• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০১৯, ১১:৩৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২৫, ২০১৯, ১১:৩৮ এএম

ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও অচল বরিশালের নৌপথ

ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও অচল বরিশালের নৌপথ

নৌযান শ্রমিকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলেও অঘোষিতভাবে ধর্মঘট পালন করছে বরিশাল-ঢাকাসহ অভ্যন্তরীণ নৌ-রুটের নৌযান মালিকরা। নৌযান শ্রমিকদের স্বেচ্ছাচারিতা এবং জিম্মিদশা থেকে মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত লঞ্চ চালাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দ্বিতীয় দিনেও অভ্যন্তরীণ রুটে বন্ধ রয়েছে যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযান চলাচল। ফলে যাত্রীরা সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে। স্পিড বোর্ড অথবা ট্রলার যোগে ঝুঁকি গন্তব্যে যাত্রা করতে হচ্ছে তাদের।

যাত্রীবাহী লঞ্চ মালিকদের সংগঠন জাপ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও বরিশাল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ঈদ আসলেই নৌযান শ্রমিকরা আন্দোলনের নামে লঞ্চ মালিক ও যাত্রীদের জিম্মি করে ফেলে। তারা মালিকদের সাথে কোন আলোচনা ছাড়াই কোটি কোটি টাকার সম্পদ ফেলে রেখে চলে যাচ্ছে। আবার মনে হচ্ছে ফিরে আসছে। তাদের এ অত্যাচারে আমরা এখন খুবই বিরক্ত। এমনকি শান্তিতে ব্যবসা করাও সম্ভব হচ্ছে না।

সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ইতিপূর্বে নৌযান শ্রমিকদের যে দাবি ছিল ২০১৬ সালে তা আমরা পূরণ করে দিয়েছে। এসময় তারা আমাদের লিখিত দিয়েছে যে আগামী ২০২১ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে আর কোন দাবি বা আন্দোলন হবে না। কিন্তু চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করেছে। চলতি বছরে এ নিয়ে দু’বার তারা কর্মবিরতি পালন করে।

তিনি বলেন, আমরা শ্রমিকদের অহেতুক অত্যাচার এবং জিম্মিদশায় আর থাকতে চাই না। এখন এ বিষয়ে চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে। নয়তো এভাবে চলতে থাকলে লঞ্চ ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে। এজন্য শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও লঞ্চ মালিকরা এ বিষয়ে স্থায়ী কোন সিদ্ধান্তে না পৌঁছানো পর্যন্ত আর লঞ্চ চালাবে না। এ সিদ্ধান্তের সাথে কার্গো মালিকরাও একাত্বতা প্রকাশ করেছে।

সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় রাজধানীর পল্টনে লাঞ্চ মালিক সমিতি কার্যালয়ে বৈঠক হবে। সেখানে পণ্যবাহী নৌযান মালিকরাও থাকবেন। শ্রমিকদের স্বেচ্ছাচারিতা ও জিম্মিদশা থেকে রক্ষা পেতে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে এই বৈঠকে। এর আগ পর্যন্ত বরিশাল-ঢাকা সহ সকল রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন জাপ এর সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু।

এদিকে, বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশাল নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. কবির হোসেন বলেন, মালিকদের সিদ্ধান্তের কারণে বুধবার রাতে বরিশাল থেকে ২টি লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এর একটি কীর্তনখোলা-১০ ও অপরটি ফারহান-৮। এছাড়া ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা একটিমাত্র লঞ্চ বৃহস্পতিবার সকালে বরিশালে এসে পৌঁছেছে। এটি হলো এমভি টিপু-৭।

তিনি বলেন, ভোর ৬টা থেকে অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। কিন্তু মালিকদের ঘোষণার কারণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কোন লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। এর ফলে ভোলা, মেহেন্দিগঞ্জ রুটের যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তাদেরকে ঝুঁকি নিয়ে স্পিডবোর্ড অথবা ট্রলার যোগে নদী পারাপার করতে দেখা গেছে।

উল্লেখ্য, ১১ দফা দাবিতে মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে বরিশাল-ঢাকা সহ সারা দেশে নৌযান শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করে। নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে কর্মবিরতি চলছিল। এর ১৬ ঘণ্টা পরে বিকাল সাড়ে ৪টায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগদেয় শ্রমিকরা। সে অনুযায়ী বরিশাল থেকে অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। কিন্তু লঞ্চ মালিকরা তাদের সিদ্ধান্তে বরিশাল-ঢাকাসহ দূরপাল্লার রুটে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

কেএসটি
 

আরও পড়ুন