একটি সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল ৫ সদস্যের পরিবারের ৪ জনকে। মা-বাবা-ভাই-বোনকে হারিয়ে অনেকটা অলৌকিকভাবে বেঁচে রইল পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ৩ বছরের শিশু নাহিদ ইসলাম। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবুঝ ওই শিশুটির বোঝারও ক্ষমতা হয়নি কী সর্বনাশ ঘটে গেছে তার জীবনে।
ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষে নিহত ৫ জন হলেন ছোট্ট নাহিদের মা-বাবা-ভাই-বোন ও মামা। তারা সবাই প্রাইভেটকারের যাত্রী ছিলেন। পরিবারের একমাত্র বেঁচে যাওয়া সদস্য তিন বছরের শিশুপুত্র নাহিদ ও প্রাইভেটকারচালক সেলিমকে গুরুতর আহত অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী শুক্রবার বিকেলে নাহিদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হয়েছে ।
নিহতরা হলেন নরসিংদীর মাধবদী বাংলা টেক্সটাইলের মালিক রফিকুল ইসলাম (৪৫), তার স্ত্রী শামসুন্নাহার শাহানা (৩৫), কলেজপড়ুয়া ছেলে নাবিল ইসলাম (১৮), মেয়ে রওনক জাহান (১৩) ও শ্যালক আশরাফুল ইসলাম (৩০)।
তাদের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার সুসং দুর্গাপুরে। বসবাস করতেন নরসিংদী জেলার মাধবদীতে। তারা সপরিবারে ঈদের ছুটিতে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মধুপুরে শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, রফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজন ঈদের ছুটি শেষে নিজের প্রাইভেটকারে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মধুপুরে শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেখান থেকে টাঙ্গাইলে যাওয়ার পথে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ সড়কের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুর নামক স্থানে পৌঁছালে কিশোরগঞ্জগামী এমকে পরিবহনের দ্রুতগতির একটি বাস ওভারটেক করার সময় তাদের চাপা দেয়। এতে প্রাইভেটকারটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই রফিকুল ইসলামের স্ত্রী শামসুন্নাহার শাহানা মারা যান।
খবর পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকেরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুতর আহত অবস্থায় রফিকুল ইসলাম, তার দুই ছেলে নাবিল ইসলাম ও নাহিদ ইসলাম, মেয়ে রওনক জাহান, শ্যালক আশরাফুল ইসলাম এবং প্রাইভেটকারের চালক সেলিমকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম, নাবিল ইসলাম ও রওনক জাহানকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে বিকেলে আশরাফুল ইসলাম মারা যান।
গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিয়া জানান, পুলিশ বাসটি আটক করেছে তবে চালক পালিয়ে গেছে।
এনআই