• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২০, ০৭:২৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ২৫, ২০২০, ০৭:২৭ পিএম

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন

১৯২ কাউন্সিলর প্রার্থী মামলার আসামি

১৯২ কাউন্সিলর প্রার্থী মামলার আসামি

ভাংচুর, সহিংসতা, দুর্নীতি এমনকী নারী নির্যাতনের মতো মামলার ১৯২ আসামি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনয়ন বাগিয়েই মূলত এসব আসামি কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন। উত্তর সিটি করপোরেশনে মামলার আসামি প্রার্থী ৮৪ জন। আর দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় এ সংখ্যা ১০৫। মোট ১৯২ কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভাংচুর, সহিংসতা, বিনা অনুমতিতে সভা-সমাবেশ করা, সরকারি কাজে বাধা, দুর্নীতি ও নারী নির্যাতনের মামলা রয়েছে। পুরুষ প্রার্থীর পাশাপাশি ১৮ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধেও রয়েছে ভাংচুরের মামলা।

প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটির ৩২৮ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে মামলা আছে ৮৭ জনের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ১০ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থী। দক্ষিণ সিটির ৪১৭ জন প্রার্থীর মধ্যে মামলা রয়েছে ১০৭ জনের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ৮ জন।

ইসির নির্বাচন শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর সিটির সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের ৫৪টি পদে ২৫১ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ১৮টি পদে ৭৭ জন প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন। আর দক্ষিণ সিটির সাধারণ ওয়ার্ডে ৭৫টি কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন ৩৩৫ জন। সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ২৫টি পদে মোট ৮২ জন এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দক্ষিণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ৪ কাউন্সিলর প্রার্থী।

হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী মমিনুল হক সাঈদ। ক্যাসিনোকাণ্ডের অন্যতম পুরোধা তিনি। এবার তিনি ৯ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন। তার নামে দুদকের মামলা চলছে। দক্ষিণ সিটির ২ নং ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী মাসুদ চৌধুরী। তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা রয়েছে। ৫ নং ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী মনোয়ার হোসেন মানু। শাহবাগ থানায় তার নামে মামলা রয়েছে। ২৬ নং ওয়ার্ডে বিএনপির প্রাথী আশরাফ আলী আজম। তার নামে মামলা রয়েছে ৪৫টি। এর বাইরে ৮টি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি। দক্ষিণের ২০ নং ওয়ার্ডের প্রার্থী সৈয়দ রফিকুল ইসলাম স্বপন হলফনামায় রাজনৈতিক মামলা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। ১৫টি মামলার তালিকা দিয়েছেন তিনি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আওয়াল হোসেন। তার নামে আগে ৬টি মামলা ছিল। বর্তমানে তার নামে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১৪৩/৩৪২/৩২৩/ ৩০৪ ক/৫০৬/১০৯/৩৪ ধারায় একটি মামলা রয়েছে। মামলাটির অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য হয়ে আছে। আগের ৬টি মামলা থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৪ সালে তার বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইন ভঙ্গের দায়ে একটি মামলা হয়। অপহরণ, হত্যাচেষ্টা, সম্পত্তি আত্মসাৎ ও বিস্ফোরক রাখার দায়ে বাকি মামলাগুলো হয়েছিল ২০০১ থেকে ২০০৭ এর মধ্যে। 

আবুল কালাম আওয়ামী লীগের সমর্থনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার নামে ৫টি মামলা হয় ২০০৫ থেকে ২০০৮ এর মধ্যে। সম্পত্তি আত্মসাৎ, সহিংসতা, অবৈধ অস্ত্র ও বিস্ফোরক রাখার দায়ে তার বিরুদ্ধে এসব মামলা হয়। হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে মামলা প্রত্যাহারের তারিখ নেই। 

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম। তিনি বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি। বিনা অনুমতিতে সভা, ভাঙচুর এবং সরকারি কাজে বাধাদান করায় সর্বোচ্চ ৬৩টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ৪০টি মামলা হয় ২০১৭ ও ২০১৮ সালে এবং বাকিগুলো ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে।

প্রসঙ্গত, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় রাজনীতির মাঠ গরম ছিল। এই সময় বিএনপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বেশি হারে মামলা হয়েছে। বেশির ভাগ মামলার অভিযোগ ছিল- ভাঙচুর-সহিংসতা, বিনা অনুমতিতে সভা-সমাবেশ করা, সরকারি কাজে বাধাদানের। পক্ষান্তরে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে হওয়া বেশির ভাগ মামলা দুর্নীতি এবং অবহেলাজনিত হত্যা ও নারী নির্যাতনের মামলা।

এইচএস/ এফসি