পাহাড় ও অরণ্যঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) ক্যাম্পাস অবস্থিত। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে প্রকৃতিগতভাবেই এসব পাহাড়-টিলা ও জঙ্গলে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির বিষাক্ত সাপ-বিচ্ছু, কীটপতঙ্গের বসবাস। পাহাড়-টিলা ঘেঁষেই নির্মাণ করা হয়েছে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থাপনা, আবাসিক হল। তাই প্রায়ই প্রকৃতির নির্দিষ্ট গণ্ডি পেরিয়ে স্থাপনাগুলোতে উপদ্রব চালায় এই জীবগুলো।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সাপের উপদ্রব বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলে একটি বিষাক্ত সাপ মারা হয়েছে। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে হলের উত্তর ব্লকের নিচতলায় ওয়াশরুমের পাশ দিয়ে সাপটি ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে সাপটিকে মেরে ফেলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ মোল্লা জানান, ‘রাত ১টার পরে আমি হাত-মুখ ধোয়ার জন্য ওয়াশরুমের দিকে গিয়ে দেখি জানালা গলে সাপটি ভেতরে আসার চেষ্টা করছে। সাথে সাথে আমি বন্ধুদের ডাকি। প্রথমে একটি লাঠি দিয়ে গুঁতো দিলে সাপটি ভয়ংকরভাবে ছোবল তুলে ধেয়ে আসে আমাদের দিকে। পরে আমরা সাপটিকে মারতে বাধ্য হই।'
হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, পাহাড়ঘেরা বন্য ক্যাম্পাস হওয়ায় প্রতিবছর প্রায়ই আবাসিক হলে বিষাক্ত সাপ দেখা যায়। অনেক সময় ওয়াশরুম-বাথরুম ব্যবহার করতে গিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। হল প্রশাসন সাপের কথা জেনেও উপদ্রব ঠেকাতে কার্বলিক এসিড বা এ-জাতীয় কোনো প্রতিরোধব্যবস্থা নিচ্ছে না। এতে যেকোনো সময় বিপদ ঘটতে পারে।
এ ব্যাপারে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়া বলেন, ‘সাপের উপদ্রবের বিষয়টি জানি। খুব শিগগির হলের বিভিন্ন স্থানে কার্বলিক এসিড দেয়া হবে। হল পাহাড়ঘেরা হওয়ায় শিক্ষার্থীদেরও সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।’
উল্লেখ্য, এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলসহ বিভিন্ন অনুষদ ভবন এবং প্রশাসনিক ভবনেও বিষাক্ত সাপের উপদ্রব দেখা গিয়েছে। তবে বেশির ভাগ সময়ই উপায়ন্তর না দেখে সন্ত্রস্ত শিক্ষার্থীরা সাপ মারতে বাধ্য হন।
এনআই