• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০১৯, ১২:৩৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৭, ২০১৯, ১২:৩৫ পিএম

প্রাণঘাতী ডেঙ্গু চিকিৎসা

ঘুম-বিশ্রাম নেই চিকিৎসক নার্সের

ঘুম-বিশ্রাম নেই চিকিৎসক নার্সের

রাজধানীসহ সারাদেশে প্রাণঘাতী ডেঙ্গু রোগীর কারণে বিশ্রাম এবং ঘুম হারাম হয়ে গেছে মাঠ পর্যায়ের সিনিয়র চিকিৎসকদের। শুধু তাই নয়, সঙ্গে রয়েছে নার্স ও এমএলএসএস এবং ওয়ার্ড ইনচার্জগণ। ডেঙ্গুর হাত থেকে রোগীদের প্রাণে বাঁচাতে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টরা। এমনও দেখা গেছে, হাসপাতালেই তাদের খাওয়া, নাওয়া এবং বিশ্রাম। নিজ বাসা বাড়ি বা পরিবারের সন্তানদের সান্নিধ্য পাচ্ছে না চিকিৎসকরা। তারপরও নিরলস ভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। 

যেমনটি দেখা যায়, রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতাল, বিএসএমএমইউ হাসপাতালে। শয্যার চেয়ে দশ গুণ বেশি ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডেও বিছানা ছাড়া মেঝেতে, করিডোরে রেখে চিকিৎসা চলছে ডেঙ্গু রোগীর। রাজধানীর অন্যান্য সরকারি ও প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে একই দৃশ্য দেখা গেছে। রাজধানীর বাইরের বিভাগীয় এবং জেলা হাসপাতালগুলোতেও ডেঙ্গু সন্দেহে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। চাপ রয়েছে অন্যান্য রোগীরও। 

অপরদিকে, পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের হেল্প ডেস্ক খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ডেঙ্গুর বিস্তার মোকাবিলা সংক্রান্ত আলোচনা সভায় এ নির্দেশ দেয়া হয়।

জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা ন্যাশনাল গাইডলাইন অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া, ছুটির সময় কমিউনিটি ক্লিনিকে সার্বক্ষণিক সেবা দিতে প্রয়োজনীয় জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট নিশ্চিত করার তাগিদ দেয়া হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা।

এদিকে, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. উত্তম কুমার বড়–য়া বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে গিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকরা ক্লান্ত এবং পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েছেন। এছাড়া হাসপাতালটির বেশ কয়েকজন চিকিৎসক ও নার্স নিজেরাই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক কবির আহমেদ খান বলেন, ধারণক্ষমতার চেয়ে অন্তত পাঁচগুণ বেশি রোগীর চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এর বিরাট একটি অংশ ডেঙ্গু রোগী। এই অধিক সংখ্যক রোগী সামলাতে গিয়ে ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ছেন আমাদের চিকিৎসক, নার্স থেকে সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারপরও ডেঙ্গুসহ অন্য রোগীদের সব ধরনের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

অপরদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে প্রতি ঘণ্টায় হাসপাতালগুলোতে একশর বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২ হাজার ৩৪৮ জন অর্থাৎ গড়ে প্রতি ঘণ্টায় ৯৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। 

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, তারা মাত্র ৪০টি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির তথ্য পাচ্ছেন। সব হাসপাতালের তথ্য পেলে প্রতি ঘণ্টায় ডেঙ্গু রোগী ভর্তির সংখ্যা একশত ছাড়িয়ে যাবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত কয়েকদিন যাবৎ রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধে একাধিক মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণের ফলে খুব শিগগিরই ডেঙ্গু পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।

এইচএম/টিএফ

আরও পড়ুন