বরগুনায় রিফাত শরিফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন শুনানিতে ‘নো অর্ডার’ দিয়েছে আদালত।  

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেয়া হয়। আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেয়। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, এর ফলে মিন্নির জামিন সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেয়া আদেশই বহাল থাকলো।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজল এবং মিন্নির পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না।

মিন্নির আইনজীবী মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম জানান, আপিল বিভাগের এই আদেশের ফলে কারাগার থেকে মিন্নির ছাড়া পেতে আর কোনও আইনগত বাধা নেই। আশা করছি মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ছাড়া পেতে পারেন মিন্নি। 

গত ২৯ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) মিন্নিকে কেন জামিন দেয়া হবে না— মর্মে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ শর্ত দিয়ে মিন্নির অন্তর্বর্তী স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করে রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে আদালত বলেন, ‘তদন্ত প্রক্রিয়া যেহেতু শেষের দিকে এবং এ অবস্থায় তদন্ত প্রভাবিত করার কোনও সুযোগ নেই। তাই আমরা জামিন মঞ্জুর করলাম।’

মিন্নির জামিনে আদালতের দেয়া উল্লেখযোগ্য শর্ত হলো- এক. মিন্নি কোনও গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। দুই. তাকে তার বাবার জিম্মায় থাকতে হবে। শর্ত ভঙ্গ করলে তার জামিন বাতিল হবে।

গত ২৬ জুন (বুধবার) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন বন্ডের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে প্রাথমিকভাবে রিফাতের স্ত্রী মিন্নির সাহসী ভূমিকা দৃশ্যমান হলেও পরবর্তীতে নানা নাটকীয়তায় শেষ পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডে আসামি হয়ে কারাগারে যেতে হয় মিন্নিকে। তবে মিন্নির বাবা শুরু থেকেই দাবি করে আসছেন, তার মেয়েকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।

এমএ/এসএমএম