• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২০, ০৬:৩৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২২, ২০২০, ০৬:৪৩ পিএম

সীমান্তে ক্ষীপ্র গতির ড্রোন মোতায়েন করছে ভারত

সীমান্তে ক্ষীপ্র গতির ড্রোন মোতায়েন করছে ভারত
সূত্র : আনন্দবাজার

সীমান্ত নজরদারির কাজে এবার ক্ষীপ্র গতিসম্পন্ন বিশ্বের সবচেয়ে হালকা ও আধুনিক ড্রোন ব্যবহার করতে যাচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। লাদাখ অঞ্চলের বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখেই চূড়ান্ত ঠান্ডা আবহাওয়ায় উড়তে সক্ষম এবং বৈরী পরিবেশেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, তেমনই একটি ড্রোন উদ্ভাবন করেছে দেশটির সামরিক গবেষণা পরিচালনাকারী সংস্থা- ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই নজরদারী কাজের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ড্রোন সিরিজের নাম দেয়া হয়েছে ‘ভারত’। 

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দ প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য মতে, এরই মধ্যে এই ড্রোনটি ভারতীয় সামরিক বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ‘ভারত’ হাতে পাওয়ার পর প্যাংগং লেক, গালওয়ান উপত্যকা-সহ পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতের কর্তৃত্ব অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করছেন দেশটির প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।

গত ৪ মে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চীনা সেনার আগ্রাসন বৃদ্ধি এবং ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় দু’দেশের সেনা সংঘর্ষের পর ভারতীয় সেনার জন্য এই ধরনের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নজরদার ড্রোনের দরকার ছিল বলে মত প্রকাশ করেছিলেন। বিশেষ করে হেঁটে টহলদারির সময় যেখানে মাঝে মাঝেই চীন সেনার বাধার মুখে পড়তে হচ্ছিল জওয়ানদের। আবার গালওয়ান উপত্যকা থেকে সেনা প্রত্যাহার হলেও প্যাংগং লেকের চারটি ফিঙ্গার পয়েন্ট এখনও কার্যত চীনের দখলে। ডিআরডিও-র এক আধিকারিক একটি সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ‘‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চলমান বিবাদের কথা মাথায় রেখে পূর্ব লাদাখে নিখুঁত নজরদারির জন্য ভারতীয় সেনার এই  রকম একটি ড্রোনের প্রয়োজন ছিল। সেই কারণেই ডিআরডিও তাদের এই ‘ভারত’ ড্রোন দিয়েছে।’’

ডিআরডিও-র চণ্ডীগড় ল্যাবরেটরিতে তৈরি এই ড্রোন এখনও পর্যন্ত এই গোত্রের ড্রোনগুলির মধ্যে সবচেয়ে কম ওজনের। নজরদারি চালানোর সময় সরাসরি ভিডিয়ো (রিয়েল টাইম) পাঠাবে রিসিভার-এ। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে শত্রুপক্ষ ও মিত্রপক্ষকে আলাদা করতে পারবে এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে। সর্বোচ্চ ঠান্ডা পরিবেশেও নিখুঁত নজরদারি চালাতে পারে। এমনকি, ঘন জঙ্গলের মধ্যে কেউ লুকিয়ে থাকলেও সহজেই খুঁজে বার করে ফেলতে পারবে ‘ভারত’। আবার একসঙ্গে এত ক্ষমতার মিশেল থাকলেও রেডারে তার উপস্থিতিও ধরা পড়বে না।

ডিআরডিও সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘‘ছোট্ট অথচ শক্তিশালী এই ড্রোনগুলি যে কোনও জায়গায় অত্যন্ত সুক্ষতার সঙ্গে স্বয়ংক্রিয় ভাবে কাজ করতে পারবে। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ডিআরডিও-র ‘ভারত’ বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন ও হালকা।’’

গত ৪ মে থেকে পূর্ব লাদাখের প্যংগং উপত্যকায় ভারত-চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় প্রচুর সেনা মোতায়েন করে। তার জেরে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। পাল্টা ভারতও সেনা ও রসদ মজুত করেছিল। তার মধ্যেই গত ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনের বাহিনীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ভারতের এক কর্নেল-সহ ২০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। চীনেরও কমান্ডার পর্যায়ের এক সেনা আধিকারিকের মৃত্যু হলেও হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা এখনও জানায়নি বেজিং। তবে পর পর কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের ভিডিয়ো বৈঠকে গালওয়ান উপত্যকা থেকে সেনা সরলেও এখনও প্যাংগং উপত্যকায় চারটি ফিঙ্গার পয়েন্ট কার্যত চীনের দখলে। এই পরিস্থিতিতে চীনা সেনার উপর নজরদারি চালাতে এই ড্রোন হাতে পাওয়ায় সেনা মনোবলও অনেকটাই বাড়বে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।

এসকে