• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০১৮, ০৭:১৮ পিএম

সিলেটে মনোনয়ন চান সাবেক ২০ ছাত্রনেতা

সিলেটে মনোনয়ন চান সাবেক ২০ ছাত্রনেতা

 

সিলেটের  সাবেক ২০ ছাত্রনেতা এবার দলীয় মনোনয়ন চাইছেন।  তরুণ এই নেতাদের অনেকেই এবার প্রথমবারের মতো মনোনয়ন চান।  মনোনয়ন দৌড়ে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, এমনকী ছাত্রসমাজের সাবেক নেতারা রয়েছেন।  অনেক আসনে তরুণ এসব মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছে কোণঠাসা হয়ে আছেন প্রবীণ নেতারা।

সিলেট-১ অথবা সিলেট-৩ আসন থেকে এবার মনোনয়ন চান সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।  বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছেন। এ আসনের বর্তমান সাংসদ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।  তিনি নির্বাচন না করলে তার ভাই জাতিসংঘের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবদুল মোমেন নির্বাচন করবেন বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন অর্থমন্ত্রী।  

এ ছাড়াও এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন।  যদিও গত সিটি নির্বাচনে পরাজয়ের পর তিনি আর কোনো ধরনের নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছিলেন।  

মর্যাদাপূর্ণ এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে এতদিন এককভাবে মাঠে ছিলেন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির।  তবে আগামী নির্বাচনে এ আসনে প্রার্থী হতে মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহরীয়ার হোসেন চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছে। 

সিলেট-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আকতারুজ্জামান চৌধুরী (জগলু চৌধুরী)।  এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির যুগ্ম মহাসচিব ইয়াহইয়া চৌধুরীও সাবেক ছাত্রনেতা।  তিনি জাতীয় পার্টির অঙ্গসংগঠন জাতীয় ছাত্রসমাজের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ছিলেন।  গেল নির্বাচনে এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী।  এবারও তিনি এ আসনে দলীয় মনোনয়ন চান।  জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে না দিলে এবার শফিকুর রহমানই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন এমনটা প্রায় নিশ্চিত মনে করছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।  

এছাড়া এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাইছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।  এ আসনে বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন ‘নিখোঁজ’ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা। সিলেট-৩ আসনে একাধিক সাবেক ছাত্রনেতা আওয়ামী লীগের মনোনয়নের প্রত্যাশায় রয়েছেন।  এ আসনে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ এবং ফেঞ্চুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সভাপতি শাহ মুজিবুর রহমান জকন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু জাহিদ, সিলেট আইন মহাবিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি ব্যারিস্টার মনির হোসেন।  

বর্তমানে এ আসনের সাংসদ আওয়ামী লীগের মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী।  এছাড়া আসনটি থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমেদ চৌধুরী ও যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী। সিলেট-২ আসনের সাংসদ জাতীয় পার্টির ইয়াহইয়া চৌধুরীও এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।

সিলেট-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইমরান আহমদ।  তবে এবার আসনটিতে দলীয় মনোনয়ন চান জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এডভোকেট মাহফুজুর রহমান ও গোয়াইনঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ ফজলুল হক।  আসনটিতে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন চান সাবেক ছাত্রদল নেতা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কামরুজ্জামান সেলিম।  সীমান্তবর্তী এ আসনে বিএনপি থেকে এবারও মনোনয়ন চাইছেন সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিম ও গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম।

সিলেট-৫ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উপদেষ্টা সেলিম উদ্দিন।  তবে এবার আসনটি থেকে মনোনয়ন চান দলটির কেন্দ্রীয় সদস্য ও জাতীয় ছাত্রসমাজের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এম জাকির হোসেইন।  দলটির অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন- কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক শাব্বীর আহমদ ও কেন্দ্রীয় সদস্য সাইফুদ্দীন খালেদ।  এছাড়া সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোস্তাক আহমদ আওয়ামী লীগের এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুন বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী।

সবচেয়ে বেশি সাবেক ছাত্রনেতারা মনোনয়ন লড়াইয়ে তৎপর সিলেট-৬ আসনে।  এ আসনে জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক ফয়সল আহমদ চৌধুরী ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এমরান আহমদ চৌধুরী বিএনপির মনোনয়ন চান। তিতুমীর কলেজের সাবেক ভিপি সরওয়ার হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, গোলাপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া আহমদ পাপলু, বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আবুল কাশেম পল্লব এবং ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য ও বিয়ানীবাজার ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভিপি জাকির হোসেন নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে তৎপর রয়েছেন। 

সাবেক ছাত্রনেতারা বলছেন, ছাত্রনেতা হিসেবে তাদের পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।  বয়সে অপেক্ষাকৃত তরুণ হওয়ায় নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পারবেন তারা।  তাদের মতে, স্থানীয় পর্যায়ে উন্নয়নকে তরান্বিত করতে তরুণ নেতৃত্বই সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। এ জন্যই তারা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইছেন। 

এফসি