• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০১৯, ০৭:৪৩ পিএম

ডাকসু নির্বাচনেও জাতীয় নির্বাচনের ছায়া: বাম গণতান্ত্রিক জোট

ডাকসু নির্বাচনেও জাতীয় নির্বাচনের ছায়া: বাম গণতান্ত্রিক জোট

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনেও জাতীয় নির্বাচনের ছায়া পড়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, ভোট কারসাজি নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের আশঙ্কাই প্রমাণিত হলো। বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতৃবৃন্দ ডাকসুতে এ ধরণের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। এর পাশাপাশিতে পুনঃনির্বাচন দাবি করেন। 

বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ ও পরিচালনা পরিষদের সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, খালেকুজ্জামান, শাহ আলম, মুবিনুল হায়দার চৌধুরী, শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, সাইফুল হক, আকবর খান, জোনায়েদ সাকি, ফিরোজ আহম্মেদ, মোশাররফ হোসেন নান্নু, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, মোশরেফা মিশু, হামিদুল হক এক যুক্ত বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।

বিবৃতিতে বলা হয় সোমবার ১১ মার্চ দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ডাকসু নির্বাচনে ভোট শুরুর আগেই ব্যালট পেপারে ভোট দিয়ে বস্তা ভর্তি করে রাখা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার না করা, সকালে হলে ব্যালট পেপার পাঠানোর কথা বলে রাতেই পাঠিয়ে দেয়াসহ নানা অনিয়ম জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। 

বাম নেতারা  এর  তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, শাসক শ্রেণি দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে ডাকসু নির্বাচন বন্ধ করে রেখে ছাত্রসমাজকে অধিকার বঞ্চিত করেছে। ছাত্র সমাজের দীর্ঘ দিনের দাবি ও হাইকোর্টের নির্দেশে সরকার-কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয় ডাকসু নির্বাচন দিতে। কিন্তু  শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নানা অনিয়মের আশ্রয় নেয়, প্রথমত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে শিক্ষকদের ৩টি ধারা থাকার পরও এককভাবে সরকার সমর্থক শিক্ষকদের নিয়ে গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি, রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ ও আচরণবিধি প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয় যা ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে পক্ষপাতিত্বমূলক বলে মনে হয়েছে। ডাকসু নির্বাচনে ইতিপূর্বে কখনো আচরণবিধি ছিল না, এবারেই প্রথম তা করা হয় এবং এর মধ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রিত ভোটের আয়োজন সম্পন্ন করা হয়। 

সবচেয়ে বড় বিষয় হলো গণতন্ত্রের সুতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যায়ভাবে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র যাদের কাছ থেকে ডাকসু ও হল সংসদের ফি নেয়া হয়েছে শর্ত আরোপ করে তাদেরকে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছে যা খুবই অগণতান্ত্রিক। তারপরও দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো সরকারি ছাত্র সংগঠনের দখলে থাকা, বিরোধী সংগঠনের কার্যক্রম ও মত প্রকাশে বাধা দেয়া, গেস্টরুম, গণরুমে ছাত্র নির্যাতনের অভিযোগে হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে ভোট গ্রহণের দাবিও মানা হয়নি। তাছাড়া ৪৩ হাজার ভোটারের ভোট গ্রহণ ৮-২টা এই অল্প সময়ে সম্ভব নয় বলে ছাত্রদের দাবি ছিল সময় বাড়ানোর তাও মানেনি কর্তৃপক্ষ। এসবই সরকারি নীল নকসা বাস্তবায়নের নমুনা বলে ছাত্র সমাজ যে আশঙ্কা করেছিল আজ তাই প্রমাণ হলো।

বিবৃতিতে বলা হয় স্বাধীনতার পর ’৭৩ সালে আওয়ামী ছাত্র সংগঠন কর্তৃক ব্যালট বাক্্র ছিনতাই করার মধ্য দিয়ে যে কলংকজনক অধ্যায় আওয়ামী ছাত্রলীগ শুরু করেছিল এবারের ডাকসু নির্বাচনে তাই ভিন্নরূপে প্রকাশিত হয়েছে। কুয়েত-মৈত্রী হলে ভোট শুরুর আগে আগাম ব্যালট পেপারে ভোট দিয়ে বস্তা ভর্তি করে রাখা বাস্তবে জাতীয় নির্বাচনের মতোই এ নির্বাচনে ভোট ডাকাতির জ্বলন্ত নজির।

টিএস/বিএস