনজীবী প্যানেলের সঙ্গে আলোচনা করে তারা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।

গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী কায়সার কামাল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ জামিন আবেদন করেন। 
হাইকোর্টে জামিন আবেদন খারিজ হওয়ার পর আবারও জামিন আবেদন করার বিষয়ে ওই দিন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, এ মামলায় হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ জামিন আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছিলেন। এখন আবারও হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে। এমন নজির নেই। হাইকোর্ট খারিজ করলে আপিল বিভাগে যেতে হয়।

এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, এর আগে জামিন রিজেক্ট হয়েছে ঠিকই। তবে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে জামিন আবেদন খারিজ হওয়ার পর আবারও হাইকোর্টে জামিন চাওয়ার আইনগত বাধা নেই।

তিনি আরও বলেন, রুল অ্যান্ড প্রাকটিস অনুযায়ী আবেদন করা যায়। দ্বিতীয়বার জামিন আবেদন করার বিষয়ে কোনো আইনজীবী যদি বলেন, তবে তার আইন জানা দরকার।

২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক। রায়ে খালেদা জিয়াকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়। বিচারিক আদালতের দেয়া ওই সাজা বাতিল ও খালাস চেয়ে গত বছরের ১৮ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন খালেদা জিয়া।

আপিলের গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানি নিয়ে গত ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে ওই মামলায় খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতে দেয়া জরিমানার আদেশ স্থগিত করে বিচারিক আদালতে থাকা মামলাটির নথি তলব করে হাইকোর্ট। ২ মাসের মধ্যে নথি পাঠাতে বলা হয়। বিচারিক আদালত থেকে মামলার নথি গত ২০ জুন হাইকোর্টে পাঠানো হয়।

এরপর খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের বিষয়টি আদালতে তুলে ধরেন তার আইনজীবীরা। এর ধারাবাহিকতায় ৩০ জুলাই জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়। পরদিন ৩১ জুলাই তা সরাসরি খারিজ করে হাইকোর্ট।

এর আগে, অপরাধের গুরুত্ব, সংশ্লিষ্ট আইনের সর্বোচ্চ সাজা এবং বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদাসহ অন্য আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত- এ ৩ বিষয় বিবেচনায় নিয়ে গত ৩১ জুলাই বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন খারিজ করে রায় দেন। ওই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে আপিলে না গিয়ে নতুন করে হাইকোর্টের অন্য বেঞ্চে আবার জামিন আবেদনকে সেদিন নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা, বয়স, সামাজিক অবস্থান, অপরাধের ধরন- সবকিছু মিলিয়েই তিনি জমিন পেতে পারেন, এমন সব যুক্তি তুলে ধরে নতুন করে জামিন আবেদনটি করা হয়েছিল।

এমএ/একেএস
    

 

আরও পড়ুন