• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০১৯, ০১:৫৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৩, ২০১৯, ০২:১৫ পিএম

‘এডিস মুক্ত’ এলাকায়ও ডেঙ্গু রোগী!

‘এডিস মুক্ত’ এলাকায়ও ডেঙ্গু রোগী!

মাত্র দু’দিন আগে (১ আগস্ট) দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন ‘সু-সংবাদ’ উল্লেখ করে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, তার দক্ষিণের ১১টি ওয়ার্ডকে তিনি সম্পূর্ণ এডিস মশা মুক্ত করতে পেরেছেন। এ সময় তিনি এলাকাগুলোতে গিয়ে সাংবাদিকদের দেখতে চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিয়েছিলেন। তবে সরেজমিন ‘এডিস মশা মুক্ত’ এলাকাগুলোতে গিয়ে মেয়রের বক্তব্যের সত্যতা পাওয় যায়নি। পূর্ব জুরাইন, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, গণকটুলী ও ইসলামবাগ এলাকা থেকে গতকাল (শুক্রবার) একাধিক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে দেখা যায়। 

মেয়র সাঈদ খোকনের এডিস মশা মুক্ত ওয়ার্ডগুলো হচ্ছে- ১৪, ১৮, ২২, ২৩, ২৯, ৩৫, ৪২, ৫৩, ৫৫ ও ৫৬। আর ওয়ার্ডের এলাকাগুলো হচ্ছে- লালবাগ, নবাবপুর, গণকটুলী, ইসলামবাগ, বংশাল, ইংলিশ রোড, জিগাতলা, হাজারীবাগ কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা কলেজ এলাকা, নিউমার্কেট ও পূর্ব জুরাইন। 

যে সময় সিটি করপোরেশনের ছিটানো ওষুধে মশা মরছে না, বিদেশ থেকে দ্রুত নতুন ওষুধ আনার চেষ্টা চলছে, ঠিক সেই সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় সভায় সাঈদ খোকন ‘১১ ওয়ার্ড এডিস মশা মুক্ত’ এমন সু-সংবাদ দিয়েছিলেন। সাভাবিক কারণেই সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চেয়েছিলেন, হঠাৎ এডিস মশা মুক্ত করলেন কি করে? তার ম্যাজিকটা কি? তিনি জবাব না দিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছিলেন- ‘যান, আমার দক্ষিণের যে ১১টি ওয়ার্ডের কথা বলেছি, গিয়ে দেখে আশুন।’ 

গতকাল দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পূর্ব জুরাইন, কামরাঙ্গীরচর, হাজারীবাগ, গনকটুলী ও ইসলামবাগ এলাকা থেকে একাধিক ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী এসে ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মিডফোর্ড হাসপাতালে।

পূর্ব জুড়াইন থেকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়া রাহেলা বেগমের স্বামী রং মিস্ত্রী কাওসার হোসেন দৈনিক জাগরণকে জানান, তার স্ত্রী জুড়াইনেই একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। বৃহস্পতিবার রাতে রাহেলা জ্বরে আক্রান্ত হন। শুক্রবার সকালে মালিবাগের পদ্মা ডায়াগনিস্টিকে রক্ত পরীক্ষায় তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। খরচের কথা চিন্তা করে গতকাল দুপুরেই তিনি রাহেলাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করান।

পুরান ঢাকার ইসলামপুরের বাসিন্দা জুয়েল ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার রাতে পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া কামরাঙ্গীর চরের আনোয়ার নামে এক রাজ মিস্ত্রিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গতকাল রাতে মিডফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি হতে দেখা যায়। শুক্রবার রাতে হাজারীবাগ ও গণকটুলী এলাকার দুই শিশু শিক্ষার্থীকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হতে দেখা যায়।

পুরান ঢাকার কবি নজরুল কলেজের ছাত্র নুরে আলম ডেঙ্গু আকান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে স্থানীয় ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি থাকেন বংশালের বাগডাসা লেনে। তিনি জানান, তার মতো কবি নজরুল কলেজের আরও কয়েকজন ছাত্র ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

ঢাকা মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আহামিদুল কবির দৈনিক জাগরণকে বলেন, ঢাকা মেডিকেলে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দু’দিনই ডেঙ্গু আক্রান্ত বহু রোগী পুরান ঢাকা থেকে এসে ভর্তি হয়েছেন। আমরা যার অবস্থা খুব একটা খারাপ না, তাদের চিকিৎসা পত্র দিয়ে বাসায় পাঠাচ্ছি। মেঝেতেও এখন রোগিদের স্থান সংকুলান হচ্ছে না। তারপরও আমরা কাউকেই ফিরিয়ে দিচ্ছি না।


এমএএম/একেএস

আরও পড়ুন