• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ০৩:৩১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ০৩:৩১ পিএম

আমন আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন কৃষক

আমন আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন কৃষক

আমন আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পাবনার চাটমোহরের কৃষকেরা। ধানের দাম কম, শ্রমিক সংকট ও মজুরি বৃদ্ধিকে দায়ী করছে কৃষি বিভাগ। এ অবস্থায় ধানের উৎপাদনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কাকে উড়িয়ে দিতে পারছেন না সংশ্লষ্টরা।
চলতি বছরে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না- জানালেন খোদ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।

আমন চাষি সুরুজ আলী বলেন, ‘আমন আবাদে এ বছর এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ২ হাজার ৫২০ টাকা। এর মধ্যে জমি চাষ, বীজ কেনা, শ্রমিকের মজুরি ও সার খরচ রয়েছে। ১ বিঘা ৩ কাঠা জমিতে আবাদ করেছি। ধান ঘরে তুলতে লাগবে আরও ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা। ৩/৪ জন কামলা (শ্রমিক) লাগবে ধান কাটা ও মাড়াই কাজ শেষ করতে। সব মিলিয়ে ধান ঘরে তুলতে খরচ পড়বে ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা।’

‘গতবছর পেয়েছিলাম সোয়া সাত মণ ধান। বাজার দর ছিল ৫০০-৫৫০ টাকা মণ। এ বছর ধান কত মণ হবে, আল্লাহ ভালো জানেন। ৭/৮ মণের বেশি হবে না’- জানান সুরুজ আলী। সরুজ আলীর বাড়ি কুমারগাড়া গ্রামে। বছর চুক্তিতে জমি লিজ নিয়ে বোরো, আমন ধান ও খেরাসি ঘাসের আবাদ করেন এ চাষি।

সুরুজ আলীর কথায়, রোপা আমন আবাদে খরচ আরেকটু বেশি পড়ে। বীজের চেয়ে চারার দাম বেশি। থাকে চারার ঘাটতিও। মাজরা পোকার আক্রমণ থাকলে দিতে হয় কীটনাশক। এতে খরচ বেড়ে যায়।

এদিকে, উপজেলার হাটগুলোতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে রোপা আমনের চারা। চাহিদার তুলনায় আমদানি কম এবং বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দেখা দিয়েছে চারার সঙ্কট।

নতুনবাজার হাটে চারা বিক্রি করছিলেন নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এক বোঝা চারা বিক্রি করছেন ২৫০-৩০০ টাকা দরে। এক বোঝায় ৩৫-৪০ আটি চারা থাকে। বিঘায় কত আটি চারা লাগে, সেটা নির্ভর করে আটির আকারের ওপর। নজরুলের বাড়ি আনকুটিয়া গ্রামে। ১৫০ টাকা বোঝা দাম হাঁকাচ্ছিলেন আরেক চারা বিক্রেতা মহরম হোসেন। এক বোঝার ভেতরে রয়েছে ১২-১৫ আটি চারা। মহরম হোসেন গুনাইগাছা গ্রামের কৃষক। বওশা এলাকার আমন চাষি জানান, ‘এক বোঝা চারা কিনেছি ২৮০ টাকায়। বোঝায় কয় আটি আছে গুনে দেখিনি।’

চাটমোহর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ৭০০ হেক্টর জমি। আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমি। গেল বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমি। বর্ষা ও অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিকে বিনামূল্যে বিনাশাইল ও নাইজারশাইল ধানের চারা দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৬০ জন কৃষক এ চারা নিয়েছেন। এ চারা দিয়ে এক বিঘা জমি আবাদ করা যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান রশীদ হোসাইনী বলছেন, ধান দাম কমে যাওয়ায় আমন ধানের আবাদ কমছে। আরেকটি বড় বাধা শ্রমিক সংকট ও বেশি মজুরি। অতি বৃষ্টি ও বন্যার কারণে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ জন্য চারার দাম বেড়ে গেছে।

কেএসটি

আরও পড়ুন