যশোরে ধর্ষণের শিকার অন্তঃসত্ত্বা বারো বছরের এক কিশোরী ফুটফুটে একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেছেন। শনিবার সকালে হাসপাতালে সিজারিয়ানের মাধ্য এ সন্তান প্রসব করেন তিনি। ডাক্তাররা বলেন, প্রসূতি ও তার সন্তান ভাল আছে। কিন্তু ভিড় বাড়ছে বিধায় ইনফেকশনের ভয় রয়েছে। অপরদিকে, মেয়েটির স্বজনরা ব্যক্ত করছেন হতাশা।

যশোর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর গভীররাতে পেটে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় যশোরের মণিরামপুর উপজেলার অন্তঃসত্ত্বা এক কিশোরী। কম বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় গর্ভের সন্তান ও তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত ছিল না।  গত ৫ সেপ্টেম্বর তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় ৬ সেপ্টেম্বর রাতে তাকে ফের ভর্তি করা হয়।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু জানান, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় মেয়েটি একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেছে।  ডা. নীলুফার ইয়াসমীন এমিলির নেতৃত্বে সিজার করা হয়। বাচ্চার ওজন হয়েছে আড়াই কেজি। বর্তমানে তারা দুজনই ভাল আছে। তবে, দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়া প্রসূতি ও তার বাচ্চার ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শন করে। 

এদিকে, কান্নাজড়িত কণ্ঠে মেয়েটির বাবা বলেন, ‘আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, ভাবতে পারছি না। কী করবো, কোথায় যাবো?’
মেয়েটির দাদি বলেন, ‘মা-সন্তান দুজনই শিশু। তাদের কী হবে, কী পরিচয়ে তারা বেড়ে উঠবে।  

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সালাহউদ্দিন শিকদার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির ডিএনএ স্যাম্পল সংরক্ষণ করা আছে। শিশুটির ডিএনএ স্যাম্পল নিয়ে ঢাকায় পাঠানো হবে। রিপোর্ট আসার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

থানার মামলা সূত্রে জানা যায়, মণিরামপুর উপজেলার তাহেরপুর এলাকার বাসিন্দা গোলাম কিবরিয়া (৫৬) পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের একজন কর্মকর্তা। তিনি সেখানে ভাড়া বাসায় থাকেন। তার বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন ওই কিশোরী। চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেন কিবরিয়া। এ সময় ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি পরিবারের সদস্যরা জানার পর মামলা করেন। মামলার সূত্র ধরে পুলিশ কিবরিয়াকে আটক করে। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এমন সময় কিশোরী ছেলে সন্তান প্রসব করল।
  
কেএসটি